ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াকাটায় ট্যুরিস্ট বোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ২২ জানুয়ারি ২০১৭

কুয়াকাটায় ট্যুরিস্ট বোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২১ জানুয়ারি ॥ কুয়াকাটায় শনিবার সকাল থেকে ট্যুরিস্ট বোটসহ স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ফলে কুয়াকাটা সৈকত থেকে ফাতড়ার বনাঞ্চলসহ বিভিন্ন রুটে নৌপথে পর্যটকদের আনন্দঘন ভ্রমণ করার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেল। একই কারণে একদিকে পর্যটক-দর্শনার্থী পড়েছে বিপাকে, অপরদিকে ২২টি বোটের মালিকদের সংগঠন ট্যুরিস্ট বোট এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এবং ১১টি স্পিডবোটের মালিক চালকসহ এর সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে বোট চলাচল থেকে বনবিভাগের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়। তবে পর্যটকের নিরাপত্তায় এমন উদ্যোগ নেয়ার কথা জানালেন স্থানীয় প্রশাসন। ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির নেতা জনি আলমগীর জানান, কুয়াকাটায় আসা পর্যটকের বিনোদনের জন্য তারা ফাইবার বোটের মাধ্যমে এক যুগেরও বেশি সময়কাল ফাতড়ার বনাঞ্চলসহ বিভিন্ন মনোরম স্পটে নৌ-পথে যাওয়া-আসার সুযোগ করে দেন। পর্যটকের সহনশীল ভাড়া নির্ধারণ করে দীর্ঘকাল এই ব্যবসা করে অন্তত অর্ধশত পরিবারের জীবন-জীবিকার সুযোগ করে দিয়েছেন। অপরদিকে বিনোদন দেয়ায় কুয়াকাটা ব্যাপকভাবে সমাদ্ধৃত করেছেন। এক কথায় পর্যটন শিল্পের সম্প্রসারে তারা সংগঠিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য তারা ফাতড়ার বনাঞ্চল এলাকায় একটি বোটে ট্রিপ নিয়ে গেলে বনবিভাগকে বোট প্রতি এক শ’ টাকা এবং ট্যুরিস্ট প্রতি প্রত্যেকবারে ১১ টাকা পঞ্চাশ পয়সা রাজস্ব দিয়ে আসছেন। আলমগীর জানান, শুক্রবার এক রশিদে তারা দুই হাজার তিন শ’ টাকার রাজস্ব দিয়েছেন। প্রত্যেকটি বোটে আয়তন ও ধারণক্ষমতা অনুসারে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ যাত্রী করে আসছিলেন। এমনকি গত ১৫ জানুয়ারি এই বোট রিজার্ভ করে মেগাবিচ কার্নিভাল কুয়াকাটা ২০১৭ এর ভিআইপি দর্শনার্থীরা ফাতড়ার বনাঞ্চল ঘুরে আসেন। বিচ সংলগ্ন সাগরে একটু বিনোদনের জন্য স্পিডবোটে ভ্রমণও শনিবার থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। প্রত্যেক যাত্রীকে নিরাপদে ভ্রমণের জন্য এসব নৌযানে লাইফ জ্যাকেট ও প্রয়োজনীয় বয়া রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসপি মীর ফসিউর রহমান শনিবার সকাল থেকে কুয়াকাটা সৈকত সংলগ্ন সাগর থেকে নৌপথে পর্যটকদের ভ্রমণে ব্যবহৃত সকল বোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এমনকি বোট সরিয়ে নেয়ার জন্য হুলিয়া জারি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বোট মালিকসহ চালকরা প্রচ- ক্ষুব্ধ মনোভাব পোষণ করে বোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একই মন্তব্য এখানে আগত পর্যটক। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসপি মীর ফসিউর রহমান জানান, এসব বোটে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এদের সাগরে ভ্রমণের মতো ফিটনেস নেই। যে কোন সময় পর্যটকবাহী নৌযান ডুবে ভয়াবহ দুর্ঘটনা এড়াতে এসব যানে নৌ-বিহার বন্ধ করা হয়েছে। পর্যটকের স্বার্থেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি কলাপাড়ার ইউএনও এবিএম সাদিকুর রহমান জানান, এসব নৌযানে সাগরে ভ্রমণ পর্যটকের জন্য অনিরাপদ। এছাড়া সৈকত এরিয়ায় পর্যটকের গোসল করার স্পটে বোট চলাচলে বিপদের শঙ্কাই বেশি। তাই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
×