ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কঠোর আইনের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে ॥ এরশাদ

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১ মার্চ ২০১৭

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে  কঠোর আইনের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে ॥ এরশাদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুই চালকের সাজার রায়ের পর সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটে জনদুর্ভোগের কথা তুলে ধরে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেছেন, পরিবহন চালকদের অবহেলার কারণে প্রতিদিন অগণিত মানুষ নিহত হচ্ছে। এর কোন প্রতিকার হচ্ছে না। অথচ সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা হচ্ছে। সরকারের দায়িত্বশীলরাও বারবার এ নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষের মনে দিন দিন হতাশা বাড়ছে। আমরা দুর্ঘটনার দিক থেকে সামনের সারিতে যাচ্ছি। তিনি বলেন, কথায় কথায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘট করে তারা জনগণকে জিম্মি করে ফেলে। সরকারকে তা দমন করতে হবে। তাদের আন্দোলনের হুমকিতে ভীত হলে চলবে না। কঠোর আইনের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে দলীয় এক অনুষ্ঠানে পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদের এসব কথা বলেন। মানিকগঞ্জে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় এক বাস চালকের যাবজ্জীবন সাজার রায় হওয়ায় রবিবার থেকে খুলনা বিভাগের দশ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট চলছিল। সোমবার সন্ধ্যায় তা প্রত্যাহারের ঘোষণাও দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে সাভারে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে সোমবার ঢাকার একটি আদালত ট্রাক চালকের ফাঁসির রায় দিলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন মঙ্গলবার সকাল থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির কর্মসূচী শুরু করে। তাদের এই কর্মসূচীর কারণে সারাদেশে দূরপাল্লার যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গাড়ি না পেয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। সাবেক সেনা শাসক এরশাদ বলেন, আমি ক্ষমতায় থাকার সময় পরিবহন ড্রাইভারের অবহেলার কারণে কোন মানুষের মৃত্যু হলে মৃত্যুদ-ের বিধান করেছিলাম। সে আইন রাখতে পারেনি। বর্তমান আইনে রয়েছে যাবজ্জীবন কারাদ-। তাও বহাল রাখা যাবে কি না সন্দেহ। আইন বাস্তবায়ন করতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনার হার অনেক কমবে বলে সাবেক এই রাষ্ট্রপতির ধারণা। অনুষ্ঠানে খুলনার ব্যবসায়ী সৈয়দ খায়রুল ইসলামের নেতৃত্বে বিভিন্ন দল থেকে আসা দুই শতাধিক নেতাকর্মী জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। তাদের অভিনন্দন জানিয়ে এরশাদ বলেন, আমার মনে অনিশ্চয়তা ছিল। এখন আলো দেখতে পাচ্ছি। যেভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগদান চলছে, তাতে আমি বিশ্বাস করি, আমরাই আগামীতে সরকার গঠন করতে পারব। দল সংসদে বিরোধী দলে থাকার পরও প্রধানমন্ত্রীর দূতের দায়িত্ব পালন করে আসা এরশাদ বলেন, দেশবাসী শান্তিতে নেই। এদেশকে আবার উন্নয়নের জোয়ারে ভাসাতে হলে, শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে জাতীয় পার্টিকে অবশ্যই ক্ষমতায় যেতে হবে। নেতাকর্মীদের তিনি বলেন, মনে রেখ, তোমরাই জাতীয় পার্টির প্রাণ। মানুষের কাছে তোমরাই জাতীয় পার্টিকে নিয়ে যাবে। মানুষ শান্তি চায়, নিরাপত্তা চায়, পরিবর্তন চায়। এদেশকে আবার উন্নয়নের জোয়ারে ভাসাতে হলে, শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে জাতীয় পার্টিকে অবশ্যই আবার ক্ষমতায় যেতে হবে। প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়ের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে দলের কো চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, এসএম ফয়সল চিশতী, খালেদ আক্তার ও জাহিদ বিপ্লব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, মানুষ শান্তি চায়, নিরাপত্তা চায়, পরিবর্তন চায়। দেশবাসী শান্তিতে নেই। তিনি যোগদানকারীদের উদ্দেশে বলেন, খুলনা এক সময় অবহেলার একটা শহর ছিল। সেটাকে সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তর, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়, মংলা পোর্ট, সাতক্ষীরা-খুলনা রোডসহ উন্নয়ন বলতে যা বুঝায় তা আমার শাসনামলেই হয়েছে। তিনি বলেন, আমার মনে অনিশ্চয়তা ছিল, এখন আলো দেখতে পারছি। যেভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগদান চলছে, তাতে আমি বিশ^াস করি আমরাই আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনা করব ইনশাল্লাহ।
×