মীরসরাইয়ে হিমাগারের অভাবে কোটি কোটি টাকার সবজি নষ্ট

নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম, ২৭ ডিসেম্বর ॥ কৃষিপ্রধান জনপদ মীরসরাই উপজেলা। এক পাশে কৃষি সবজি পণ্যের উর্বর ভূমি সীতাকুন্ড, অপর পার্শ্বে পার্বত্য কৃষি উর্বর জনপদ রামগড়। মধ্যখানে বারৈয়ারহাট ও মীরসরাইয়ের বুক চিরে বয়ে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও রেলপথ। যেখান থেকে দেশের যে কোন স্থানে অবলীলায় বহন করা যায় যেকোন কৃষি পণ্য। বিশেষ করে উন্নত জাতের টমেটো, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন এই অঞ্চলের সেরা মৌসুমী সবজি। এখানকার শিমের বিচি মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপে ও বেশ সমাদৃত। কিন্তু এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী চক্রের দরুন এই অঞ্চলের কৃষকরা মারাত্মক লোকসানের সম্মুখীন হয়। চাহিদা অনুযায়ী কয়েকটি হিমাগারের আবশ্যকতার কথা জানান বিভিন্ন পর্যায়ের পর্যবেক্ষকগণ। অথচ স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও গড়ে উঠেনি একটি হিমাগার। মীরসরাইয়ে এত বেশি মৌসুমী সবজি উৎপাদিত হয় যে এই অঞ্চলে একটি হিমাগার স্থাপিত হলে ও চট্টগ্রামের সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। গেল বছর এখাকার কৃষকরা ২ টাকা করে বিক্রি করতে পারেনি মুলা। সারা বছর এখানকার টমেটো ১০০ টাকা করেই দেশ জুড়ে বিক্রি হয়। এখান ভোক্তাগণ ১০০ টাকা কেজি হিসেবে কিনতে হয়। অথচ গত মৌসুমেও কৃষকদের কাছ থেকে ৫ টাকায় কিনে পাইকাররা। অথচ একটি হিমাগার থাকলে এখানকার ভোক্তার ন্যূনতম ১০ গুণ দামে হলেও টমেটো ৫০ টাকায় সারা বছর পেত। তাতেও হিমাগার ও পাইকার সকলেই লাভবান হতেন। প্রতি বছরের ন্যায় গত অগ্রহায়ণ থেকে চলতি পৌষে প্রতিদিন ভোর বেলায় মহাসড়কের পাশের ছোট বড় অন্তত ২০টি হাটে সবজির পাইকার হাট বসছে। চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা থেকে পাইকাররা এই সব হাট থেকে নিত্য কৃষকদের থেকে কিনে ট্রাকে ট্রাকে সবজি এখান থেকে নিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার সোনাপাহাড়, বারইয়াহাট, মিঠাছরা, বড়তাকিয়া, ছরারকূল, নয়দুয়ারিয়া, হাদিফকিরহাট, বড়দারোগারহাট, জোরারগঞ্জ অন্যতম হাট। এই বিষয়ে উপজেলার সোনাপাহাড় এলাকার টমেটো চাষী ইকবাল হোসেন বলেন, অনেক দিন ধরেই শুনে আসছি একটা হিমাগার হবে আমাদের আর সস্তায় বিক্রি করতে হবে না। কিন্তু এক পর্যায়ে পাইকাররা টমেটো ৫ টাকার বেশি দিতে চায় না। অথচ তখনও বাজারে ১৫ টাকার কম থাকে না। মৌসুমের পর তো ১০০ টাকাই খেতে হয় ৯ মাস ধরে। অন্যান্য সবজির ও একই অবস্থা। এই বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা কৃষি অফিসার বুলবুল আহমেদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা সমন্বয় সভায় আলোচনা করব। তিনি বলেন, একটি হিমাগার কোনভাবে গড়ে উঠলে এলাকার সকলের জন্যই মঙ্গল।