ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীপুরে নিখোঁজের ১২ দিন পর কৃষকের গলিত লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৯ আগস্ট ২০১৭

শ্রীপুরে নিখোঁজের ১২ দিন পর কৃষকের গলিত লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরের শ্রীপুরে নিখোঁজ হওয়ার ১২ দিন পর মঙ্গলবার বিকেলে শিয়াল-কুকুরে খাওয়া এক কৃষকের ছিন্নভিন্ন গলিত লাশ বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের পাশের একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ওই কৃষকের নাম আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ (৪৫)। সে শ্রীপুর উপজেলার বেলতলী গ্রামের মৃত হেকমত আলী আকন্দের ছেলে। শ্রীপুর মডেল থানার এসআই আব্দুস ছাত্তার ও স্থানীয়রা জানান, গত ২৮ জুলাই সকালে বাড়ির পাশের জমিতে কৃষি কাজের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন কৃষক আব্দুর রাজ্জাক। বিকেলে তিনি স্থানীয় দু’খলা বাজার মসজিদে আছরের নামাজ পড়েন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। রাজ্জাকের সন্ধান না পেয়ে তার স্ত্রী ছাইদুন্নাহার পরদিন ২৯ জুলাই শ্রীপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর থেকে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন নিহত আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধারের চেষ্টা করে আসছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে মিলন মিয়া নামের স্থানীয় এক কৃষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের উত্তর-পূর্ব পাশের সীমানা দেয়াল সংলগ্ন জমিতে কাজ করতে গিয়ে লাশের দুর্গন্ধ পান। এ সময় তিনি পার্শ্ববর্তী উডলট বাগানের বনের ভেতর মানুষের অর্ধগলিত লাশের ছিন্নভিন্ন টুকরো ও হাড় নিয়ে কয়েকটি শিয়ালকে টানা হেঁচড়া করতে ও খেতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ বিকেলে ঘটনাস্থলে যায় এবং মানুষের অর্ধগলিত লাশের ছিন্নভিন্ন টুকরো উদ্ধার করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে নিখোঁজ আব্দুর রাজ্জাকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, জুতা উদ্ধার করে। খবর পেয়ে নিখোঁজ রাজ্জাকের পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে লাশ শনাক্ত করে। শ্রীপুর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, নিহতের পা’সহ শরীরের বিভিন্ন অংশ শিয়াল-কুকুরে খুবলে খেয়েছে ও ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছে। লাশটি অর্ধগলিত ও ছিন্নভিন্ন হওয়ায় প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ বোঝা যায়নি। তবে ময়নাতদন্তের পর সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি আরও জানান, নিখোঁজ আব্দুর রাজ্জাকের মোবাইল ট্র্যাকিং করে প্রতিবারই দেখা গেছে তার অবস্থান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক এলাকায়। তবে দীর্ঘ ১২দিন ধরেই বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও রাজ্জাকের অবস্থান নিশ্চিত করা যায়নি। এ ব্যাপারে নিহতের বড় ভাই মুজিবুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে তার স্ত্রীর পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল। আত্মীয় স্বজনরা একাধিকবার তা সমঝোতার চেষ্টাও করেছেন। দাম্পত্য বিরোধের কারণেই আব্দুর রাজ্জাক নিহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অপরদিকে নিহতের স্ত্রী ছাইদুন নাহার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের কথা অস্বীকার করে বলেন, রাজ্জাকের সঙ্গে তার ভাই ভাতিজার জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। ধারণা করা হচ্ছে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই আব্দুর রাজ্জাককে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
×