ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় দিশেহারা কৃষক

ব্লাস্ট ছত্রাকে আক্রান্ত বোরো

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ১২ এপ্রিল ২০১৭

ব্লাস্ট ছত্রাকে আক্রান্ত বোরো

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ ব্লাস্ট নামক ছত্রাকে আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরায় বোরো ধানের শীষ শুকিয়ে যাচ্ছে। ধান পাকার আগেই ধানের শীষে পুষ্টি নেই। বেশির ভাগ আক্রান্ত এলাকার ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে বলছে ব্লøাস্ট নামক এক ধরনের ছত্রাক সংক্রমণে এমনটি হচ্ছে। এতে খরচ তুলে আনার চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। তবে কৃষি বিভাগের দাবি উৎপাদন ঘাটতি ব্যাপক হবে না। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ৭৪ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যা’ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৫০ হেক্টর বেশি। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে দুই লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন। তবে ব্লাস্টের কারণে ধানের উৎপাদন ঘাটতির আশঙ্কা করছে কৃষকরা। এমনকি উৎপাদন খরচ বাঁচবে কিনা তাও নিয়ে তারা এখন শঙ্কিত। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান জানান, ব্লাস্ট একটি ছত্রাকজনিত রোগ । চুয়াডাঙ্গা নিজস্ব সংবাদদাতা চুয়াডাঙ্গা থেকে জানান, গমের পর এবার ধানে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন মাঠে ছত্রাক জাতীয় ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে শীষমুখী শত শত বিঘা বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধান ঘরে তোলার আগ মুহূর্তে এ রোগ দেখা দেয়ায় চাষীরা হয়ে পড়েছে দিশেহারা। কৃষি কর্মকর্তারা প্রকৃতির ওপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের দোষ ঢাকার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ কৃষকদের। জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৪ উপজেলায় ৩৩ হাজার ৩৯৬ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আবাদ হয়েছে ৩৩ হাজার ৫৪৮ হেক্টর জমিতে। আবাদকৃত জমির মধ্যে বিআর-২৬, ব্রি-২৮, ৪৮, স্বর্ণা ও খাটো বাবু জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ ভাগ জমিতে আবাদ হয়েছে ব্রি-২৮ জাতের ধান। আর এ জাতের ধানেই দেখা দিয়েছে ব্লাস্ট রোগ। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দোস্ত গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, আক্রান্ত ধান গাছের নিচের অংশে রিংয়ের মতো কালো দাগ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় ভাষায় এটাকে গিটে ব্লাস্ট বলা হচ্ছে। আবার কোন কোনটিতে শীষের নিচের অংশে, থোড়ে ও পাতায় কালো দাগ সৃষ্টি হয়ে পচন ধরছে। আক্রান্ত হওয়া ধান গাছের শীষ শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই এর বিস্তার ঘটছে। গ্রামের একাধিক চাষী বলেন, জমি লিজ নিয়ে ধান আবাদ করেছি। ব্লাস্ট আক্রান্ত হওয়ার কারণে বিঘাপ্রতি আমরা ৩-৪ মণ হারেও ফলন পাব না। এতে আমরা খাব কী? আর ঋণই বা পরিশোধ করব কিভাবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এর আগে কখনও ধানে ব্লাস্ট রোগ দেখা যায়নি। গত সোমবার হটাত করে এ রোগ দেখা দেয়ায় আমরা চিন্তিত। ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধের করণীয় সম্পর্কে কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক, নির্মল কুমার দে বলেন, তাপমাত্রা ভারসাম্যহীন হওয়ার কারণে এমনটি ঘটতে পারে। এ রোগের যাতে বিস্তার না ঘটে তার জন্য ছত্রাক নাশক ওষুধ সময়মতো সঠিক মাত্রায় প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
×