ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

তিন লাখের বেশি গ্রাহকের পাওনা ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত

পাঁচ বছরেও প্রশাসক নিয়োগ হয়নি॥ ফের টোপ ফেলেছে যুবক, আমানত সংগ্রহ শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

পাঁচ বছরেও প্রশাসক নিয়োগ হয়নি॥ ফের টোপ ফেলেছে যুবক, আমানত সংগ্রহ শুরু

এম শাহজাহান ॥ সরকার গঠিত তিনটি কমিশনের সুপারিশ থাকার পরও পাঁচ বছরে যুবকে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়নি। এতে বিতর্কিত ‘যুব’ কর্মসংস্থান সোসাইটির (যুবক) ক্ষতিগ্রস্ত তিন লাখের বেশি গ্রাহকের পাওনা ফেরত পাওয়া নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আবার সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করে সংস্থাটি নতুন করে কর্মকা- শুরু করেছে। বরিশাল ও পটুয়াখালীতে নতুন করে গ্রাহকদের নিকট থেকে ৫০০ টাকা করে আমানত সংগ্রহ করছে যুবক। যুবক কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অনৈতিকভাবে টাকা পয়সা দিয়ে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীসহ দুজন মন্ত্রীর কাছে সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন জানিয়েছেন। তারা বলছেন, যুবকে ৬ হাজার কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। প্রশাসক নিয়োগ করা হলে এই সম্পদ থেকেই ক্ষতিগ্রস্তদের আড়াই হাজার কোটি টাকা ফেরত দেয়া সম্ভব। অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব মোঃ ইউনুসুর রহমান জানিয়েছেন, বিষয়টির জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। কোন নির্দেশনা পেলে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। জানা গেছে, ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর মুহাম্মদ ফরাসউদ্দীনকে চেয়ারম্যান করে যুবক বিষয়ে যে তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল, সেই কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতারণার মাধ্যমে ২ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা গ্রাহকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে যুবক। এই অর্থ নেয়া হয় ৩ লাখ ৩ হাজার ৭০০ গ্রাহকের কাছ থেকে। এ অর্থ গ্রাহককে ফেরত দিতে সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য ২০১৩ সালে যুবকে প্রশাসক নিয়োগের সুপারিশ করে সাবেক যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ‘যুবক কমিশন’। এরপর থেকেই প্রশাসক নিয়োগে চিঠি চালাচালি ও একের পর এক সভা করে চলেছে অর্থ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কমিশন নিশ্চিত হয় যে, যুবক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দখলে নিয়ে প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে তা বিক্রি করে পাওনা অর্থ থেকে গ্রাহকদের জমা করা অর্থ পরিশোধ করা সম্ভব। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব মোঃ মতিয়ার রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, যুবকে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের পাওনা ফেরত দেয়ার বিষয়টি ঝুলে গেছে। কমিশনের সুপারিশ বিবেচনায় নিয়ে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে প্রশাসক নিয়োগের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। কিন্তু কি যুক্তির ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রশাসক নিয়োগ করছে না সেটাই একটি বিষয়। তিনি বলেন, দিন দিন বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। আর এ কারণে তাদের ভাগ্য এখন তাদের হাতেই রয়েছে। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে গ্রাহকদের বিষয়ে কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া না হলে তাদের পাওনার কোন সুরাহা হবে বলে মনে হচ্ছে না। আর এ কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগের পরামর্শ দেন সরকারী এই কর্মকর্তা। এদিকে, গত বছরের শুরুতে আইন মন্ত্রণালয় যুবক-এ প্রশাসক নিয়োগের পক্ষে মত দেয়। এতে বলা হয়, প্রচলিত আইন অনুযায়ী অভিযুক্ত কোম্পানিটিতে প্রশাসক বা রিসিভার নিয়োগ অথবা সরকার যেরকম মনে করে, সে অনুযায়ী (যুবক)-এর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ওপর কর্তৃত্ব জারি করতে পারবে। এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের অর্থ ফেরত দিতে ২০১৫ সালের মার্চে যুবকে প্রশাসক নিয়োগ ও প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত এমএলএম কোম্পানিগুলোকে শাস্তি দিতে একটি বিচারিক কমিশন গঠনের প্রস্তাব ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত কমিশনের নেতৃত্বে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বা সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়। জানা গেছে, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর যুবক-এর বিষয়ে পরবর্তী করণীয় জানতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সারসংক্ষেপ পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই সারসংক্ষেপে যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় প্রাথমিকভাবে কোম্পানিটিতে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সদ্যবিদায়ী অর্থমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন জনকণ্ঠকে বলেন, যুবকে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষেরই পাওনা আদায়ে আদালতে যাওয়া উচিত। তিনি বলেন, এত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত অথচ কেউ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে না। সম্মানিত গ্রাহকরা আদালতে গেলে নিশ্চয়ই একটি সমাধানের পথ পাবেন। এদিকে, বিতর্কিত যুব কর্মসংস্থান সোসাইটির (যুবক) সম্পদের পরিমাণ কত-এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী সারাদেশে যুবকের সম্পত্তির পরিমাণ ৯৮ একর। তার মতে, এ স্বল্প সম্পদ দিয়ে গ্রাহকদের দায় মেটানো সম্ভব নয়। কিন্তু ফরাসউদ্দিন যুবকের নিকট তাদের সম্পদের হিসাব চেয়েছিলেন। যুবক অনেক সম্পদ গোপন রেখেও ৬২০ একর সম্পদের হিসেব দিয়েছে। ওই চিঠি কমিশনের রিপোর্ট ও নথিতে জমা দেয়া আছে। অন্যদিকে ‘যুবকে ক্ষতিগ্রস্ত জনকল্যাণ সোসাইটি’ নিজস্ব অনুসন্ধানে দাবি করেছে, যুবকের শুধু জমির পরিমাণই ২ হাজার ২৬৮ একর। বাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যতীত বেনামে রয়েছে আরও এক হাজার একর জমি। এ ছাড়া আছে অস্থাবর সম্পদ। এসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব তুলে ধরে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যুবকে ক্ষতিগ্রস্ত জনকল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন (মুকুল) জনকণ্ঠকে বলেন, ৩৫টি জেলা সরেজমিন পরিদর্শন করে যুবকের অনেক জমির সন্ধান আমরা পেয়েছি। যার লোকেশন ম্যাপসহ ভিডিও ফুটেজ আমাদের নিকট রয়েছে। ওই সম্পদের বর্তমান বাজার মূল্য হবে ৬ হাজার কোটি টাকা। আর ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের পাওনা আড়াই হাজার কোটি টাকা। এ কারণে যুবকের বর্তমান সম্পদ দিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের পাওনা মেটানো সম্ভব। কারণ আমরা ভালভাবে জানি যুবকের সম্পদ কোথায় কিভাবে আছে। কিন্তু সরকারের পক্ষে তা জানা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অর্থ কিভাবে পরিশোধ করা যায় সে পথ খুঁজে বের করতে সরকার পর পর তিনটি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে। সাবেক গবর্নর ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন, সাবেক যুগ্মসচিব রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে যুবক কমিশন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তখনকার যুগ্মসচিব আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি। এই তিনটি সংস্থাই কমিশন অথবা প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে যুবকের নামে-বেনামে সকল সম্পদ সরকারের হেফাজতে নিয়ে তা বিক্রি করে গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করার তাগিদ দিয়েছে। সরকার সংশ্লিষ্ট সংস্থার কথাও মানছে না এবং ক্ষতিগ্রস্তদের কথাও মানছে না। ক্ষতিগ্রস্তরা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। কিন্তু তিনি তাদের সেই সুযোগ দিচ্ছেন না। তাহলে প্রশ্ন জাগে সরকার কি চায়? যুবক কর্তৃপক্ষ সরকারকে যেভাবে বোঝায় আর সরকারও তাদের সঙ্গে সুরে সুর মেলাচ্ছে। সরকারের এহেন দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বর্তমানে যুবক নতুন টোপ ফেলেছে। ইতোমধ্যে বরিশাল, পটুয়াখালীতে নতুন করে গ্রাহকদের নিকট থেকে ৫০০ টাকা করে আমানত সংগ্রহ করছে। যুবক কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অনৈতিকভাবে টাকা পয়সা দিয়ে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীসহ দুজন মন্ত্রীর কাছে সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন জানিয়েছেন। সরকারের উচিত তিন সংস্থার সুপারিশ আমলে নিয়ে দ্রুত প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের রক্ষা করা। জানা গেছে, শুধুমাত্র ঢাকা বিভাগের পাঁচটি জেলায় ২ হাজার ৭৩১ কোটি ৯২ লাখ ৬৪ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে তেজগাঁও বাড়ি (৪৯ শতাংশ জমিসহ), পল্টনের বাড়ি ২১.৫ শতাংশ জমিসহ) বিকে টাওয়ার (১৮.১৫ শতাংশ জমিসহ), সাভার মডেল টাউন (৩৭৫১ শতাংশ জমিসহ), সাভার মডেল টাউন-২ (১৯,৮৩৫ শতাংশ জমি), বাগমী বাড়ি ১-২ (১২৭ শতাংশ জমি), কেরানীগঞ্জ মডেল টাউন-১ (২৯০ শতাংশ জমিসহ), ধলেশ্বরী মডেল টাউন (৭০১.৫ শতাংশ জমি), মিতালী ১-২ (৭৬.৯৩ শতাংশ জমি) যুবক সিটি (৬০০ শতাংশ), কেরানীগঞ্জ মডেল টাউন-২ (১১৮৮ শতাংশ), গাজীপুর মডেল টাউন (২১৯.৪২ শতাংশ জমি), মাদারীপুর মডেল টাউন (১২১ শতাংশ জমি), নারায়ণগঞ্জ মডেল টাউন (৪৬০.৪২ শতাংশ জমি), কাঁচপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন (৮৭৮ শতাংশ জমি), মুন্সীগঞ্জ মডেল টাউন (৪২.৫ শতাংশ জমি), মুন্সীগঞ্জ মডেল টাউন-২ (৬৮৫ শতাংশ জমি), জালকুড়ি মডেল টাউন (৬০০০ শতাংশ জমি)। উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে সদস্যদের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের মধ্য দিয়ে যুব কর্মসংস্থান সোসাইটির (যুবক) আত্মপ্রকাশ। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি সোসাইটিজ এ্যাক্টের আওতায় নিবন্ধন নেয়। জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে নিবন্ধন পাওয়ার পর এক দশকের মধ্যে সংস্থাটি উচ্চসুদের লোভ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা তুলে মূলধন গড়ে তোলে এবং টেলিকম, পর্যটন, স্বাস্থ্যসেবা, সিরামিক, হাউজিং এস্টেট, সমুদ্র খাদ্য, নার্সারি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি এবং আর্থিক কর্মকা-সহ প্রায় ২০টি সহযোগী সংস্থা গড়ে তোলে। ২০০৬ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃথক তদন্তে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ সংগ্রহের ঘটনা বেরিয়ে আসে। এরপর যুবক কমিশন অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রশাসক নিয়াগের জন্য বলে। আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রধান মোঃ আবদুল মান্নান ২০১৪ সালের নবেম্বরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেন। এখানে ২৬টি সুস্পষ্ট সুপারিশও জামা দেয়া হয়। কমিটির সুপারিশে প্রতারিতদের অর্থ দ্রুত ফেরত দেয়ার কথা বলা হয়। একই সঙ্গে মানি লন্ডারিং আইনে যুবকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়। বাতিল করতে বলা হয়, যুবক ও তার অন্য সব সংস্থার লাইসেন্স। গ্রাহকদের হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের জন্য দায়ী শনাক্তকৃত ৪০ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার সুপারিশ করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়েছিল, মামলাধীন জমি, বিকে টাওয়ার নির্মাণ, ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শেয়ারের টাকা লেনদেন, অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের বকেয়া ভাড়া নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বিরোধ চলছে। প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে কমিশন এ বিরোধগুলো নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিতে পারে। এ প্রসঙ্গে যুবকে ক্ষতিগ্রস্ত জনকল্যাণ সোসাইটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আজের আলী সরকার জনকণ্ঠকে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্তরা কেন আদালতের আশ্রয় নিচ্ছেন না। তাদের কথা সঠিক নয়, যুবকের বিরুদ্ধে সরকারবাদী সারাদেশে শত শত মামলা হয়েছে। এমনকি পল্টন থানায় সরকারবাদী একটি মামলা হয়েছে। কিন্তু এত মামলা হওয়ার পরও সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আরামে দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ মামলায় আমরা কোন সুফল পাচ্ছি না। সরকারবাদী মামলা পল্টন থানায় পড়ে আছে, কিন্তু পুলিশ ঘুমাচ্ছে। আসামিরা গ্রেফতার হচ্ছে না। এরপর উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করা হয়েছে, মামলায় রুল জারি হয়েছে এবং মামলাটি শুনানির জন্য আছে। বিষয়টি নিয়ে আরও উচ্চ পর্যায়ে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিটিও ওবায়দুল আযম জনকণ্ঠকে বলেন, যুবকের বিষয়ে সরকারের এখন আর তেমন কিছু করণীয় নেই। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা পাওনা আদায়ে আদালতে গেলে ন্যায্য বিচার পাবেন। তাদের উচিত আদালতের শরণাপন্ন হওয়া।
×