ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোচিংবাণিজ্যে জড়িত ৯৭ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ৫ ডিসেম্বর ২০১৭

কোচিংবাণিজ্যে জড়িত ৯৭ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রায় ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৩৩ বছর পর্যন্ত একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়ম বহির্ভূতভাবে চাকরি করে ‘কোচিং বাণিজ্যের’ মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে রাজধানীর আট প্রতিষ্ঠানের ৯৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘শাস্তিমূলক’ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারকে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছে। কমিশনের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জনকণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান, পরিচালনা পর্ষদকে শাস্তির সুপারিশ করে আলাদা আলাদা চিঠি পাঠানো হয়েছে। রবিবার দুদক সচিব মোঃ শামসুল আরেফিনের স্বাক্ষরিত মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবরে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, এমপিওভুক্ত চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭২ জন শিক্ষক এবং সরকারি চারটি বিদ্যালয়ের ২৫ জন শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে যুক্ত বলে দুদক প্রমাণ পেয়েছে। স্কুলগুলোর মধ্যে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৩৬ জন, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২৪ জন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ জন, রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ জন, মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ জন, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ জন, খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১ জন এবং গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের ৮ জন শিক্ষক। দুদক বলছে, দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে থেকে এই শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্যে জড়িয়েছেন এবং ‘অনৈতিকভাবে’ অর্থ উপার্জন করে আসছেন। তাদের বিরুদ্ধে ‘কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২’ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারকে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, কোচিং বাণিজ্য বন্ধে এই শিক্ষকদের এক বিদ্যালয় থেকে অন্য বিদ্যালয়ে, এক শাখা থেকে অন্য শাখায়, দিবা শিফট থেকে প্রভাতী শিফটে বা প্রভাতী শিফট হতে দিবা শিফটে নির্দিষ্ট সময় পর পর বদলি করা যেতে পারে। এর আগে নবেম্বরের শুরুতেও ২৪টি সরকারি বিদ্যালয়ের ৫শ’ ২২ জন শিক্ষককে একই কারণে বদলির সুপারিশ করে দুদক। তখন কমিশনের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই শিক্ষকরা ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৩৩ বছর পর্যন্ত এক বিদ্যালয়েই রয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতার পাশাপাশি কোচিং বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট থেকে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অর্থ উপার্জন করছেন। উল্লেখ্য, গত ফেবব্রুয়ারি থেকে ঢাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য, কোচিং বাণিজ্য ও নিয়োগ বাণিজ্যের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের একটি অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুদক। দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত দল তাদের অনুসন্ধান শেষে ওই প্রতিবেদন দেয়। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী এক কর্মস্থলে শিক্ষকদের তিন বছর হলেই তাদের বদলি করার নির্দেশনা থাকলেও রাজনৈতিক চাপ, তদবির ও অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অনেকের বদলি আটকে থাকে বলে দুদকের তদন্তে ওঠে আসে।
×