ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাগরে লঘুচাপ দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, শীতের আমেজ

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৬ নভেম্বর ২০১৭

সাগরে লঘুচাপ দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, শীতের আমেজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাগরে ফের সৃষ্টি হয়েছে সুস্পষ্ট লঘুচাপ। লঘুচাপের কারণে সারাদেশে হঠাৎই বৈরী আবহওয়া বিরাজ করছে। বইতে শুরু করেছে শীতল বাতাস। প্রকৃতিতে হঠাৎই শীতের আমেজ। এদিকে লঘুচাপের কারণে বুধবার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, লঘুচাপের কারণে দেশে আর দুদিন এই অবস্থা বিরাজ করতে পারে। এদিকে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন বৃষ্টির কারণে ঠা-া অনুভূতি সৃষ্টি হলেও এখনই শীত আসছে না। নবেম্বরের শেষ নাগাদ বা ডিসেম্বরের শুরুতে শীতের দেখা মিলতে পারে। আবহাওয়াবিদদের মতে, এবারে হেমন্তের প্রকৃতি অনেকটাই বৈচিত্র্যপূর্ণ বা খামখেয়ালিতে ভরা। প্রকৃতিতে কখনও শীত আর কুয়াশার প্রাদুর্ভাব। আবার কখনও প্রচ- রোদে গা পুড়ে যাবার অবস্থা। ঋতুর শুরুতেই কখনও শীতের প্রভাব আবার কখন বেশ গরমের অনুভূতি সৃষ্টি হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত কিছুটা হিমেল হাওয়া। সকালের পর থেকে দুপুর পর্যন্ত আবার থাকছে রোদের তেজ। রোদে শরীর পুড়ে যওয়ার মতো অবস্থা। আবহাওয়ার খামখেয়ালি এই আচরণে শিশু, বৃদ্ধ সবাই নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আর এক মাস পরে আসবে শীত ঋতু। কিন্তু শীত আসার আগেই প্রকৃতিতে অনেক পালাবদল শুরু হয়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম নেই। ঋতু পরিবর্তনের সময় সাধারণত আবহাওয়া এ ধরনের আচরণ করে থাকে। এই সময়ে সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে ঠা-া-গরমের অনুভূতি সৃষ্টি হচ্ছে। আজ অগ্রহায়ণ মাসের দ্বিতীয় দিন। প্রকৃতিতে চলছে নবান্ন উৎসব। এরপরই আসবে শীত ঋতু। ইতোমধ্যে প্রকৃতিতে তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। গরমের ভাব কমে প্রকৃতি এখন শান্ত। এদিকে অগ্রহায়ণের শুরুতে সাগরে লঘুচাপের কারণে আবার সারাদেশে শুরু হয়েছে লঘুচাপ। ফলে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে চলছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এমন আবহাওয়া চলতে পারে আরও দুদিন। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটির প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণেরও সম্ভাবনা রয়েছে। নবেম্বর মাসের দীর্ঘমেয়াদী আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারা জানায়, এবার অক্টোবরে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হলেও তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়নি। তবে এর প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ভারি বর্ষণ হয়। আবহাওয়াবিদদের মতে, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে কয়েকদিন ধরে গরম পড়ছে। লঘুচাপটি দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে রয়েছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। লঘুচাপ থাকলে জলীয়বাষ্প সৃষ্টি হয়ে স্থলভাগের দিকে চলে আসে। এর ফলে শরীরে গরম ভাব অনুভূত হয়। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বাতাসে জলীয়বাষ্প বেশি থাকলে কুয়াশা কমে যায়। রাজধানীতে গাছপালা কম থাকায় গরম একটু বেশি লাগে। এ ছাড়া রাজপথে প্রচুর যানবাহন থাকায় ধূলিকণা ছড়িয়ে পড়ে। একটা ঘোলাটে ভাব থাকে বাতাসে। এর সঙ্গে নগরীতে অফিস-আদালত, পোশাক কারখানা বেশি রয়েছে। এ জন্য শীত কম লাগে। তবে এর প্রভাবে বৃষ্টিপাতের কারণে আবার ঠা-ার অনুভূতি শুরু হয়। এদিকে লঘুচাপের কারণে বৃষ্টিপাতে ঠা-ার অনুভূতি সৃষ্টি হলে শীত আসতে এখনও অনেকটাই দেরি বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা জানান, আর কিছুদিন না গেলে শীত সম্পর্কে মন্তব্য করা যাবে না। বৃষ্টিপাতের কারণে হয়ত এখন কিছুটা ঠা-া পড়তে পারে। কিন্তু লঘুচাপ কেটে গেলে আবার তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে গরম অনুভূতি আসতে পারে। তারা জানায়, নবেম্বরের শেষদিকে বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রকৃতিতে শীতের অনুভূতি আসতে পারে। তবে তারা জানায়, এখনই এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ, গত বছর প্রকৃতিতে শীত এসেছে অনেক দেরিতে। মাত্র একমাস ছিল শীতের অনুভূতি। এরপর শীতকাল শেষ। আবহাওয়াবিদ আব্দুল জানান, এবার সেই অবস্থা হবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। আর কিছুদিন গেলে শীতের অবস্থা সম্পর্কে বলা যাবে, কখন শীত আসবে।
×