স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হায়েনাদের হাতে নির্যাতিত মহেশখালীর একটি পরিবার এখনও নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বলে জানা গেছে। ১৯৭১ সালে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানী বাহিনী বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে নিঃস্ব করে দিয়েছিল আব্দুল মাবুদ চেয়ারম্যানকে। পাকি হানাদার বাহিনীর দোসররা বর্তমানে সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল করিমকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে বলে স্বামীকে বাঁচাতে আকুতি জানিয়েছেন তার স্ত্রী ইসরাত জাহান নীনা। এ ব্যাপারে ফেরদৌস বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দাখিল করেছেন।
জানা যায়, মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ১৯ আসামির মধ্যে মহেশখালীর পাঁচজন কারাবন্দী থাকলেও ১৪ আসামি এখনও পলাতক আছে। মহেশখালীর বিভিন্ন স্থানে ওই রাজাকার এবং তাদের দোসরদের বাড়ি। আওয়ামী লীগ ঘরানা ব্যক্তিরা বলেন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত কুখ্যাত রাজাকার, আলবদর ও আলসামস্রে দোসররা স্বাধীনতা পক্ষের লোকজনকে নিষ্ক্রিয় করার কৌশল বেছে নিয়েছে। ওসব আসামি পলাতক থাকলেও তাদের স্বজনরা সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র, ইয়াবা ব্যবসা, দখল বাণিজ্য ও স্থানীয় নিরীহ লোকজনের ওপর দাপট দেখিয়ে চলছে। মহেশখালীর ভূইয়া পরিবার হিসেবে খ্যাত মরহুম হাজী আব্দুল মাবুদ হোয়ানক ইউপির চেয়ারম্যান ছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর তার পুত্র এনামুর করিমও ঐ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। রাজাকারের দোসররা এখনও তাদের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে স্থানীয় ফেরদৌস ও মোস্তফা কামালের নাম উল্লেখ করে ওই মহিলা জানান, তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা কোটি কোটি টাকার চিংড়ি ও লবণ লুট করা ছাড়াও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে তাদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। এ ব্যাপারে আইনী সহায়তা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করলে ওই সন্ত্রাসী বাহিনী এবং মহেশখালীর ওসির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকা সত্ত্বেও মহেশখালীর কতিপয় অসৎ পুলিশ সন্ত্রাসীদের পক্ষে ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ করেন গৃহবধূ নীনা। তাদের লবণ মাঠের কর্মচারী মোজাম্মেল হক, মুহিউদ্দিন, পথচারী সেলিমকে ফেরদৌস বাহিনী হত্যা করেছে। ওই বাহিনী পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে লবণ চাষী আব্দুস সাত্তার ও খুইল্যা মিয়াকে সন্ত্রাসী সাজিয়ে মহেশখালী থানা পুলিশ ক্রসফায়ারে হত্যা করে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।