ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

রমজানের প্রথম জুমায় মসজিদে উপচে পড়া ভিড়

প্রকাশিত: ০৬:১২, ৩ জুন ২০১৭

রমজানের প্রথম জুমায় মসজিদে উপচে পড়া ভিড়

স্টাফ রিপোটার ॥ শুক্রবার রমজানের প্রথম জুমায় মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় ছিল রাজধানীর প্রতিটি মসজিদে। মুসল্লিদের ভিড়ে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না মসজিদগুলোতে। আজান দেয়ার আগেই মুসল্লিরা ছুটতে থাকেন মসজিদের দিকে। জামাত শুরুর আগেই প্রত্যেকটি মসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মসজিদের ভিতরে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় নামাজের জামাত রাস্তায় অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদের ভেতরে জায়গা না পেয়ে মসজিদের ছাদ, খোলা জায়গা, খেলার মাঠ ও রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। শুক্রবার রমজানের প্রথম জুমায় নগরীর প্রত্যেকটা মসজিদেই এমন দৃশ্য দেখা গেছে। শুক্রবার ছিল পবিত্র রমজানের ষষ্ঠ দিন। প্রথম জুমাবার। রমজানের জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে প্রত্যেক জুমার দিনই অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। পবিত্র রমজানের জুমার দিন হওয়ায় এর ফজিলত আরও অনেকগুণ বেশি। পবিত্র কোরান ও হাদিসে জুমার দিনের বহু ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি হওয়ায় অধিক সওয়াবের আশায় মুসল্লিগণ প্রথম রমজানে নামাজ আদায় করতে মসজিদে ভিড় জমান। জুমার নামাজের আজান শুরু হতেই মুসল্লিদের জায়নামাজ হাতে নিয়ে মসজিদ পানে ছুটতে দেখা যায়। শিশু, বয়স্ক থেকে শুরু করে প্রায় সব বয়সীদের জুমার নামাজে শরীক হতে দেখা গেছে। শুধু ঢাকা মহানগরী নয় ঢাকার বাইরে অন্যান্য মহানগরী ও বড় শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদগুলোতেও মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। জুমার নামাজে রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে খুৎবা পাঠ করেন খতিবরা। এছাড়া নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা এবং আল্লাহ্র দরবারে গুনাহ থেকে মুক্তি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয় এদিন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে শুক্রবার প্রথম জুমায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। নামাজের আগেই মুসল্লিদের মসজিদ অভিমুখে যেতে দেখা যায়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন জাতীয় মসজিদে নামাজ আদায় করেন এদিন। মসজিদের ভেতরে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় নামাজের জামাত মসজিদের গন্ডি ছাড়িয়ে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। উত্তর গেটে পল্টনের রাস্তায় বসে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। আর দক্ষিণের গেট পার হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে জামাত ছড়িয়ে পড়ে। জাতীয় মসজিদের খতিব তার বয়ানে মাহে রমজানের ফজিলত ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। রমজান বিষয়ে হাদিস উদ্ধৃত করে রমজানে ধৈর্য ও সহানুভূতির শিক্ষা গ্রহণ করতে তিনি মুসল্লিদের আহ্বান জানান। এদিকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ছাড়াও ঢাকার অন্যান্য মসজিদে একই ধরনের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গুলশাল গাউছুল আজম মসজিদে রমজানের প্রথম জুমায় মুসল্লিদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। মিরপুরের রোকেয়া সরণির মসজিদগুলোতে একই ধরনের চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। কাজী পাড়া, শেওড়া পাড়া মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় মূল রাস্তায় চলে আসে। নামাজের সময় এসব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মসজিদে নামাজের খুৎবায় রমজানের বিশেষ গুরুত্ব তুলে ধরে বয়ান করেন খতিবরা। এছাড়া নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বসুন্ধরার রাজবাড়ী জামে মসজিদে প্রায় ৩ হাজার লোক জুমার নামাজ আদায় করেছে। তিনতলা মসজিদের কোথাও ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই। মসজিদের ভেতরে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় এক পর্যায়ে জামাত বাইরে চলে আসে। এদিকে বনশ্রী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। বিপুলসংখ্যক মুসল্লি এদিন জুমার নামাজ আদায় করেন। মূল মসজিদ ছেড়েও নামাজের জামাত রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানীর হাজীপাড়া নতুন রাস্তা জামে মসজিদে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে মসজিদে ভিড় বাড়ার সঙ্গে প্রত্যেক মসজিদে ভিখারিদের ভিড় বাড়ে ব্যাপক হারে। প্রত্যেক মসজিদে ও আশপাশের এলাকায় ভিখারিদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। তারা অপেক্ষায় থাকে কখন মুসল্লিরা নামাজ শেষ করে বের হবেন। নামাজ শেষে ভিখারিদের হুড়োহুড়ি লেগে যায়। কে কার আগে ভিক্ষা আদায় করতে পারবে এ আশায়। তবে গরিব, অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে এবং রমজানে বিশেষ সওয়াবের আশায় অনেক মুসল্লিকে ভিক্ষা প্রদান করতেও দেখা গেছে।
×