ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নাসিরনগরে তাণ্ডব

ধরা পড়ছে হোতারা, চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলছে

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১১ জানুয়ারি ২০১৭

ধরা পড়ছে হোতারা, চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলছে

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ নাসিরনগরে হিন্দু বাড়ি ও মন্দিরে ভাংচুর ঘটনায় মাস্টারমাইন্ডদের গ্রেফতার চলছে। পুলিশ বলছে, ঘটনার হোতারা একের পর এক ধরা পড়ছে। এখন আর আতঙ্ক নেই। গত কয়েকদিনে তিনজন ধরা পড়েছে। আদালতের আদেশে তাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ঘটনার আদ্যপান্ত জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। এসব খতিয়ে দেখছে। তবে তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। প্রধান হোতা হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিকে ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল আহাদ ও চাপরতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরুজ আলীকে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার) গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত এ তিনজনেরই রিমান্ড চলছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনায় আহাদকে শোন এ্যারেস্ট দেখানে হয়েছে। মন্দির ও বাড়িঘর ভাংচুরের পর পাঁচ দফায় হিন্দু বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। একের পর এক হিন্দু বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনায় দেশজুড়ে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মাধ্যে মারাত্মক আতঙ্ক দেখা দেয়ায় সরকার, প্রশাসন ও পুলিশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। পরিস্থিত সামাল দিতে ঢাকা থেকে পুলিশের একটি বিশেষ দল বেশ কয়েকদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে কাজ করে। সূত্র বলছে, আগুন সন্ত্রাসীদের তালিকাও পুলিশের কাছে রয়েছে। ৭-৮ জনের একটি গ্রুপ পরিকল্পনাকারী। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত। আহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সবকিছু খোলাসা হবে। কোর্ট ইন্সপেক্টর জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলামের বিচারিক আদালতে আহাদকে উপস্থিত করে আগুন দেয়ার ঘটনায় পাঁচ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। হিন্দু বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা এবং ভাংচুরের ঘটনায় আঁখির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। তাকে রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে। ইউপি নির্বাচন ও নির্বাচনপরবর্তী সব তথ্যই জানতে চাওয়া হচ্ছে তার কাছে। রবিবার আসামি আঁখিকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। ৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকার ভাটারা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তা-বের দিন যেসব লোক এসেছিল তাদের ট্রাকের ভাড়া পরিশোধ করে দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি। তাকে নাসিরনগর বিষয় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্যই পাওয়া গেছে। এসব তথ্য এখন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অন্যদিকে চাপরতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি (জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত) সুরুজ আলীর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলামের বিচারিক আদালতে সাত দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত শুনানি শেষে তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
×