ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে মতিয়া চৌধুরী

বিএনপির দানবীয় সন্ত্রাস প্রতিহত করে শান্তির দেশ গড়ছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিএনপির দানবীয় সন্ত্রাস প্রতিহত করে শান্তির দেশ গড়ছেন প্রধানমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি সাংবিধানিক গণতন্ত্র চায় না। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্য দেশকে অস্থিতিশীল করা, গণতন্ত্রকে ব্যাহত করা। একটি দানবীয় লক্ষ্য নিয়ে বিএনপি দিনের পর দিন সারাদেশে অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছে, শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতেও দ্বিধা করেনি। এসব দানবীয় ও বিভীষিকাময় কর্মকা- প্রতিহত করে শেখ হাসিনা শান্তি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতি, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র পাশাপাশি হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলেছে। দেশবাসীসহ আমরা একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রথমে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া এবং পরে প্যানেল সদস্য এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরুর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনায় আরও অংশ নেন, সরকারী দলের বিএম মোজাম্মেল হক, মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া, সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, রেবেকা মমিন, ছলিম উদ্দিন তরফদার, জাসদের নাজমুল হক প্রধান প্রমুখ। কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। নির্বাচনের পরেও খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছিলেন সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না। এ জন্য সন্ত্রাস-নৈরাজ্য, জ্বালাও-পোড়াও এমনকি মানুষকে পুড়িয়ে মারতেও দ্বিধা করেননি। একটি দানবীয় লক্ষ্য নিয়ে বিএনপি দিনের পর দিন সারাদেশে তা-ব চালিয়েছে। এজন্য বিএনপি নেত্রী আগুন সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। এসব দানবীয় ও বিভীষিকাময় কর্মকা- প্রতিহত করে শেখ হাসিনা শান্তি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কথার ফুলঝুড়িতে নয়, কাজে বিশ্বাস করে। শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের প্রত্যাশায় জনগণ শেখ হাসিনার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। বাংলাদেশ শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। খালেদা জিয়া ১০ বার জন্ম নিলেও একটি হাতিরঝিল করতে পারবেন না। কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সমালোচনা করে বলেন, বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ এনে অর্থায়ন স্থগিত করে। এর পেছনে কলকাঠি নাড়েন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শেখ হাসিনা অবিচল থেকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছেন। আদালতে হেরে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পদ হারালেও পাঁচটি বছর কোন ভাড়া না দিয়ে ওই ব্যাংকের বাড়ি ব্যবহার করেছেন ড. ইউনূস। ভাষণের জন্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র পাশাপাশি হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলেছে। দেশবাসীসহ আমরা একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বসভায় একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবেই। জাসদের নাজমুল হক প্রধান বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়ন-সফলতা দিয়ে দেশের চেহারাই যে পাল্টে দিয়েছে। কিন্তু দুঃখ লাগে সাঁওতালদের ওপর যখন হামলা হয়, সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হয়। বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ করা হলেও আদর্শিক বিভ্রান্তির কারণে পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকতা ঢুকানো হচ্ছে কার স্বার্থে? এসব ষড়যন্ত্রের কাছে মাথানত করা হবে আত্মঘাতী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখনও জামায়াতের সঙ্গ ছাড়েনি। তাই বামপন্থীসহ সকল মুক্তিযুদ্ধ পক্ষের শক্তিকে সবকিছু ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনসহ সবক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক ও তালেবানী শক্তিকে পরাজিত করতেই হবে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক জিয়াউর রহমানকে ‘খুনী’ আখ্যায়িত করে বলেন, এই খুনী জিয়াই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে ধ্বংস করে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ঘটিয়ে জাতিকে বিভক্ত করেছিলেন। আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট আন্দোলনের নামে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যত ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু দেশের জনগণই তাদের রুখে দিয়েছে। মাদকসেবী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আসছে শিক্ষামন্ত্রী ॥ মাদক সেবনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে ‘একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা জারি’ মন্ত্রণালয়ের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বৃহস্পতিবার দশম জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নোত্তরে তিনি এ তথ্য জানান। শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন সকল সরকারী-বেসরকারী স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে মাদক ও তামাকের অপব্যবহার রোধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। বিগত ২০১৫ সালের ১৮ নবেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর হতে প্রতিষ্ঠানসমূহকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকাসক্ত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মনিটরিং করার জন্য বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা আছে। প্রাথমিকে ৪৫ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য ॥ সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম লায়লা আরজুমান বানুর প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বর্তমানে সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ ১৭ হাজার ৬১৫টি এবং সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদ ২৭ হাজার ৩৩৮টি। তিনি জানান, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ তিন ধাপে সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে মোট ৩৫ হাজার ৪৩৭ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিকের ৩ হাজার ৪৪০টি পদে শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
×