ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

‘পাক আর্মি ও রাজাকাররা বাবাসহ ২৯ জনকে হত্যা করে’

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৮ নভেম্বর ২০১৭

‘পাক আর্মি ও রাজাকাররা বাবাসহ ২৯ জনকে হত্যা করে’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার আকমল আলী তালুকদারসহ চার রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সাক্ষী বিভাষ চক্রবর্তী, নিরঞ্জন চক্রবর্তী ও বিনায়ক চক্রবর্তী জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাদের জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষ্যর জন্য ১৮ নবেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। দশম সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, পাকিস্তানী আর্মি ও রাজাকাররা আমার বাবা বিনোদ চক্রবর্তী ও কাকাত ভাই নিখিল চক্রবর্তীসহ গ্রামের ৫৯ জনকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে গাইবান্ধা সদর উপজেলার আব্দুল জব্বার ম-লসহ পাঁচ রাজাকার ও মৌলভীবাজারের বড়লেখার তিন আসামির মধ্যে যারা পলাতক রয়েছে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজিরের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ আদেশ প্রদান করে। মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার আকমল আলী তালুকদারসহ চার রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দশম সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম বিভাষ চক্রবর্তী। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬০ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম- পশ্চিমভাগ, থানা- রাজনগর, জেলা- মৌলবীবাজার। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আসি বািড়তে ছিলাম। একাত্তরের ২৪ নবেম্বর রাত আনুমানিক ১টার সময় কিছুসংখ্যক লোক আমাদের বাড়িতে আসে এবং আমাকে ডাক দেয়। দরজা খুলে রাজাকার আকমল আলী তালুকদার, লাল মিয়া, মতিন মিয়া, মোছাব্বির মিয়া, আনিছ মিয়াসহ আরও অনেকে আমাকে, আমার ভাইদের আটক করে বািড়র উঠানে মন্দিরের সামনে নিয়ে মারধর করতে থাকে। তারা আমাদের কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর জানতে চায়। আমরা বলি আমরা তাদেন কোন খবর জানি না। এর পর আমার বর্ণিত রাজাকাররা আমাদের বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এর পর ভোর ৫টার সময় ওই রাজাকাররা পাকিস্তানী আর্মিদের সহযোগিতায় আমার বাব বিনোদ চক্রবর্তী ও আমার কাকাত ভাই নিখিল চক্রবর্তীকে আটক করে রাজনগর থানায় নিয়ে যায়। ওই দিনই আমি আমার আরেক ভাই ও কাকা রাজনগর থানায় গিয়ে আটককৃত বাবা ও কাকাত ভাইকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু তারা তাদের ছাড়েনি। এর পর আমার বর্ণিত ওই রাজাকাররা আটককৃত আমার বাবা ও কাকাত ভাইকে গাড়িতে করে মৌলভীবাজারে নিয়ে যায়। ৭-৮ দিন পর জানতে পারি তাদের হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজাকার ও পাকিস্তানী আর্মিরা আমাদের পার্শ¦বর্তী পাচগাঁও গ্রামে ৫৯ জনকে হত্যা করেছে।
×