ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাসিনা-ওয়াং বৈঠক

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে চীন

প্রকাশিত: ০৭:৫৮, ১৯ নভেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে চীন

বিডিনিউজ ॥ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনায় মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে চীন। সফররত চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই শনিবার বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে এই প্রস্তাব দেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপ আয়োজনে ইচ্ছুক চীন। মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনই দেশটির সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী। দেশটিতে বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে চীনের। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে বৃহস্পতিবার প্রস্তাব পাসের দুদিন পর চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে আসেন। ওই প্রস্তাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভিযানের ইতি টানতে এবং রোহিঙ্গাদের পূর্ণ অধিকার দিয়ে নাগরিকত্ব দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তাবটি নিয়ে ভোটাভুটিতে ১৩৫ দেশ এর পক্ষে, দশ দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল। এর মধ্যে চীনও ছিল। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে যাবেন। সোম ও মঙ্গলবার নেপিডোতে এশিয়া ও ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে তার। বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার (বিসিআইএম) নিয়ে যে অর্থনৈতিক করিডর বাস্তবায়নের কাজ শুরু“ হয়েছে, রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে তাতে ধীরগতি আসতে পারে বলে তারা মনে করছেন। রোহিঙ্গা সঙ্কট বাংলাদেশের জন্য ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ বলে মন্তব্য করেন ইয়াং ই। তিনি বলেন, এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, এই সমস্যা এখন বাংলাদেশকে প্রভাবিত করেছে। বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানে নিরাপত্তা ও মর্যাদা দিয়ে মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্ক ভাল, কিন্তু এরা (রোহিঙ্গা) তাদের নাগরিক। তাই তাদের ফেরত নিতে হবে। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্সের’ কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে প্রতিবেশী কোন দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ড চালাতে দেয়া হবে না। বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সহযোগিতার কথাও তুলে ধরেন সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। শেখ হাসিনার বেজিং সফর ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের ঢাকা সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে গৃহীত বিভিন্ন সহযোগিতামূলক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন ওয়াং ই। তিনি বলেন, দক্ষিণ দক্ষিণ সহযোগিতার আওতায় চীন বাংলাদেশকে আরও সহযোগিতা করতে চায়। শি জিন পিং পুনরায় চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে অভিনন্দন পাঠিয়েছিলেন। সেজন্য শির ধন্যবাদ বার্তা শেখ হাসিনাকে পৌঁছে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গণভবনে সাক্ষাতকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।
×