ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোস্তফা জব্বর

একুশ শতক ॥ রোহিঙ্গা ॥ বাংলাদেশের জন্য মানবতা অন্যদের জন্য বাণিজ্য

প্রকাশিত: ০৩:২২, ৮ অক্টোবর ২০১৭

একুশ শতক ॥ রোহিঙ্গা ॥ বাংলাদেশের জন্য মানবতা অন্যদের জন্য বাণিজ্য

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কটের সর্বশেষটির সূচনা থেকে এক মাসেরও বেশি সময় পার হওয়ার পর আমার নিজের কাছে মনে হয়েছে, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি মানবিক প্রসঙ্গ- কিন্তু মিয়ানমার বা আমাদের প্রতিবেশীসহ বিশ্বের তাবত পরাশক্তি এমনকি মুসলিম আরব বিশ্বের জন্যও একটি মহাবাণিজ্য। অনেকে বলেন, রাখাইন রাজ্যের অবস্থা গরিবের ঘরের সুন্দর স্ত্রীর মতো। সে আপনার মাংসে হরিণা বৈরি। মিয়ানমার হোক আর চীন ভারত রাশিয়া কিংবা সৌদি আরব বা আমেরিকা হোক এই সুন্দরী বৌ তাদের চাই-ই। ভারতের সরকারী মুখপাত্ররা এতদিনে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে যেসব মন্তব্য করেছেন তারপরে ভারতকে নিয়ে বাংলাদেশের আর কোন আশাবাদের প্রত্যাশা থাকা সমীচীন নয় বলেই আমার মনে হয়। তবে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে এই দেশের জনগণ ও সরকারের অঙ্গীকার অন্যরকম। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রত্যয়ের সঙ্গে এটি বলেছেন আমরা এক বেলা না খেয়ে থাকলেও রোহিঙ্গারা না খেয়ে থাকবে না। এই অঙ্গীকারের জন্য তাকে মানবতার কন্যা বলা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অন্যরা? বিশ্ব মুরব্বিরা? পুঁজিবাদের মোড়ল বা সমাজতন্ত্রের মাতবর কেউই এটাকে তাদের নিজেদের স্বার্থের ব্যবসা ছাড়া আর কিছু ভাবছে না। বিশ্ব সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদ পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত ছাড়া সভা বার বার শেষ করেছে। এমনকি ইসলামের ধ্বজাধারীরাও রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর পরিচালিত গণহত্যা নিয়ে টুশব্দও করেনি। আমাদের দেশের ধর্ম ব্যবসায়ীরাও চুপ। টাকার কাছে ধর্মও চুপ হয়ে গেছে। তবে দায় পড়েছে সেই দেশটির ওপর যে দেশটি রক্ত দিয়ে নিজে মুক্ত হয়েছে, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বিশ্বের সব নির্যাতিত মানুষের পক্ষে চিরকালই রয়েছে। আমরা বাঙালীরা সেজন্য গর্ব বোধ করি। আমরা ১৬ কোটি মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই অঙ্গীকারকে অন্তরে ধারণ করি যখন তিনি বলেনÑ ১৬ কোটি মানুষ বাংলাদেশে বাঁচতে পারলে আরও দশ বিশ লাখও বাঁচতে পারবে। আমরা ভাগাভাগি করেই খাব-বেঁচেও থাকব। আমার নিজের কাছে যেটি বিস্ময়কর মনে হয়েছে সেটি হলো বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে প্রতিটি রোহিঙ্গার জন্য একবার হলেও চোখের পানি ফেলেছে। তারা নিজেদের একাত্তরের অবস্থার সঙ্গে তাদের অবস্থাকে মিলিয়ে দেখেছে এবং নিজের অতি আপনজন মনে করেছে। মিয়ানমারের কুম্ভিরাশ্রু : অবশেষে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে মিয়ানমারের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর বিষয়ে খবর পেলাম আমরা। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর আউং সান সুচির দফতরের মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ে একদিনের ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে এমন একটি সমঝোতার কথা বলা হয়েছে। সমঝোতায় কি থাকবে এবং কবে কেমন করে কোন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করা হবে সেসব বিষয় এখনও জানা যায়নি। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের এই আলোচনাকে বাহ্যত ইতিবাচকভাবেই দেখা যেতে পারে। খবরটির ভাল দিক হচ্ছে যে মিয়ানমার এই প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করতে সম্মত হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারকে একটি চুক্তির খসড়া দেয়া হয়েছে বলেও জানান। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সহসাই মিয়ানমার সফর করবেন। বাংলাদেশ সন্ত্রাস বিষয়ে জিরো টলারেন্সের কথা জানিয়েছে বলেও খবরে জানা গেছে। বৈঠকে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গেছে। তবে সেই বৈঠকের ফলো আপ কিন্তু এখনও হয়নি। রোহিঙ্গা প্রশ্নে অনেক খারাপ খবরের মাঝে এটি সম্ভবত টানেলের শেষ প্রান্তে ছোট আলোর রেখার মতো একটি বিষয়। আগে থেকে এই দেশে বসবাস করা রোহিঙ্গারা ছাড়াও কেবলমাত্র এবারেই যে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে তাদের বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষ দুনিয়াতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার মতো মানবিক অনুভূতি প্রকাশ করার পরও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে থেকে এর আর্থ-সামাজিক অবস্থার যে অবনতি ঘটাবে এবং আমরা যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব তার কথা ভুলে থাকা যাবে না। বিশ্বের অন্যতম জনবহুল একটি দেশ এবার যখন এমনকি খাদ্য সঙ্কটে নিপতিত (মিয়ানমার থেকে খাদ্য আমদানি করতে হয়েছে) সেই দেশের মানুষ তাদের নিজের দেশের বন্যাকবলিত মানুষদের পাশে বসিয়ে রেখে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো একটি অবিস্মরণীয় উদ্যোগ। কিছু লোক রোহিঙ্গাদের মুসলমান বলে আখ্যায়িত করে একটি সাম্প্রদায়িক চরিত্র দেয়ার চেষ্টা করলেও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে এটি হচ্ছে মানবতার ডাকে সাড়া দেয়া। নিজের খাবারের ভাগ রোহিঙ্গাকে দেয়া। সেই রোহিঙ্গাদের আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে, ধর্ষণ করে, বিতাড়িত করে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে তাদের সম্পত্তি দখল করে আবার বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় বসার রহস্যটা আমাদের মাথায় রাখতেই হবে। যে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয় তাদের সেই দেশটি কি হিসেবে আবার তাদের দেশে ফেরত নেবে সেটিও দেখার বিষয়। যদিও মিয়ানমার অতীতে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়েছে তথাপি রোহিঙ্গাদের এই স্মৃতি আছে যে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে তাদের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মনে প্রশ্ন থাকবেই যে এখন কেন আবার ওদের প্রত্যাবাসনের প্রসঙ্গ আসছে? আমার নিজের কাছে এটিও রহস্যজনক মনে হয় যে, কেন নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে কোন সিদ্ধান্তও নিতে পারেনি। রোহিঙ্গাদের কথাই বা কেন বলিÑ একাত্তরেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও জাতিসংঘ মানবতার পক্ষে জোরালো ভূমিকা নিতে পারেনি। এবার আন্তর্জাতিক চিত্রটা বেশ বৈচিত্র্যময়। আমেরিকা-চীন-রাশিয়া ও আরব বিশ্ব মিয়ানমারের সামরিক জান্তার পাশে থাকার পাশাপাশি ভারতও তাতে যোগ দিয়েছে। আমাদের সময়ে ভারত রাশিয়া পক্ষে থাকলেও এবার ভারতের ও রাশিয়ার বাণিজ্য স্বার্থ আছে মিয়ানমারের রাখাইনে। এমনটি মনে করার কারণ আছে যে, মিয়ানমারের মুরব্বিরা এটি অনুভব করেছে যে, সারা দুনিয়ার সাধারণ মানুষ তাদের থুতু দিচ্ছে এবং তারাই মিয়ানমারকে বাংলাদেশের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা করার বুদ্ধি দিয়েছে। মিয়ানমার সরকারের সেই নাটকটির প্রথম দৃশ্য আমরা দেখলাম মাত্র। জানি না সামনে আর কোন কোন দৃশ্য রয়েছে- আর কি কি নাটক মিয়ানমার ও তার মুরব্বিরা মঞ্চস্থ করবে। রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান : ১. এটি সারা দুনিয়ার উপলব্ধি করা উচিত যে, রোহিঙ্গারা একটি জাতিগোষ্ঠী। তারা মিয়ানমারের রাখাইনে বসবাস করলেও মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের কোন মিল নেই। তারা অনগ্রসর-দরিদ্র ও অশিক্ষিত। রাখাইন রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদ ও ভৌগোলিক অবস্থান তাদের জন্য কোন সুবিধা না দিয়ে বাড়তি সঙ্কট তৈরি করেছে। মিয়ানমার সরকার গোড়া থেকেই এই জনগেষ্ঠীকে কেবল বৈষম্যের চোখে দেখেনি- তারা তাদের নিশ্চিহ্ন করার সব দুরাচারই করেছে। এটি যুগ যুগ ধরে করার ফলে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারকে তাদের নিজেদের দেশও ভাবতে পারেনি। ফলে সেই দেশের সরকারকেও তারা নিজের বলে ভাবেনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তারা মিয়ানমারের মূল জনগোষ্ঠীর বিপরীতে ব্রিটেনের পক্ষে এবং ৪৭ সালে তারা পাকিস্তানের দিকে তাকিয়েছিল। এরপর তারা মুসলিম সহানুভূতি পাবার প্রচেষ্টা করেছিল। বাস্তবে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের সাংস্কৃতিক সমিলতা থাকায় এই অঞ্চলটিকে তাদের আশ্রয়ের জায়গা হিসেবে বেছে নেয়। পাকিস্তানে বাঙালী ও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের অবস্থার অনেক মিল আছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের দুর্ভাগ্য যে তারা কোনদিন একটি সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব পায়নি। মিয়ানমারের স্বাধীনতার সময়ে যেসব রোহিঙ্গা নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের অধিকার, বঞ্চনা, নির্যাতন, স্বায়ত্তশাসন বা ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতেই পারেননি। ওদের কোন ছাত্র বাহিনী ছিল না বা একজন বঙ্গবন্ধু নেই। ফলে বিশ্বজুড়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাণিজ্যই হচ্ছে। তাদের দারিদ্র্য-অশিক্ষা ও অনগ্রসরতা সৌদি আরব-পাকিস্তান ও অন্যান্য মুসলিম দেশে বেসাতির হাতিয়ার হয়েছে। ভারত-চীন-রাশিয়ার জন্য নানা ব্যবসার সূচনাও করেছে। একটি জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠান গণআন্দোলন গড়ে তোলার বদলে তারা সন্ত্রাসীগোষ্ঠী গড়ে তোলে। বাংলাদেশের সামরিক শাসন জিয়াউর রহমান রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সেই কর্মকা-কে মদদ দিতে গিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ঘাটি স্থাপনে সহায়তা করেছে। রোহিঙ্গাদের সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধান একটি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক আন্দোলন। সেই আন্দোলন সৌদি আরব বা পাকিস্তান থেকে জন্ম নেবে না। সিআইএ, কেজিবি বা আইএসআই এই আন্দোলন তৈরি করতে পারবে না। রাখাইনের মাটিতে জন্ম নিতে হবে সেই রাজনৈতিক আন্দোলনকে। রোহিঙ্গাদের সঙ্কটের প্রধানতম কারণ হচ্ছে তাদের দারিদ্র্য ও শিক্ষার অভাব। যুগের পর যুগে তাই রাখাইনে রাজনৈতিক শক্তির আবির্ভাব ঘটেনি। আমি নিজে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের নেতা জাফরের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি যে, তারা জাতীয়তাবাদী আন্দোলন কি তা জানেই না। তাদের সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তি ছিল রাখাইনের জাতিসত্তাকে সাম্প্রদায়িক চরিত্র প্রদান করা। এখনও যারা এটিকে রোহিঙ্গা মুসলিম সমস্যা মনে করেন তারা সেভাবেই রয়ে গেছেন। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিপক্ষে রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক আন্দোলনে সেখানকার অন্য সংখ্যালঘিষ্টদেরও সম্পৃক্ততাও থাকতে হবে। তথাকথিত মুসলিম জাতীয়তা ওখানে জিততে পারবে না। সবার আগে রাখাইন রাজ্যের সব মানুষের একটি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যার চরিত্র হবে গণতান্ত্রিক। রাখাইনের সেই আন্দোলন মিয়ানমার সরকারকে পরাস্ত করতে সক্ষম হতে পারে। এমনও হতে পারে যে, কোন এক সময়ে সেটি সশস্ত্রও হতে পারে। কিন্তু আমাদের শিক্ষা হলো; সশস্ত্র আন্দোলন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ছাড়া সমাধানের পথে যায় না। তবে একটি কথা মনে রাখা দরকার যে, রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এতটাই পশ্চাৎপদ যে তাদের নেতৃত্ব দেয়ার মতো মানুষ রোহিঙ্গাদের মাঝে পাওয়া যাবে না। এজন্য রোহিঙ্গাদের শিক্ষা প্রদান করা দরকার। তাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির জন্যও শিক্ষা দেয়া দরকার। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে আসা মানুষদের শিক্ষা দেবে-স্বাস্থ্যসেবা দেবে এবং দারিদ্র্য থেকে বের হওয়ার পথ দেখিয়ে দেবে। তখনই কেবল রোহিঙ্গারা তাদের নিজেদের অধিকার আদায়ে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে। এই সময়ে মিয়ানমার আরও যেসব নাটক করবে সেটিকে বাংলাদেশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে ও রোহিঙ্গাদের আরও অধপতন প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেবে। বাংলাদেশ কেবল মানবিক দিকটা বিবেচনা করে তাদের পেটে ভাত দেয়ার কথা ভাবলেই হবে না বরং এই জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল যুগের বাসিন্দা করার ব্যবস্থা করতে হবে। ২. মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে তাদের গ্রহণ করা অস্ত্রটাকেই ব্যবহার করতে হবে। ওরা কফি আনান কমিশন গ্রহণ করেছে। সারা দুনিয়াকে কোফি আনান কমিশন মেনে চলার জন্য এবং সেই কমিশনের সকল সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করতে হবে। বাস্তবতা হচ্ছে অন্তত কোফি আনান কমিশন বাস্তবায়ন ছাড়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠানো বরং আরও নতুন গণহত্যার জন্ম দেবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে সেফ জোনের প্রস্তাব দিয়েছেন সেটি বাস্তবায়ন না করে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠালে কি আবারও আগুনের মুখে ঠেলে দেয়া হবে না? ৩. বাংলাদেশের দায়িত্ব হবে রাখাইন রাজ্যকে গ্রাস করার জন্য ভারত-চীন-রাশিয়া-আমেরিকাসহ সাম্রাজ্যবাদীরা যে ষড়যন্ত্র করেছে তা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা। বিশ্ব জনমত তখন রোহিঙ্গাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের প্রতি কেবল সহানুভূতিশীল হবে না বরং সমর্থন করবে। আমি আশা করব রোহিঙ্গা সমস্যাটিকে কেবল বাইরে থেকে আলোচনার বিষয় হিসেবে না দেখে এর গভীরতায় গিয়ে দেখা হবে।
×