ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাবমেরিন যুগে দেশ

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ১৫ মার্চ ২০১৭

সাবমেরিন যুগে দেশ

বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যে থেমে নেই, বরং তাতে নতুন নতুন মাত্রা যুক্ত হয়ে চলেছে তার প্রমাণ সাবমেরিন যুগে প্রবেশ। রবিবার দেশে প্রথমবারের মতো দুটি সাবমেরিনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ওই ডুবোজাহাজ দুটির নামকরণও তাৎপর্যপূর্ণÑ নবযাত্রা ও জয়যাত্রা। সত্যিকারার্থেই দেশের সামরিক শক্তি সঞ্চয় ও প্রসারের ক্ষেত্রে নবযাত্রা সূচিত হলো। আরেক বিচারে এটি জয়যাত্রাও। শত বিঘœ ও প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে দেশের সমর ক্ষমতার বিস্তার এবং সংহতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনায়োকচিত বক্তব্য ইতিহাসে বিশেষ গুরুত্ব পাবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে একটি শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে কখনও কোন যুদ্ধে লিপ্ত হতে চাই না। কিন্তু কেউ যদি আক্রমণ করে তাহলে আমরা তার সমুচিত জবাব দিতে পারি সে প্রস্তুতি আমাদের থাকবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা যা যা করণীয় তা করে যাচ্ছি। আমরা চাই সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে যাতে জনগণের সার্বিক উন্নতি করতে পারি। তবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের যা যা প্রয়োজনীয় তা আমরা সংগ্রহ করব। কারণ, এগুলো হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক।’ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ডুবোজাহাজ ব্যবহারের ব্যাপকতা বিস্তৃতভাবে লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে অনেক বৃহৎ আকারের নৌবাহিনীতে এর অনেক সংগ্রহ রয়েছে। শত্রুবাহিনীর জাহাজ কিংবা ডুবোজাহাজ আক্রমণ মোকাবেলায় এর ভূমিকা ব্যাপক। এছাড়াও বিমানবাহী জাহাজ বহরকে রক্ষা করা, অবরোধ দূরীকরণ, প্রচলিত স্থল আক্রমণ ও বিশেষ বাহিনীকে গুপ্তভাবে রক্ষণাবেক্ষণে ডুবোজাহাজর কার্যকারিতা অপরিসীম। সাধারণভাবেও ডুবোজাহাজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তার মধ্যে সমুদ্র বিজ্ঞান, উদ্ধার তৎপরতা, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান কার্যক্রম, পরিদর্শন এবং রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধার জন্যও ডুবোজাহাজ ব্যবহার হয়। এছাড়াও ডুবোজাহাজকে ব্যবহারের লক্ষ্যে বিশেষায়িত কার্যক্রম হিসেবে অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতাসহ সাগরতলে অবস্থিত কেবল মেরামতেও সম্পৃক্ত করা হয়। পানির অভ্যন্তরে চলাচলযোগ্য যানবাহন হিসেবে ডুবোজাহাজ আবিষ্কার হওয়ার অল্প কিছুদিন পরেই বিশেষজ্ঞরা এর সামরিক উপযোগিতা সম্বন্ধে অবগত হন। ডুবোজাহাজের কৌশলগত সুবিধাদি সম্পর্কে ইংল্যান্ডের চেস্টার এলাকার বিশপ জন উইলিকন্স ১৬৪৮ সালে ম্যাথমেটিক্যাল ম্যাজিক গ্রন্থে তুলে ধরেন- ব্যক্তিগতভাবে একজন ব্যক্তি বিশ্বের যে কোন এলাকার উপকূলে অদৃশ্যমান অবস্থায় গমন করতে সক্ষম। সেজন্য ডুবোজাহাজ ভ্রমণকালে তাকে নৌপথ আবিষ্কার কিংবা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজন পড়বে না। নিরাপদ যানবাহন হিসেবে আকস্মিক ও অনিশ্চিত স্রোত এবং প্রবল ঝড়ের মোকাবেলা করতে হবে না। বিশ্বের অল্প ক’টি দেশের নৌবহরে যুক্ত রয়েছে সাবমেরিন। এ বিবেচনায় নিঃসন্দেহে বলা যায় জোড়া সাবমেরিন সংগ্রহের মাধ্যমে বাংলাদেশের সম্মান ও মর্যাদা বহির্বিশ্বে আরও বৃদ্ধি পেল।
×