ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-মালয়েশিয়ার আদলে এটি করা হবে- জানালেন বিডা চেয়ারম্যান

মহাসড়কের দুই পাশে শিল্প করিডর স্থাপন হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১০ জুলাই ২০১৭

মহাসড়কের দুই পাশে শিল্প করিডর স্থাপন হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারত ও মালয়েশিয়ার আদলে মহাসড়কের দুই পাশে শিল্প করিডর স্থাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এতে স্বল্প ব্যয়ে এবং কম সময়ে পণ্য পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত হবে বলে জানানো হয়েছে। বিনিয়োগ আকর্ষণেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সম্ভাব্য কয়েকটি রুট বিবেচনায় নিয়েছে বিডা। রুটগুলো হলোÑ যশোর-মাগুরা-ফরিদপুর-ঢাকা, যশোর-নড়াইল-কাশিয়ানী-ভাঙা-ঢাকা, যশোর-খুলনা-বাগেরহাট- গোপালগঞ্জ-কাশিয়ানী-ভাঙা। রবিবার বিডা কার্যালয়ে এক সভায় এসব কথা জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম। ওই সভায় ভারত ও মালয়েশিয়ার ইকোনমিক করিডর সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। এর আগে ভারত ও মালয়েশিয়া সফর করেন বিডা চেয়ারম্যান ও সংস্থাটির সদস্যরা। এই দুই দেশের ইকোনমিক করিডর ঘুরে এসে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন বিডার নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইন, পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এবং ডেপুটি পরিচালক গাজী একেএম ফজলুল হক। বিডা চেয়ারম্যান বলেন, শিল্প করিডর স্থাপনে আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনও দিয়েছেন। এটাকে বাস্তবায়নের জন্য এডিবির (এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) কাছ থেকে প্রাথমিক টেকনিক্যাল সাপোর্ট পেয়েছি। আমাদের লোকজন সরেজমিনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রাথমিক ধারণা নিয়েছে। এ ধারণা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হবে। শিল্প করিডরের সম্ভাব্য রুটের বিষয়ে তিনি বলেন, শিল্প করিডরের জন্য উল্লেখিত রুটগুলোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এগুলো নিয়ে আরও অনেক কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বেশকিছু বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। কোনদিক দিয়ে পথ নিলে বেশি সুবিধা হবেÑ তা বিবেচনায় নিতে হবে। ভারত ও মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা নিয়েই এই করিডর করা হবে। সভায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলÑ বেজা, ভূমি মন্ত্রণালয় ও এডিবির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে দেশের লেদার, ফুটওয়্যার, আইসিটিসহ বিভিন্ন উদীয়মান শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণে বিডা কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি বিডার কার্যালয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতা প্রতিষ্ঠান ডিএফআইডির উপ-প্রধান অর্থনীতিবিদ নিক লিয়ার সঙ্গে বিডার চেয়ারম্যানের সৌজন্য সাক্ষাত হয়েছে। ওই সময় বাংলাদেশের বর্তমান বিনিয়োগ পরিস্থিতি, বিনিয়োগ সমস্যা ও সম্ভাবনা, সরকারের এ সংক্রান্ত গৃহীত নীতি, ইজি অব ডুয়িং বিজনেস, ওয়ানস্টপ সার্ভিস এ্যাক্ট প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা হয়। বাংলাদেশে উচ্চ মূল্য পণ্য সংযোজন ও বিপণনে মনোযোগ এবং জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প যথা-বায়োটেকনোলজি, জেনেটিক্স প্রভৃতি স্থাপনে আগ্রহী। সরকার এ ধরনের শিল্পে বিনিয়োগে অধিকহারে প্রণোদনা প্রদান করছে। বিদেশী বিনিয়োগকারী ও দাতা সংস্থাগুলো বাংলাদেশের রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। এদিকে, বিদ্যমান বিনিয়োগের দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল গ্রহণ করে একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হবে। রূপকল্প-২১ বাস্তবায়ন এবং ওই সময়ের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে যেতে হলে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়াতেই হবে। আর এ জন্য বাড়াতে হবে মাথাপিছু আয়। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিনিয়োগ। কারণ বিনিয়োগ হলেই কর্মসংস্থানের পাশাপাশি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। বাড়বে ক্রয়ক্ষমতা। এই বাস্তবতায় দেশে সরকারী-বেসরকারী খাতের বিদ্যমান বিনিয়োগের দক্ষতা বাড়ানের কৌশল নেয়া হচ্ছে। জানা গেছে, বিদ্যমান বিনিয়োগের দক্ষতা বাড়াতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিকভাবে দুটি বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এগুলো হচ্ছেÑ কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ গড়ে তোলা এবং মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে সহায়তা প্রদান করে কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো। এ লক্ষ্যে চলতি বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়ার পাশাপাশি শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, প্রাথমিকভাবে বিদ্যমান বিনিয়োগের দক্ষতা বাড়ানো গেলেও উৎপাদন ও সেবার মান প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব।
×