ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

পঞ্চগড়ে টমেটো ক্ষেতে মহামারী

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৪ এপ্রিল ২০১৭

পঞ্চগড়ে টমেটো ক্ষেতে মহামারী

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ লেট ব্লাইট রোগে আক্রান্ত হয়ে মহামারী আকারে মরে যাচ্ছে শত শত একর জমির হাইব্রিড জাতের টমেটো। রোগ দমনে কীটনাশক ও বালাইনাশক ওষুধ ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না। এনজিওর ঋণ আর ধারদেনা করে টমেটো আবাদ করে পথে বসেছে অনেক কৃষক। কৃষি বিভাগ বলছে, অসময়ে বৃষ্টি আর মেঘাচ্ছন্ন আকাশে রাতে কুয়াশা ঝরায় বালাইনাশক ওষুধ সম্পূর্ণ কাজ না করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানের আবহাওয়া পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থার উত্তরণ হবে না। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গ্রীষ্মকালের শুরুতেও পঞ্চগড়ে কিছুটা শীতের আমেজ থাকায় এখানে কয়েক বছর ধরে শীতকালীন হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করছে কৃষকরা। এ সময়টাতে দেশের অন্য কোথাও টমেটো আবাদ না হওয়ায় এখানকার উৎপাদিত টমেটোর চাহিদা ও দাম দুটিই বেশি। পঞ্চগড়ে উৎপাদিত টমেটো দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। এ কারণে এই মৌসুমে এখানকার প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে হাইব্রিড জাতের টমেটো। কৃষকরা বেশি লাভের আশায় বোরো ধান, গমসহ অন্যান্য মৌসুমি আবাদ বাদ দিয়ে টমেটো আবাদে ঝুঁকছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, এবার পঞ্চগড় জেলায় তিন হাজার ১১৪ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ হয়েছে। সিংহভাগ টমেটো আবাদ হয়েছে সদর উপজেলায়। হাড়িভাসা, চাকলাহাট, কামাত কাজলদীঘি, হাফিজাবাদ, সদর ও অমরখানা ইউনিয়নে বেশি টমেটোর আবাদ হয়ে থাকে। ইতোমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে এখানকার টমেটো। সরব হতে শুরু করেছে টমেটোর আড়তগুলো। জেলার বাইরে থেকে আসা কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা জমি থেকে কাঁচা টমেটো কিনে রাখছে আড়তে। সেখানে তা পাকিয়ে প্যাকেটজাত করে নিয়ে যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে ফল তোলার আগ মুহূর্তে গাছ জ্বলে যেতে শুরু করেছে। শুরুতে গাছের পাতা জ্বলে যাচ্ছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে গোটা গাছ মরে ফল কালো রং ধরে ঝরে পড়ছে। অনেকের নতুন করে লাগানো চারা গাছও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকনাশক ব্যবহার করেও কোন কাজ হচ্ছে না। উল্টো খরচের পরিমাণ বাড়ছে। অনেক কৃষক এনজিও থেকে ঋণ এবং ধারদেনা করে সমুদয় অর্থ বিনিয়োগ করেছে টমেটো ক্ষেতে। শত শত একর জমির টমেটো ক্ষেত মরে তাদের এখন মাথায় হাত। কিভাবে তারা ঋণ আর মহাজনের টাকা শোধ করবেন এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় তারা।
×