ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিতর্কিত ব্যক্তিদের রাখা যাবে না ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৬ মার্চ ২০১৭

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিতর্কিত ব্যক্তিদের রাখা যাবে না ॥  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্বাধীনতাবিরোধী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের যাতে রাখা না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, আসন্ন স্বাধীনতা দিবসে পতাকার যত্রতত্র ব্যবহার রোধেও নির্দেশনা দেয়া হবে। এবার স্বাধীনতা দিবসে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান। তিনি বলেন, জাতীয় পতাকার যত্রতত্র ও দৃষ্টিকটূ ব্যবহার রোধ করতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি দিক নির্দেশনা দেবে। সেখানে জাতীয় পতাকার আকার, রং এবং কখন কোথায় কীভাবে টানাতে হয়- সেসব বিষয়ের উল্লেখ থাকবে। এছাড়া সারাদেশে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্বাধীনতাবিরোধী ও বিতর্কিত কাউকে অতিথি করা যাবে না বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত শোভাযাত্রা, কুচকাওয়াজ, আলোচনা সভা ও মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী, যিনি ওই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় সে সময় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। জিয়ানগরের ইউএনওকে বদলি ও ইন্দুরকানী থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়। সরকারের নির্দেশনা কার্যকর করতে স্বাধীনতাবিরোধীদের কোন তালিকা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানেন তাদের এলাকায় কারা বিতর্কিত, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধী। এবার স্বাধীনতা দিবসে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা থেকে সাভার পর্যন্ত রাস্তায় কোন তোরণ নির্মাণ করা যাবে না। এছাড়া কূটনীতিক ও বিদেশী অতিথিদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোন অবস্থাতেই বিতর্কিত ও স্বাধীনতাবিরোধী কোন ব্যক্তিকে অনুষ্ঠানে গেস্ট করা যাবে না। কোন অনুষ্ঠানেই অতিথি হিসেবে তারা যাবেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি আমাদের জাতীয় পতাকা যত্রতত্র ব্যবহার করা হয়। অনেক সময় পতাকার মর্যাদা ক্ষুণœ হয়। সেজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা দিয়ে দেবে। পতাকার সাইজ কি হবে, কখন থেকে কখন পর্যন্ত পতাকা উড়ানো যাবে, কিভাবে পতাকা উড়বে- এ সবকিছু নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সারাদেশে প্রচার করা হবে। যারা এটা মানবে না সেই বিষয়টি নিরাপত্তা বাহিনী তত্ত্বাবধান করবে। তিনদিন ছুটি নিয়ে কোন নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, না এখন পর্যন্ত কোন থ্রেট নেই। গোয়েন্দারা অত্যন্ত তৎপর রয়েছে। আমাদের দেশের মানুষ সুন্দরভাবে দিনটি উদযাপন করতে পারবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাভার স্মৃতিসৌধ ও ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিশেষ নজর থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকা থেকে স্মৃতিসৌধের রাস্তাটিতে কেউ তোরণ তৈরি করতে পারবে না। আমরা আগেও দেইনি, এখনও সেটা বিধি নিষেধের মধ্যে রয়ে গেছে। স্মৃতিসৌধ এলাকায় যে ধরনের নিরাপত্তা আমরা প্রতিবার দিয়ে থাকি, এবার ঠিক সেই রকমই থাকবে। সিকিউরিটি গেট, সিটিটিভি, আর্চওয়ে, কন্ট্রোলরুম গতবারের মতো এবারও স্থাপন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নৌপথে নৌ পুলিশ টহলে থাকবে। বিদেশী কূটনীতিকদের নিরাপত্তা প্রদানে একটা স্টাবলিস্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা আমরা দাঁড় করিয়েছি। তাদের এলাকা থেকে মেট্রোপলিটন পুলিশের স্কটের মাধ্যমে নিয়ে আসা হবে। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তারা একইভাবে স্ব স্ব এলাকায় চলে যাবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব কামালউদ্দিন আহমেদ, বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়াসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×