ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

উদ্বোধনের পরই তালাবদ্ধ দেলদুয়ার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ৫ এপ্রিল ২০১৭

উদ্বোধনের পরই তালাবদ্ধ দেলদুয়ার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ দেলদুয়ার উপজেলার পাশেই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। টাঙ্গাইলের বিখ্যাত তাঁতের শাড়ির উৎপত্তি স্থল দেলদুয়ার। ঐতিহাসিক আতিয়া মসজিদসহ ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ দেলদুয়ার উপজেলা। প্রায় তিন লাখ লোকের বসবাস এখানে। কিন্তু স্বাস্থ্য সেবার চিত্র ভয়াবহ। তিন লাখ লোকের জন্য তিন ডাক্তার থাকলেও মাঝে মাঝে ডাক্তার শূন্য থাকে দেলদুয়ার উপজেলা হাসপাতাল। জানা যায়, ৩১ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উন্নীত করা হয়েছে। তিনতলা বিশিষ্ট নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ও পাঁচতলা বিশিষ্ট ডরমেটরীর নির্মাণ কাজ প্রায় তিন বছর আগে শেষ হয়। উদ্বোধনের অপেক্ষায় এতদিন পড়ে ছিল। গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় এমপি খন্দকার আবদুল বাতেন ৫০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন করেন। সামান্য কিছু যন্ত্রপাতি ও কিছু আসবাবপত্র আসলেও প্রায় তিন বছর ধরে সেগুলো এলোমেলো পড়ে আছে। ডাক্তার, নার্সসহ একজন স্টাফও নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে উদ্বোধনের পরের দিন থেকেই আবারও তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন। এদিকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা। এদিকে পুরনো ৩১ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের পদ রয়েছে ৯টি। এদের মধ্যে একজন ডেপুটেশনে, তিন জন বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে ও একজন মাতৃকালীন ছুটিতে রয়েছেন। বাকি ৪ জনের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। একজন ডেন্টাল সার্জন ছাড়া বাকি মেডিক্যাল অফিসার দুজন। তিন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তিন মেডিক্যাল অফিসারের পদ থাকলেও রয়েছে ২ জন। সেই ২ জন ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২ জন মোট ৪ মেডিক্যাল অফিসার পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিদিন একজন বা ২ মেডিক্যাল অফিসার রোগী দেখেন। কোন কোন দিন থাকে ডাক্তার শূন্য। কারণ অধিকাংশ মেডিক্যাল অফিসার ঢাকা থেকে সকাল ১০ থেকে ১১টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। পরদিন দুপুর একটার সময় চলে যান। সাত দিনের ডিউটি শেষ। এভাবে দেড় দিন করে মাসে চারবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন একজন মেডিক্যাল অফিসার। দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুর রহমান মিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির করুণ দুর্দশার কথা স্বীকার করে বলেন, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনটির নির্মাণ কাজ প্রায় তিন বছর আগে শেষ হলেও উদ্বোধন না হওয়ায় পড়ে ছিল। বাউফলে অচল এক্স-রে মেশিন নিজস্ব সংবাদদাতা বাউফল থেকে জানান, বাউফল ৫০ শষ্যা হাসপাতালের ৩শ’ এমএম ক্ষমতাসম্পন্ন এক্স-রে মেশিনটি গত দেড় মাস ধরে অচল অবস্থায় পরে আছে। ফলে এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ভুক্তভোগীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে কোরিয়ার তৈরি লিসটেম নামের ৩শ’ এমএম এই এক্স-রে মেশিনটি বাউফল হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়। এক্স-রে মেশিনটির অপারেটর মুকুল আহমেদ জানান, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট হয়ে আছে। ডিসপ্লে অন হচ্ছে না। বিষয়টি লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে ভুক্তভোগীরা অধিক মূল্যে বাহির থেকে এক্স-রে করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাছাড়া বাইরের ডায়াগনস্টিক স্টোরগুলোর এক্স-রে মেশিন হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনের সমকক্ষ নয়। এ ছাড়াও হাসপাতালের ৫০ হর্স ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সাইলেন্ট জেনারেট ৮ বছর ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। একটি সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানেও জেনারেটরটি সরবরাহ করে। এরপর থেকে সেটি আর চালু করা হয়নি। এ বিষয়ে বাউফল হাসপাতালের ইউএইচও ডাঃ মনজুরুল আলম বলেন, এ বিষয়গুলো একাধিবার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
×