ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু একজনই জন্মেছিলেন’

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২০ আগস্ট ২০১৭

‘হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু একজনই জন্মেছিলেন’

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বাংলার হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু একজনই জন্মেছিলেন। একটু আপোস করলেই তিনি বিপদমুক্ত থাকতে পারতেন। কিন্তু কোন ধরনের আপোস বঙ্গবন্ধুর রক্তে ছিল না। আমরা তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়েছি। তবে জন্ম জন্মান্তর ধরে যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করে তাদের মাঝে বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন। তাই আগামী দিনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ইতিহাস চর্চায় গুরুত্ব দিতে হবে। শনিবার রাজধানীর বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনারকক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব : একজন প্রতিবাদী মানুষের প্রতিকৃতি’ শীর্ষক একক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি জনকণ্ঠে প্রকাশিত বিভাস বাড়ৈ’র বুয়েট স্বাধীন হলো রিপোর্টের প্রশংসা করেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবর রহমান। বর্তমান তরুণ প্রজন্ম ইতিহাসবিমুখ হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে আবদুল মান্নান বলেন, বর্তমান প্রজন্ম ইতিহাস জানার প্রয়োজন মনে করে না আর আমরাও জানানোর প্রয়োজন মনে করি না। আমাদের সে জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তরুণরা যত বেশি নিজের দেশের ইতিহাস জানবে তত বেশি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারবে। লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, সত্তরের নির্বাচনের পর এটি মীমাংসিত ছিল পাকিস্তানের শাসনভার বঙ্গবন্ধু তথা শেখ মুজিবের হাতে যাবে। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক-বেসামরিক আমলারা মানবে কেন? পুনরায় শুরু হলো বাঙালীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। ইয়াহিয়ার প্ররোচনায় ভুট্টো বললেন, সংবিধানের বিষয়টা সংসদের বাইরে ফয়সালা হতে হবে। বঙ্গবন্ধু সাফ জানিয়ে দিলেন, যা হওয়ার তা সংসদে হবে। ভুট্টোর কাছে তা ছিল অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, পরে বৈঠকের নাটক করে পাকিস্তান থেকে সেনাবাহিনী সেনা এনে সংসদ অধিবেশন স্থগিত করে দিলে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ২৫ মার্চ রাতে শুরু হলো ইতিহাসের ভয়াবহতম গণহত্যা। সেই রাতেই বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হলেন এবং তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলো পশ্চিম পাকিস্তানে। মুখোমুখি করা হলো সামরিক আদালতে বিচারের নামে প্রহসনের। বঙ্গবন্ধু একটু আপোস করলেই মুক্তি ছিল নাগালের মধ্যে। কিন্তু তিনি আপোস করেননি। বঙ্গবন্ধু কখনও দুর্নীতিকে প্রশয় দেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু বেঁচেছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। এই সাড়ে তিন বছরে তার কীর্তি বাংলার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে। তবে যে বিষয়টায় তাঁর সর্বক্ষণিক দৃষ্টি ছিল, সেটি হচ্ছে প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত করা। তিনি কখনও দুর্নীতিকে প্রশয় দেননি। প্রয়োজনে তিনি দলের সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ করতেও বাধ্য করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনেক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ছিল। তার মধ্যে তিনি অন্যায়কে কখনও প্রশয় দেননি, অন্যায় প্রতিরোধ করেছিলেন আর মানুষকে ভালবেসেছিলেন। আজকাল সবাই নেতা হতে চান কিন্তু বঙ্গবন্ধু ১৯৪৭ সালের আগ পর্যন্ত কর্মী। তিনি ছাত্রলীগকে অনেক বেশি সময় দিয়েছেন এবং ছাত্রলীগকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছিলেন। মুনতাসীর মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের একমাত্র সৃজনশীল রাজনীতির প্রতীক। তার মতো এত গুণের সমন্বয় অন্য কোন রাজনীতিবিদের ছিল না। আধুনিক বাংলাদেশের স্থাপনা তিনি তৈরি করেছেন। সৃজনশীল ও বিদ্যাচর্চায় তিনি ছিলেন অনন্য।
×