ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেট বাস্তবায়নের দুর্বলতা কাটাতে পাঁচ সুপারিশ

বড় আকারের বাজেট দেশের জন্য ভাল ॥ সিপিডি

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১৭ এপ্রিল ২০১৭

বড় আকারের বাজেট দেশের জন্য ভাল ॥ সিপিডি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখতে বড় আকারের বাজেট দেশের জন্য ভাল বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ সিপিডি। এছাড়া বেসরকারী এ সংস্থা আগামী বাজেটে ডিজেলসহ সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমানোসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে। একইসঙ্গে বাজেট বাস্তবায়নের জন্য বা অর্থ ব্যয় নিশ্চিত করতে সরকারী প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশও করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। রবিবার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করে বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সিপিডি। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমানোর সুপারিশ করে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, এ দুটি জ্বালানি দরিদ্র মানুষ বেশি ব্যবহার করে থাকে। এই দুটি জ্বালানি থেকে সরকার বেশি মুনাফা করলে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে খুব বেশি সাশ্রয় হবে না। দাম কমালে গরিব মানুষ লাভবান হবে। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সিপিডি এ কথা বলেছে। বাজেট বাস্তবায়নের দুর্বলতা কাটাতে পাঁচটি সুপারিশ করেছে তারা। এর একটি সুপারিশ হলো ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমানো। এদিকে বাজেট বাস্তবায়নের দুর্বলতা কাটাতে সিপিডির অন্য চারটি সুপারিশ হলোÑ রফতানি ও প্রবাসী আয় খাতকে সুবিধা দিতে স্বল্প মেয়াদে টাকার মূল্যমান কমানো, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা দূর করতে স্বাধীন আর্থিক খাত সংস্থার কমিশন গঠন। আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আইন বাস্তবায়নকে নীতিগত সমর্থন করে সিপিডি। তবে সিপিডি মনে করে, ১৫ শতাংশ মূসক হার ভোক্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। কারণ, এতে উৎপাদন খরচ বাড়বে। এছাড়া সিপিডি আরও বলেছে, আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিন্ন ১৫ শতাংশ মূসক হার নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই আপাতত তা কমানোর সুযোগ এখন নেই। আগামী এক-দুই বছরে মূসক আহরণ বৃদ্ধি পেলে তা ক্রমান্বয়ে ১২ শতাংশে নামিয়ে আনা উচিত। অনুষ্ঠানে সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাজেটের আকার বড় হলেও তা বাস্তবায়নের সক্ষমতা বাড়ছে না। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি সম্প্রসারণশীল বা বড় বাজেট নেয়ার অবস্থা বিদ্যমান। তবে বড় বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা বাড়াতে বড় বড় নীতি সংস্কার করতে হবে। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, প্রতিবছর বড় বাজেট বলে যে কল্পকাহিনী বাজারে ছড়ানো হচ্ছে, তা এক ধরনের আর্থিক ভ্রম। বাজেট বড় বলা হচ্ছে, কিন্তু বড় নয়। কেননা, কর জিডিপি অনুপাত কিংবা ব্যয় জিডিপি অনুপাত আগের চেয়ে খুব বেশি বাড়েনি। তার মতে, গত কয়েক বছরে কর আহরণে সফলতা এলেও ব্যয় করার সামর্থ্য বাড়েনি। এটি একটি অদ্ভুত বিষয় বলে মনে করেন তিনি। এ ছাড়া নির্বাচনের বছরে সরকারের পক্ষে বড় সংস্কার নেয়া কঠিন বলে মনে তিনি করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান প্রমুখ। সিপিডির গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে বলেন, সরকার সবসময় একটা বড় বাজেটের কথা বলেন, সরকারী ব্যয় ও আয়ের কথা বলেন। আমরা তা পূর্ণভাবে সমর্থন করি। সিপিডির সাবেক নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা সম্প্রসারণশীল বাজেটের পক্ষে। আমরা শুনেছি আগামী বাজেট ৪ লাখ ২০০ কোটি টাকার বাজেট হতে পারে, যা মাথাপিছু ২৫ হাজার টাকা বা ৩০০ ডলার মতো হয়। এটা উন্নয়নশীল বিশ্বের চেয়ে কম।
×