ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

আদমদীঘিতে নামজারি নিয়ে ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ১৪ এপ্রিল ২০১৭

আদমদীঘিতে নামজারি নিয়ে ভোগান্তি

নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার, ১৩ এপ্রিল ॥ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় নামজারি (খারিজ) করা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ভূমি মালিকরা। অভিযোগ করা হয়েছে সঠিক কাগজপত্র থাকার পরও সহকারী কমিশনার ভূমি নতুন নামজারি খতিয়ান খুলে না দেয়ায় ভোগান্তির শিকার হয়ে দিনের পর দিন ভূমি অফিসে ধর্ণা দিয়ে বেড়াচ্ছে ভূমি মালিকগণ। নামজারি খতিয়ান না হওয়ায় ভূমি বেচাকেনা ও ব্যাংক ঋণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ভূমি মালিকগণ। পক্ষান্তরে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থায় জরুরীভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বেশকিছু ভূমি মালিক বিভাগীয় কমিশনার, রাজশাহী বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেছেন। ওই অভিযোগ পত্র থেকে জানা গেছে, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা ভূমি অফিসের অধীনে সান্তাহার পৌর ভূমি অফিস ছাড়াও রয়েছে ছয় ইউনিয়ন ভূমি অফিস। এসব ভূমি অফিসের আওতায় সাধারণ ভূমি মালিকরা নামজারি করার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসে সঠিক কাগজপত্রসহ নামজারি করার জন্য আবেদন করলে তা বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় কারণ দেখিয়ে বাতিল করা হচ্ছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নামজারি আবেদন ফরমে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ভূমিতে সরকারী স্বার্থ জড়িত না থাকলে সর্বশেষ নামজারি ভিত্তিতে নামজারি করা হবে। সে ক্ষেত্রে অন্য কোন কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে না। কিন্তু বর্তমান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সর্বশেষ নামজারি খতিয়ান থেকে নতুন নামজারি করছেন না। বরং তিনি গত ৭-৮ মাসে প্রায় দুই হাজার খারিজ কেস বাতিল করে দিয়েছেন। শত শত ভূমি মালিকের মতো নামজারি করতে আবেদন করেছেন সান্তাহার শহরের চাবাগান মহল্লার মাসুদ। দীর্ঘ কয়েক মাস অতিবাহিত হলেও তিনি নামজারি করাতে পারছেন না। তিনি জানান, তার মায়ের নামে সর্বশেষ নামজারি খতিয়ান আছে। তার মায়ের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে ওয়ারিশ হন তিনি ও তার ছোট ভাই এবং বাবা। সে বিষয়ে পৌরসভা থেকে প্রাপ্ত ওয়ারিশান সনদও জমা দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সর্বশেষ নামজারি থেকে নতুন নামজারি খতিয়ান খোলা যাবে না বলে জানিয়েছেন। ফলে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। এরকম অবস্থা শুধু মাসুদের নয় উপজেলার শত শত ভূমি মালিকের। এ ব্যাপরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা পারভীনের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সঠিক কাগজপত্র থাকার পরও নামজারি করা হচ্ছে না এই অভিযোগ সঠিক নয়। সর্বশেষ নামজারি থেকে নতুন নামজারি করার বিষয়টি সরকারীভাবে পরিপত্র আকারে জারি করা হয়নি। এটি নামজারি আবেদন ফরমের একটি পয়েন্ট মাত্র। নামজারি করার জন্য আবেদন করা ভূমিতে সরকারী স্বার্থ জড়িত আছে কি না, তা বিষদভাবে যাচাই করা হচ্ছে। যাচাইয়ে যাদের কাগজপত্র সঠিক পাওয়া যাচ্ছে তাদের নামজারি করে দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থা শুধু আদমদীঘি উপজেলাতে নয়, জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও নামজারির জন্য করা আবেদনের ভূমিতে সরকারী স্বার্থ জড়িত আছে কি না, সে বিষয়টি বিশদভাবে যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন।
×