ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

এবার বইমেলা থাকবে কঠোর নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা

প্রকাশিত: ০৭:৪৫, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭

এবার বইমেলা থাকবে কঠোর নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লেখকদের ওপর হামলাসহ বিগত কয়েক বছরের নানা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মেলার নিরাপত্তায় ৩ হাজার পুলিশের সঙ্গে থাকবে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সদস্য। থাকবে সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা সংস্থার দুই হাজার সদস্য। মেলায় আগত বিদেশী দর্শনার্থীর জন্য নিরাপত্তাকর্মী দেয়া হবে। মেলা প্রাঙ্গণজুড়ে থাকবে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। কড়া তল্লাশির মধ্য দিয়ে মেলায় প্রবেশ করতে হবে যে কোন ব্যক্তিকে। বৃহস্পতিবার গ্রন্থমেলা পরিচালনা কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, একুশে বইমেলায় ডিএমপির পক্ষ থেকে পাঁচটি ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। এই টাওয়ার থেকে মেলা পর্যবেক্ষণে থাকবে বাড়তি আলোর ব্যবস্থা। মেলা ঘিরে থাকবে নাইট ভিশন প্রযুক্তির ২৫০ সিসি ক্যামেরা। দোয়েল চত্বর থেকে শুরু করে শামসুন্নাহার হল হয়ে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত রাস্তায় এসব সিসি ক্যামেরা ইতোমধ্যেই স্থাপিত হয়েছে। বাংলা একাডেমি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও শাহবাগ থানার তিনটি কন্ট্রোল রুম থেকে ক্যামেরা মনিটর করার জন্য থাকছে ১৭ ইউনিট। ২২ ইঞ্চি মনিটরে থাকছে ১৬ ভিউ। এছাড়া ডিএমপির কন্ট্রোল রুম ২৪ ঘণ্টা মেলা পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখা হবে। মেলায় দর্শনার্থীর প্রবেশপথে থাকবে ২২ আর্চওয়ে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, পহেলা ফাল্গুন, বিশ^ ভালোবাসা দিবসসহ ছুটির দিনগুলোতে যোগ হবে আরও দুটি বিশেষ আর্চওয়ে। এছাড়াও মেলায় আগত প্রত্যেক বিদেশী অতিথি চাইলে তাদের সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মী দেয়া হবে। বৈঠক সূত্র মতে, মেলায় অংশ নেয়া প্রতিটি প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মীদের বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে। বিক্রয়কর্মীদের এ আইডি কার্ড পরিধান বাধ্যতামূলক। পুলিশের বিশেষ শাখা এসবি থেকে প্রকাশনা সংস্থাগুলোর প্রতিটি বিক্রয়কর্মীর তথ্য সংগ্রহ করা হবে। প্রকাশনা সংস্থাগুলোর বিক্রয়কর্মী পরিবর্তন হলে তা সঙ্গে সঙ্গে মেলা পরিচালনা কমিটিকে জানাতে হবে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মেলাকে সুশৃঙ্খল এবং নিরাপদ রাখতে যা যা করণীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মিলে তাই করা হবে। মেলায় প্রত্যেককে নিরাপত্তা তল্লাশি পেরিয়ে ঢুকতে হবে। এমনকি আমাকেও এই তল্লাশির ভেতর দিয়ে মেলায় প্রবেশ করতে হবে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই প্রথমবারের মতো বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে মোড়ক উন্মোচনের আনুষ্ঠানিকতা বা অন্য আয়োজন থাকবে না। সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, মেলার মূল মঞ্চটি নজরুল মঞ্চের ঠিক পাশে। সেখানে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনসহ সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবে। তাই নজরুল মঞ্চের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একটি অংশে হবে বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের আনুষ্ঠানিকতা। মেলায় আগতদের জন্য থাকছে বিশেষ মেডিক্যাল টিম। বয়োবৃদ্ধদের জন্য থাকছে হুইল চেয়ার। বাংলা একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি সচিব আকত্ারী মমতাজ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য রামেন্দু মজুমদার, সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ এবং জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম।
×