ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মালদ্বীপের মডেল কন্যা রাউদার শেষ ঠিকানা হলো রাজশাহীতেই

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২ এপ্রিল ২০১৭

মালদ্বীপের মডেল কন্যা রাউদার শেষ ঠিকানা হলো রাজশাহীতেই

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীতে ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজে পড়তে এসে আত্মহননকারী মালদ্বীপের মডেল কন্যা রাউদা আতিফের শেষ ঠিকানা হলো রাজশাহীতেই। শনিবার দুপুরে পুলিশের সহযোগিতায় পরিবারের সদস্যরা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নগরীর হেতেমখাঁ কবরস্থানে রাউদার দাফন সম্পন্ন করেছে। এ সময় বাবা-মা, ভাইবোনসহ রাউদার পরিবারের ১১ সদস্য উপস্থিত ছিলেন বলে জানায় স্থানীয় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের অর্গানাইজার এনায়েত কবীর মিলন। তিনি বলেন, দুপুর ১২টার দিকে রাউদার লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমাগার থেকে তারা লাশ গ্রহণ করেন। পরে হেতেমখাঁ কবরস্থানের জামে মসজিদে বাদ জোহর জানাজা শেষে রাউদার দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত আইশা শান সাকির, রাউদার বাবা মোহাম্মাদ আতিফ, মা আইসাথ রাশেদা, ভাই হাসান আতিফ ও বোন নাছফা আতিফসহ পরিবারের ১১ সদস্য, রাউদার সহপাঠী এবং পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতে খায়ের আলম বলেন, শুক্রবার দুপুরে রাউদা আতিফের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। শনিবার সকালে তাদের লাশ নিয়ে মালদ্বীপের উদ্দেশে রওনা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকালে তার বাবা মোহাম্মাদ আতিফ জানান, তাদের পরিবারের সদস্যরা রাউদাকে রাজশাহীতে দাফন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে অনুরোধ জানানো হয়। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রাউদার লাশ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। রাউদার লাশ কবরস্থানে নেয়ার সময় তার মা আইসাথ রাশেদা জ্ঞান হারিয়ে পেলেন। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে কেন তারা লাশ নিজ দেশে নিয়ে গেলেন না, সে বিষয়ে তারা কিছুই উল্লেখ করেননি বলে জানান এসি ইফতে খায়ের আলম। ময়নাতদন্তে আত্মহত্যার আলামত ॥ রাউদা আতিফ (২০) আত্মহত্যা করেছেন বলে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শুক্রবার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে তার ময়নাতদন্ত হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎকসদের তিন সদস্যের একটি দল ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। দলটির প্রধান রামেক ফরেনসিক বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক মুনসুর রহমান। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার বাইরে কোন আলামত পাওয়া যায়নি। তবে ভিসেরা প্রতিবেদনের জন্য মরদেহ থেকে কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ভিসেরা প্রতিবেদন পেলেই রাউদার মৃত্যু নিয়ে চিকিৎসকরা পরিষ্কার ধারণা দিতে পারবেন। দু’একদিনের মধ্যেই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পুলিশকে দিয়ে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রী হোস্টেল থেকে রাউদার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানায়, সিলিংফ্যানের সঙ্গে কাপড় পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে রাউধা আত্মহত্যা করেছেন। আন্তর্জাতিক মডেল তারকা রাউদা ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। গত বছরের ২২ অক্টোবর ভারতের ভোগ সাময়িকী পত্রিকার প্রচ্ছদে অন্যান্য মডেল তারকাদের সঙ্গে নীল নয়না রাউদার ছবিও ছাপা হয়। রাউদার বাড়ি মালদ্বীপের মালে এলাকায়। চিকিৎসাশাস্ত্র পড়তে তিনি রাজশাহী এসেছিলেন।
×