ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যয় হবে ৩শ’ ৪০ কোটি

রুয়েটে তৈরি হবে দুটি দশতলা আবাসিক হল

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৪ মার্চ ২০১৭

রুয়েটে তৈরি হবে দুটি দশতলা আবাসিক হল

আনোয়ার রোজেন ॥ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ভৌত অবকাঠামো সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। বিদ্যমান আবাসন সুবিধার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় হাজার ছাত্রছাত্রীর জন্য ১০ তলাবিশিষ্ট পৃথক দুটি নতুন আবাসিক হল নির্মাণ করা হচ্ছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে তিন হাজার ছাত্রছাত্রীর আবাসন সঙ্কট অনেকটাই নিরসন হবে। এছাড়া নির্বিঘেœ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১০ তলাবিশিষ্ট আরও তিনটি নতুন একাডেমিক ভবন করা হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রায় ৩৪০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের এ প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আজকের সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হতে পারে। অনুমোদন পেলে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সোমবার পরিকল্পনা কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামোর ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে। দেশের জন্য কারিগরি বিশেষজ্ঞদের ক্রমাগত চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য উচ্চতর গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ সম্প্রসারণ করা প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য। এছাড়া শিক্ষা এবং গবেষণার মান এমনভাবে উন্নত ও টেকসই করা যাতে রুয়েট কারিগরি জ্ঞান চর্চার উত্তম কেন্দ্রে বা মডেলে পরিণত হয়। এ লক্ষ্যে সরকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধা, একাডেমিক সুবিধা ও গবেষণাগারের মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে চায়। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছেÑ ১০ তলাবিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, ১০ তলাবিশিষ্ট একটি ছাত্র হল ও একটি ছাত্রী হল নির্মাণ। এছাড়া বিদ্যামান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের উর্ধমুখী (৩য় তলা থেকে ৫ম তলা পর্যন্ত) সম্প্রসারণ করা হবে। এর ফলে নতুন করে ১ হাজার ৩০ জন ছাত্র ও ৫০০ জন ছাত্রী আবাসন সুবিধা পাবে। ১০ তলাবিশিষ্ট তিন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে। এগুলো হচ্ছে- যন্ত্রকৌশল অনুষদ ভবন, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদ ভবন এবং পুরকৌশল অনুষদ ভবন। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ভাইস চ্যান্সেলর বাংলো কাম অফিস নির্মাণ, ইনস্টিটিউট ভবন নির্মাণ এবং প্রভাষক, সহযোগী অধ্যাপক, কর্মকর্তা, স্টাফদের জন্য একটি করে ১০ তলা বিশিষ্ট চারটি কোয়ার্টার নির্মাণ করা হবে। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রকল্পের সম্পূর্ণ ব্যয় মেটানো হবে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ চূড়ান্ত সুপারিশে বলেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে দেশে কারিগরি ও প্রকৌশল শিক্ষার উন্নত ও উচ্চতর সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো সক্ষমতা বাড়াতে নতুন বিনিয়োগ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৩ পাশ হওয়ার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি একই বছরের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করে। মূলত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনলজিকে রুয়েটে রূপান্তর করা হয়। সূত্র জানায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি বিভাগ হতে বিভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩ হাজার ৬৫০ জন, শিক্ষক ২০৭ জন, কর্মকর্তা ১২৬ জন ও কর্মচারী ১৯৫ জন। বিদ্যমান ছয়টি আবাসিক হলে দেড় হাজারেরও বেশি ছাত্র এবং আড়াই শ’ ছাত্রীর জন্য সিট বরাদ্দ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত অরগানোগ্রাম অনুসারে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে বিভাগের সংখ্যা হবে ২০টি, শিক্ষার্থীর সম্ভাব্য সংখ্যা হবে ৮ হাজার ৭৩০ জন, শিক্ষক ৫৮৮ জন, কর্মকর্তা ২৬১ জন এবং কর্মচারী ৭৪২ জন। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরবর্তী বছরগুলোতে অপর্যাপ্ত তহবিল ও অন্যান্য সীমাবদ্ধতার কারণে চাহিদা অনুযায়ী একাডেমিক ও ভৌত সুবিধা পূরণ করা যায়নি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি ও ক্লাসরুম এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ও অপর্যাপ্ত। সূত্র জানায়, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর প্রকল্পটির অনুমোদন বিবেচনার জন্য পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে পিইসি সভার সুপারিশের আলোকে পুনর্গঠিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বদ্যিালয়ের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের সংস্থান রাখা হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কিছু অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করাসহ নতুন অবকাঠামো সুবিধা তৈরি করা হবে।
×