ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

গানে গানে বহ্নিশিখার যুগপূর্তি উদ্যাপন

প্রকাশিত: ০৬:১১, ৩১ জুলাই ২০১৭

গানে গানে বহ্নিশিখার  যুগপূর্তি উদ্যাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশজ সংস্কৃতিকে ধারণ করে ১২ বছর আগে যাত্রা করেছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন বহ্নিশিখা। আপন ঐতিহ্যের আলিঙ্গনে চলছে সংগঠনটির নিরন্তর পথচলা। সময়ের পরিক্রমায় শেকড়ের কথা বলা বহ্নিশিখার যুগপূর্তি উদ্যাপিত হলো রবিবার। শ্রাবণসন্ধ্যায় সুর ও বাণীর আশ্রয়ে গানে গানে বয়ে গেল আনন্দধারা। সাফল্যের উদ্্যাপনের এ আয়োজনে সংগঠনের শিল্পীরা গাইলেন ২৪টি গান। সান্ধ্যকালীন সঙ্গীত আসরে পরিবেশিত হলো বিভিন্ন ধারার বৈচিত্র্যময় বাংলা গান। ছিল রবীন্দ্র, নজরুল, রজনীকান্ত, লালন, হাছন, শাহ আব্দুল করিম, আরকুম শাহ, ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান, জালাল খাঁ, সলীল চৌধুরী, ভূপেন হাজারিকা, কালিকা প্রসাদ ও আব্দুল লতিফের গান। সঙ্গীতানুষ্ঠানটির আরও প্রাণময় হয়ে ওঠে সিলেটের ধামাইল, বীরভূমের ঝুমুর, শিলচরের লোকসঙ্গীত আর অসমীয়া ভাষার গানের সুরে। সঙ্গীতানুরাগীরা প্রাণভরে উপভোগ করলেন আয়োজনটি। রাজধানীর শাহবাগের সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে বসে এ সঙ্গীত আয়োজন। সূচনা পর্বে উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এবং বহ্নিশিখার সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। আর সঙ্গীতায়োজনটির পরিচালনায় ছিলেন আবিদা রহমান সেতু। সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব শেষ হতেই গানের পালা। বহ্নিশিখার ১৩ জন শিল্পী এক সঙ্গে বসে গেয়ে শোনালেন ২৪টি গান। যার শুরুতেই ছিল বর্ষার গান। সবগুলো কণ্ঠ এক হয়ে গেয়ে শোনায় ‘মেঘের অম্বরে ঘন বারে’। এর পর একে একে তাদের কণ্ঠে শোনা যায় ‘অপমানে তুমি জ্বলে উঠেছিলে’, ‘সোনা সোনা সোনা বলে লোকে’, ‘আমরা বাঙালী’, ‘তুমি রবে নীরবে’, ‘বাউলা কে বানাইলো রে’, ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান’, ‘জিন্দাবাদ ম্যান্ডেলা’, ‘এসব দেখি কানার হাটবাজার’, ‘নাও ছাড়িয়া দে’, ‘জারুলের ফুলে দলে দলে’, ‘কালো মনে কুচলা তলে’, ‘এই তো আষাঢ় মাসে’, ‘সোনার বান্ধাইলা নাও’, ‘আমার আপনার চেয়ে’, ‘মায়ের দেওয়া মোটা কাপড়’, ‘আজ জীবন খুঁজে পাবি’, ‘মিলে মিলে টোকা খালে’, ‘আমি তোমারি তোমারি নাম গাই’, ‘সুয়া উড়িল উড়িল জীবের জীবন’, ‘সোনা ঝরা সেই দিনেই কথা’, ‘রসিক আমার মন বান্ধিয়া’, ‘আজ যত যুদ্ধবাজ’ ও ‘তুমি নির্মল কর মঙ্গল কর’। জাদুঘরে মসলিনবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী দৃক-বেঙ্গল মসলিন প্রকল্পের ব্যানারে জাতীয় জাদুঘর এবং আড়ংয়ের সহযোগিতায় ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাসজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘মসলিন উৎসব’। এর অংশ হিসেবে গেল দেড় বছর ধরে প্রদর্শনী, মসলিনের ইতিহাস-বৃত্তান্ত বিষয়ক সেমিনার, আহসান মঞ্জিলে ‘মসলিন নাইট’, ‘মসলিন, আওয়ার স্টোরি’ শিরোনামে বই প্রকাশনা, ‘মসলিনের দেশে’ শিরোনামে শিশু-কিশোরদের জন্য বাংলা এবং ইংরেজী কমিক বই প্রকাশিত হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার নির্মিত হলো মসলিন নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র ‘লিজেন্ড অব দ্য লুম’। এই প্রামাণ্যচিত্রের উদ্বোধনী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হলো রবিবার। রবিবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আরও বক্তব্য রাখেন জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী এবং ‘মসলিন : আওয়ার স্টোরি’র লেখক এবং দৃকের প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম। ‘লিজেন্ড অফ দ্য লুম’ প্রামাণ্যচিত্রের ব্যাপ্তি ৪৩ মিনিট। ইংরেজী ভাষায় নির্মিত তথ্যচিত্রটির গবেষণায় ছিলেন সাইফুল ইসলাম, প্রযোজনা করেছে দৃক বেঙ্গল মসলিন, পরিচালনায় ছিল টিনাইনএফএক্স এবং ধারাবর্ণনা দিয়েছেন মিতা রহমান। ২০০০ বছরের ইতিহাস; বাংলাদেশের নদীর তীর, যেখানে কার্পাস তুলার চাষ হতো; সেখান থেকে বিশ্বের সবচেয়ে নামী কাপড়ের উৎপাদন প্রক্রিয়া; বিশ্ব ফ্যাশন এবং বাণিজ্যের প্রভাব এবং এর বর্তমান অবস্থা উঠে আসে এই তথ্যচিত্রে। তথ্যচিত্রটি পর্যায়ক্রমে ঢাকার আর কয়েকটি ভেন্যুতে প্রদর্শিত হবে এবং শীঘ্রই এর একটি বাংলা সংস্করণও প্রদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানায় এর আয়োজকরা। জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের জন্মদিনের বক্তৃতা রবিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২০তম জন্মবার্ষিক উদযাপিত হলো। এ আয়োজনে একাধারে বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক এবং বাংলাদেশের দাবাগুরু, চল্লিশ দশকের শেষভাগে দেশে মুক্তবুদ্ধির চর্চার অন্যতম প্রবক্তার ওপর ‘তিন অধ্যাপক : এক জীবনাদর্শ’ শীর্ষক স্মারক করেন সাহিত্য-সংস্কৃতিসেবী মফিদুল হক। তিনি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান তিন অধ্যাপক ভাষাবিদ বাংলা বিভাগের ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্, পরিসংখ্যান বিভাগ ও পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট, আইএসআরটির প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষক ড. কাজী মোতাহার হোসেন এবং দর্শন বিভাগের অধ্যাপক শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. গোবিন্দ্র চন্দ্র দেবের ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের গুরু হয়েও জীবনাদর্শ, মানবতাবোধ, অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবোধের মোহনায় এক হবার তত্ত্ব। বার্ষিক এ অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হয় পরিসংখ্যান বিভাগ এবং আইএসআরটির স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষার মেধা তালিকার শ্রেষ্ঠ ছয় শিক্ষার্থীকে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সভাপতিত্ব করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক সন্দা খাতুন। কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যৌথভাবে এ বক্তৃতা অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং আইএসআরটি।
×