ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষার আগেই যমুনায় ভাঙ্গন

দুই শ’ ফুট বাঁধ নদীগর্ভে

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৫ মে ২০১৭

দুই শ’ ফুট বাঁধ নদীগর্ভে

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই সিরাজগঞ্জের উজানে এবং ভাটিতে যমুনায় ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। উজানে ভাঙছে সিরাজগঞ্জ সদরের বাহুকা, কাজীপুরের শুভগাছা এবং ভাটিতে চৌহালী উপজেলা সদরে। ভাঙ্গনে গত তিন দিনে বাহুকা ও শুভগাছায় আবাদী জমিসহ মূল বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় দুই শ’ ফুট এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। শতাধিক বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সিরাজগঞ্জে যমুনাপাড়ের অসময়ের ভাঙ্গনে জমি-জিরাত ও জনগণের ক্ষয়ক্ষতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ভাঙ্গনরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাহুকা, শুভগাছায় বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজশাহী অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলীসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার সকালে ভাঙ্গন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। চৌহালীতে যমুনা নদী তীর সংরক্ষণে নির্মাণাধীন বাঁধের খগেনের ঘাটের ৭০ মিটার এলাকাজুড়ে ধস দেখা দিয়েছে। এর ফলে যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত ধসের বিস্তৃতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ মিটারে। তবে বালুবোঝাই জিওব্যাগ ডাম্পিং করে ধস ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এলাকাবাসী জানায়, ১০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চৌহালী ও টাঙ্গাইলের নাগরপুর ৭ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের নির্মাণকাজ ২০১৫ সালের ২৪ নবেম্বর শুরু হয়। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ জানান, বাঁধের তলদেশে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এই ধস দেখা দিয়েছে। তবে এতে আতঙ্কের কিছু নেই। কিছু দিনের মধ্যেই এর সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হবে। এতে মূল বাঁধ নির্মাণে কোন প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে সিরাজগঞ্জের উজানে সদর উপজেলার বাহুকায় বুধবার দুপুরে আকস্মিকভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ মুল বাঁধের প্রায় দুই শ’ ফুট এলাকা ভেঙ্গে এপার ওপার হয়ে গেছে। গত এক সপ্তাহ যাবত বাহুকা ও কাজীপুরের শুভগাছায় যমুনা নদী ভাঙছে। ভাঙ্গনে জমি-জিরাতসহ মানুষের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ভাঙ্গনরোধে বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হলেও ভাঙ্গন প্রশমনে তা সফল হয়নি। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম বলেছেন, অসময়ে যমুনায় এমন বাঙ্গন এর আগে কখনও হয়নি। তবে পানি কম থাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়নি। বাহুকা শুভগাছা এলাকায় স্থায়ী প্রতিরক্ষামুলক কাজের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়ে তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। বর্ষার আগেই তা শুরু করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে ভাঙ্গন এলাকায় প্রায় দুই কিমি বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণ কাজ দুই একদিনের মধ্যেই শুরু করা হবে।
×