ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মৌলভীবাজারে ভূমিকম্পে জমি ফেটে বেরিয়ে এসেছে পানি, বালি

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৫ জানুয়ারি ২০১৭

মৌলভীবাজারে ভূমিকম্পে জমি ফেটে বেরিয়ে এসেছে পানি, বালি

বিডিনিউজ ॥ ত্রিপুরার ভূমিকম্পে মৌলভীবাজারে শতাধিক ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে, ভেঙ্গে গেছে অসংখ্য মাটির দেয়াল ও সীমানা প্রাচীর; বিভিন্ন জায়গায় জমি ফেটে বেরিয়ে এসেছে পানি ও বালি-কাদা। মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৯ মিনিটে ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ১৭০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব এবং আগরতলা থেকে ৭৬ কিলোমিটার পূর্বে। উপকেন্দ্র ছিল ত্রিপুরার আম্বাসা এলাকায়, ভূ-পৃষ্ঠের ৩৬ কিলোমিটার গভীরে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। ভূমিকম্পের পরপরই শহরের কুদরত উল্লাহ সড়কের সৈয়দ আকবর আলী টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ারের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে আগুন ধরার খবর মেলে। তাৎক্ষণিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। শ্রীমঙ্গলে পাওয়ার গ্রিডের জাম্পার আলগা হয়ে গেলে কয়েক ঘণ্টার জন্য শতাধিক গ্রামের অধিবাসীরা বিদ্যুতবিচ্ছিন্ন থাকেন। জেলা পরিষদের ৫০০ আসনবিশিষ্ট মিলনায়তনের পূর্ব দিকের বারান্দা দেড় ফুট দেবে গেছে, ভবনজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ফাটল। ভবনটির ভেতরে ইট ও বাইরের সিলিং থেকে আস্তর খসে পড়েছে। কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমদ জানান, ভূমিকম্পে পৌর ভবনসহ শতাধিক বাড়িঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। উপজেলার ফুটবল খেলার মাঠসহ বিভিন্ন স্থানের জমি ফেটে পানি ও বালি বের হয়ে এসেছে। পৌর এলাকার ছয় নম্বর ওয়ার্ডে মুহিবুর রহমানের জমি ফেটে ভূগর্ভস্থ বালু ও পানি বেরিয়ে এসেছে। কান্দিগাঁও গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের বাড়ি ও রান্নাঘরে দেখা দিয়েছে ফাটল। হেরেঙ্গা বাজারের পশ্চিমে বনগাঁও রাস্তায় ধলাই নদীরপাড়ে, পৌর এলাকার কুমড়াকাপন গ্রামের রাস্তা, রানীরবাজার এলাকার একটি রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ভানুগাছ বাজারের গাউছিয়া আরমান হার্ডওয়ার নামের একটি দোকানে রাখা লক্ষাধিক টাকার কাচ ও টাইলস ভেঙ্গে গেছে। ওই বাজারের ১৫-২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ভানুগাছ পৌরবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সানোয়ার হোসেন জানিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হক জানান, ভানুগাছ ছাড়াও উপজেলার নছরতপুর, পশ্চিম বালিগাঁও, শিমুলতলা, হীরামতি, রায়নগর, মাধবপুর, কুমড়াকাপন, চৈতন্যগঞ্জ, নারাইনপুর, চিৎলিয়া, রানীরবাজার, জালালপুর, রামপুর, কান্দিগাঁও, পতনঊষার, আদমপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক ভবন ও দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। ‘কোন কোন স্থানে ফাটল ১০ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত দীর্ঘ। ফাটল ধরা ভবনগুলোর বাসিন্দারা আতঙ্কে আছেন।’ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ করছেন বলে মাহমুদ জানিয়েছেন। শ্রীমঙ্গলে সরকারী শিশু পরিবারের ভবন, পৌরসভার নিয়ন্ত্রাণাধীন কাঁচাবাজার ভবন, লালবাগ এলাকার সুলতান আহমদের বাসা, সুব্রত চক্রবর্তীর বাড়ির সীমানা প্রাচীরে ফাটল ধরেছে। গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট এ্যান্ড গলফ ভবনের প্লাস্টার ভূমিকম্পের সময় খসে পড়েছে বলে জানিয়েছেন রিসোর্টের কর্মকর্তা পলাশ চৌধুরী। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে যারা দরিদ্র, তাদের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদুল হক। তিনি বলেছেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তারা খবর নিচ্ছেন।
×