ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

মিট দ্য প্রেসে এরশাদ

আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬

আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সদ্য সমাপ্ত জেলা পরিষদ নির্বাচন জনগণের নির্বাচন ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। নিজ দলের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এবং ‘জনগণের নির্বাচন’ না হওয়ায় জেলা পরিষদ ভোটে অংশ নেয়নি জাপা। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘সর্বশক্তি’ নিয়ে মাঠে নামার কথা বলেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের ইমান্যুয়েল কনভেনশন সেন্টারে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। দেশের চলমান রাজনৈতিক অবস্থা, আইনশৃঙ্খলা, অর্থনীতি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। সংবাদিকদের উদ্দেশে এরশাদ বলেন, ‘তোমরা আমাকে জিজ্ঞেস করতে পার- কেন আমরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি। এটা আসলে জনগণের নির্বাচন ছিল না। তাই সবদিক বিবেচনায় নিয়ে আমরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। তিনি বলেন, এটা মৌলিক গণতন্ত্রের মতো নির্বাচন ছিল। সবাই ছিল সরকারী দল। সেজন্য এই নির্বাচনে যাওয়া সমীচীন ছিল না। সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন এরশাদ। নারায়ণগঞ্জে দলের সাংগঠনিক অবস্থা শক্তিশালী না থাকার কারণে সেখানে নির্বাচনে জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেয়নি বলে জানান তিনি। যদিও দলের মধ্যে আলোচনা আছে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনা করেই নির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি বিরোধী দল। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জাপার পক্ষ থেকে সমর্থন জানানো হয়। এরশাদ বলেন, আইভী সম্পর্কে আমাদের ধারণা ছিল। সেখানে জেতার মতো সাংগঠনিক অবস্থা আমাদের ছিল না। এরপরও বিএনপির চেয়ে নিজের দলকে ‘শক্তিশালী’ বলেন প্রধানমন্ত্রীর এ বিশেষ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমরা জোর দিচ্ছি জাতীয় নির্বাচনের দিকে। জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী দল এবং জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, সর্বশক্তি নিয়েই করবে। আমরা সেভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছি। ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচন ‘নির্ধারিত সময়ে সুষ্ঠুভাবে হবে’ আশা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জানান নির্বাচনে না গেলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি জোটবদ্ধ না এককভাবে অংশ নেবে তা খোলাসা করেননি তিনি। যদিও সম্প্রতি দলের একাধিক কর্মসূচীতে স্পষ্টভাবেই এরশাদ বলেছেন, আগামীতে এককভাবে নির্বাচন করবে জাপা। একক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায় তাঁর দল। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, অনেকে আমাকে স্বৈরাচার বলেন, আমি কিভাবে স্বৈরাচার হলাম! আমি জীবনে কোন নির্বাচনে হারিনি। স্বৈরাচার হলে জনগণ আমাকে এতবার নির্বাচিত করত না। আমার শাসনামলে পাখিরমতো গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়নি। ছিল না গুম আতঙ্ক। দেশবাসী তখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেনি। জঙ্গীবাদ শব্দের অর্থই জনগণ জানত না। অথচ সন্ত্রাস, অরাজকতা আজ মাকড়সার জালের মতো বিস্তার করেছে। আর স্বৈরাচার হলাম আমি! মিট দ্য প্রেসে দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, দেশে সুস্থ ধারার রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে জাতীয় পার্টি সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা হানাহানি ও প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে দেশ ও জনগণকে মুক্ত করতে চাই, সে বিষয়ে আপনাদের গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করছি। প্রচার উপ-কমিটির সভা ॥ আগামী এক জানুয়ারির মহাসমাবেশের প্রচার উপ-কমিটির বিভিন্ন অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছেন দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। বৃহস্পতিবার বিকেলে কাকরাইলের দলীয় কার্যালয়ে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন মিলন।
×