ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুক এক ঘণ্টার জন্যও বন্ধ হচ্ছে না ॥ তারানা

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৫ এপ্রিল ২০১৭

ফেসবুক এক ঘণ্টার জন্যও বন্ধ হচ্ছে না ॥ তারানা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফেসবুক এক ঘণ্টার জন্যও বন্ধ হচ্ছে না। দেশের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। অল্প কিছু মানুষের কারণে ফেসবুক বন্ধের প্রশ্নই ওঠে না। মঙ্গলবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সচিবালয়ে এ কথা বলেন। মঙ্গলবার বিকেলে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ফেসবুক নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করার জন্য এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে কারিগরি মতামত চাওয়া হয়েছিল। আমরা এ বিষয়ে ফেসবুক বন্ধ না করার পক্ষে মতামত দিয়েছি। এটা নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে খবর প্রকাশ করা হয়েছে, তা দুঃখজনক। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দিয়ে জানিয়েছি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফেসবুক বন্ধ করা কোনভাবেই সম্ভব না। মন্ত্রণালয় এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ বিষয়টি কোন আলোচনাও হয়নি। অযথা একটা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা হচ্ছে। বিষয়টি বিবেচনার মধ্যেও আনা হয়নি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফেসবুকের ক্ষেত্রে প্রাইভেসি ফিচার ব্যবহার করাসহ সচেতনতা বাড়াতে আমরা কাজ করতে পারি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের এত বড় মাধ্যমকে বন্ধ করতে পারি না। আমি আবারও দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, এ রকম কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। ফেসবুকে নানা মন্তব্য, প্রতি মন্তব্য ও স্ট্যাটাস দেয়া হয়েছে। এসব ভিত্তিহীন তথ্যের ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে। ফেসবুক বন্ধ করা নিয়ে মন্ত্রণালয় কোন আলোচনা করেছে বা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমন কোন কাগজপত্র কেউ দেখাতে পারবেন না। আশা করি আজ থেকে এনিয়ে সবার সংশয় দূর হবে। মধ্যরাতে ফেসবুক ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকবে এ ধরনের প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ারও সমালোচনা করেন তারানা হালিম। ভবিষ্যতে এ ইস্যু নিয়ে নিউজ করার আগে সাংবাদিকদের তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তারানা হালিম বলন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় দৃঢ়ভাবে বলতে চায় এক ঘণ্টার জন্য ফেসবুক বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। মধ্যরাতে ছয় ঘণ্টার জন্য ফেসবুক বন্ধ হচ্ছে এ ধরনের খবর প্রকাশ হওয়ায় আমি মর্মাহত হয়েছি, কষ্ট পেয়েছি। কেবিনেট ডিভিশন থেকে টিএ্যান্ডটি মন্ত্রণালয়ের কাছে ফেসবুক বন্ধ রাখার বিষয়ে একটি ব্যাখা চাওয়া হয়। এটি তাদের রুটিন ওয়ার্ক। তারা মতামত চেয়েছেন। আমরা তখনই মৌখিকভাবে কেবিনেট বিভাগকে জানিয়েছি, ফেসবুক বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে প্রথম দফায় যে চিঠিটি আসে সেটি আমার কাছে আসেনি। ওই চিঠি সচিব পর্যায়ে মীমাংসা হয়ে গেছে। দ্বিতীয় দফার চিঠিটি গত দুইদিন আগে আমার কাছে আসে। পরে আমরা টিএ্যান্ডটি মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের মতামত বিটিআরসিকে জানিয়েছি। আমরা বিটিআরসির কাছেও মতামত চেয়েছি। বিটিআরসির দেয়া মতামত মঙ্গলবার লিখিতভাবেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা জানিয়ে দিয়েছি ফেসবুক বন্ধ রাখা সম্ভব না। কারণ, ফেসবুক শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে না। ফেসবুক বয়স্করাও ব্যবহার করেন। তাছাড়া ফেসবুকের মাধ্যমে নানা রকম ব্যবসা বাণিজ্য চলছে। ই-কমার্স ফেসবুকের মাধ্যমেই হচ্ছে। এছাড়া দেশে যখন রাত অন্য দেশে তখন দিন। কাজেই ফেসবুক বন্ধ রাখা কোনভাবেই উচিত হবে না। চিঠিতে আমরা অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। তাদের ফেসবুকসহ ইন্টারনেটের ইতিবাচক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আগে থেকেই বলে আসছি। মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো চিঠিতে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ফেসবুক বন্ধের বিষয়টি সরকারের ডিজিটালাইজেশন পরিপন্থী হবে। সরকারের ভিশন ২০১৮ সালের মধ্যে সবার হাতে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া। আর ২০২১ সালের মধ্যে দেশ পুরোপুরি ডিজিটাল হবেÑ সেখানে ফেসবুকের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম কিভাবে বন্ধ করা যায়। ডিজিটাল দেশ গড়তে বাধা সৃষ্টি করে এমন কোন সিদ্ধান্ত সরকার নেবে না। ছোটবেলায় শুনেছি তিল থেকে তাল হয়। যেখানে তিলই নেই সেখানে তাল হলো কি করে? ফেসবুক বন্ধের বিষয়টি কোন আলোচনার পর্যায়ে আসেনি। তাহলে এটি নিউজ হলো কিভাবে। এ ধরনের নিউজ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদারসহ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×