ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরা থানা হাজত থেকে নিখোঁজ জনিকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২১ মার্চ ২০১৭

সাতক্ষীরা থানা হাজত থেকে নিখোঁজ জনিকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ আটক করে তিন দিন থানা হাজতে রাখার পর নিখোঁজ হোমিও চিকিৎসক সাতক্ষীরার মোখলেছুর রহমান জনিকে খুঁজে বের করে চার সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অগ্রবর্তী প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। নিখোঁজ জনির স্ত্রী ডাঃ জেসমিন নাহারের দায়ের করা রিট পিটিশন শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেয়। আগামী ৯ মে এ মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রাখার জন্য বলা হয়েছে। নিখোঁজ হোমিও চিকিৎসকের স্ত্রী ডাঃ জেসমিন নাহার রেশমার জারি করা রিট পিটিশনে (২৮৩৩/১৭) উল্লেখ করা হয়, অসুস্থ বাবার জন্য ওষুধ কিনতে যেয়ে শহরের লাবনী সিনেমা হল মোড় এলাকা থেকে সদর থানার উপ-পরিদর্শক হিমেল তার স্বামী মোখলেছুর রহমান জনিকে থানায় ধরে নিয়ে যায় গত বছর ৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে। ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট তিনি, তার শ্বশুর ও স্বজনদের নিয়ে থানা হাজতে তাকে খাবার দিয়েছেন, তার সঙ্গে কথা বলেছেন। তৎকালীন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক শেখ ও উপ-পরিদর্শক হিমেলের সঙ্গে কথা বললে জনির জঙ্গী সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানানো হয়। কিন্তু স্বামীর মুক্তির বিনিময়ে তার কাছে দাবি করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা। এরপর ৮ আগস্ট থানায় গেলে জনিকে আর পাওয়া যায়নি। পুলিশ জনির অবস্থান সম্পর্কে জানাতে পারেনি। বিষয়টি সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, ক্ষমতাসীন দলের নেতা, জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছেন। ২৪ আগস্ট জানানো হয় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারকে। ২৬ ডিসেম্বর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে পুলিশ তা নেয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি ৩ জানুয়ারি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। স্বামীর খোঁজে সাত মাস ধরে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। একপর্যায়ে তার সন্ধান না করতে পেরে গত ২ মার্চ হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মহাপুলিশ পরিদর্শক, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (খুলনা), সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপ-পরিদর্শক হিমেল ও সাতক্ষীরা কারাগারের জেলারকে বিবাদী করা হয়। রিট দায়েরের পর গত ৬ মার্চ শুনানি শেষে আদালত রুল জারির পাশাপাশি নিখোঁজের বিষয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের ব্যাখ্যা চেয়ে ১৯ মার্চ দিন ধার্য করে। ১৯ মার্চ রবিবার আদালতে উপস্থাপন করা পুলিশ সুপারের ব্যাখ্যায় বলা হয়, নিখোঁজ মোখলেছুর রহমান নিষিদ্ধ সংগঠন ‘আল্লাহ’র দল’ এর সঙ্গে যুক্ত এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মোঃ মতিয়ার রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
×