ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মেডিক্যাল কোচিং বন্ধ

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মেডিক্যাল কোচিং বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় স্বচ্ছতা আনতে অবিলম্বে মেডিক্যাল কোচিং বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ নির্দেশনাটি এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এ নির্দেশ পালনে সংশ্লিষ্ট সকলকে তৎপর করতে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবর এমবিবিএস ও ১০ নবেম্বর বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে সরকারী ও বেসরকারী উভয় মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (মেডিক্যাল শিক্ষা) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুর রশিদ স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, কিছু প্রতারক, দুর্নীতিবাজ ও কুচক্রী মহল কোচিং সেন্টারের নামে বা ব্যক্তিগতভাবে অনলাইন ব্যবস্থাপনাকে পুঁজি করে অতিসাধারণ কোমলমতি ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মেডিক্যাল, ডেন্টাল কলেজ, ইউনিট, ইনস্টিটিউটে ভর্তির বিষয়ে ১০০ শতাংশ কমন সাজেশন অথবা কোনভাবে ভর্তি করে দেয়ার আশ্বাস-নিশ্চয়তা দেয় তারা। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে এই টাকা সংগ্রহ করে প্রতারক চক্র আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে থাকে। এ কাজ অবশ্যই জনস্বার্থের পরিপন্থী। মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়ে এসেছে এবং সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে বর্তমান সরকারের উর্ধতন মহল সজাগ রয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় অধিকতর স্বচ্ছতা আনতে কোচিং সেন্টারগুলো সাময়িক বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ নেই। কাজেই পরীক্ষার্থীদের গুজবে বিশ্বাস না করে প্রতারণার জালে পা না দিয়ে পড়াশুনায় মনোবিবেশ করে নিজ নিজ যোগ্যতা দেখানোর জন্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের উপদেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে নতুন অনুমোদনপ্রাপ্ত মুগদা মেডিক্যাল কলেজের ৫০টি আসনসহ মোট ২৪টি সরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের মোট আসন সংখ্যা ৩ হাজার ৭৪৪টি। আগামী ৬ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে পদার্থবিদ্যায় ২০, রসায়নবিদ্যায় ২৫, জীববিদ্যা ৩০, ইংরেজীতে ১৫ ও সাধারণ জ্ঞানে ১০ নম্বর থাকবে। দেশে বর্তমানে ৬৪টি বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজে ৫৩২৫টি আসন এবং ২৪টি বেসরকারী ডেন্টাল কলেজে ১২৮০টি আসন রয়েছে। পরীক্ষার পদ্ধতি, প্রশ্নপত্র তৈরি এবং সেগুলো পরীক্ষা সেন্টারে পাঠানোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ জনকণ্ঠকে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোন সুযোগ নেই। প্রশ্নপত্র তৈরি থেকে শুরু করে পরীক্ষা সেন্টারসমূহে পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছা পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে শক্তিশালী নিরাপত্তাবয় থাকে। কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ছাড়াও বিভিন্ন স্তরে বেশ কয়েকটি কমিটির সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। প্রশ্নপত্র তৈরির কাজে পাঁচজন প্রখ্যাত শিক্ষক থাকেন, যাদের পরিচয় বাইরের কেউ জানতে পারেন না। তাঁরা পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাইরের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না। আর সেখানে কর্মরত ৪ থেকে ৫ জন কর্মচারীকেও একই পরিবেশে থাকতে হয়। তাঁরা যেখানে থাকেন, কাজ করেন, সেই কক্ষটি সিসিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকে। বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠানো প্রশ্নপত্রের ট্রাংকের ভেতর স্থাপন করা হবে বিশেষ ট্রাকিং ডিভাইস। প্রশ্নপত্রের ট্রাংকে স্পর্শ পড়লেও সেই ডিভাইসটি সিগন্যাল দিবে। প্রশ্নপত্র তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কক্ষ সার্বক্ষণিক সিসি টিভি দ্বারা মনিটরিং করার ব্যবস্থা থাকবে। এমন পরিবেশ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কথা ভাবাই যায় না। বাড়তি উদ্যোগ হিসেবে ভর্তি পরীক্ষার স্বচ্ছতা তদারকি করতে বিভিন্ন পেশাজীবীদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ‘ওভারসাইড কমিটি’। মডারেটর হিসেবে একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদকে নিয়োগ করা হয়ে থাকে।
×