ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্য কর্মচারীর হাত-পা ভেঙ্গে দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭

স্বাস্থ্য কর্মচারীর হাত-পা ভেঙ্গে দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ২৬ ডিসেম্বর ॥ তালতলী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমির দলিল না দেয়ায় বরগুনার তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি মনিরুজ্জামান মিন্টুর নেতৃত্বের তার সহযোগীরা সাবেক তালতলী থানা ছাত্রলীগ সভাপতি ও মেহেন্দীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্টি অপারেটর মাহমুদুল হাসান পিন্টুকে পিটিয়ে দু’পা ও ডান হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে সোমবার সন্ধ্যায়। জানাগেছে, তালতলী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ৫ একর জমি রয়েছে। এ বছর এপ্রিল মাসে উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু ওই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমিতে স্থানীয় সাগর হোটেলের মালিক আবু বকর মিয়াকে দখল করে ঘর তুলে দেয়। এতে সাবেক থানা ছাত্রলীগ সভাপতি ও তালতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্টি অপারেটর মাহমুদুল হাসান পিন্টু বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয় উপজেলা চেয়ারম্যান। ওই সময় থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান ওই জমির দলিল চেয়ে পিন্টুকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে আসছে কিন্তু পিন্টু জমির দলিল দিতে রাজি হয়নি। এ ঘটনার একমাস পরে মে মাসে উপজেলা চেয়ারম্যান তাকে (পিন্টু) মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করে। সোমবার সন্ধ্যায় পিন্টু তালতলী বটতলা নামক স্থান থেকে কর্মস্থল মেহেন্দীগঞ্জে রওয়ানা দেয়ার পূর্বে বাসারের চায়ের দোকানে চা পান করছিল। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু, তার ছোট ভাই তারেকুজ্জামান ও তার ২০/২৫ জন সহযোগী এসে মাহমুদুল হাসান পিন্টুকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায় তারা পিন্টুকে রাস্তায় নামিয়ে প্রকাশ্যে পিটিয়ে তার দু’পা ও ডান হাত ভেঙ্গে দেয়। এ সময় শত শত লোক দাঁড়িয়ে তাদের এ দৃশ্য দেখছিল। কেউ ভয়ে তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। বেধরক পিটিয়ে হাত ও পা ভেঙ্গে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে স্থানীয় ও পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু, তার ছোট ভাই তারেকুজ্জামান ও ২০/২৫ জন সহযোগী সাবেক থানা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুল হাসান পিন্টুকে পাড়ার সামনে বাসারের চায়ের দোকানে আটকে রাখে। পরে ওই স্থান থেকে তাকে টেনে হেঁচড়ে নামিয়ে রাস্তায় বেধরক পিটিয়েছে। মাহমুদুল হাসানকে পিটিয়ে তারা রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তারা আরও জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে করে লোকজন এসে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আহত মাহমুদুল হাসান পিন্টুর বাবা খলিলুর রহমান কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন সরকারী জমি রক্ষা করতে গিয়ে আজ আমার ছেলের হাত ও পা ভেঙ্গে দিয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
×