ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোন আর্জি থাকলে বিএনপিকে রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবিধানে এই দায়িত্ব রাষ্ট্রপতিকেই দেয়া আছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকার থেকে করা হয়নি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, সার্চ কমিটি করে এই নির্বাচন কমিশন করা হয়েছে। তখন বিএনপির যা যা দাবি ছিল তা মেনেই এ কমিশন করা হয়। বর্তমানেও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে। আমাদের এ বিষয়ে কিছু করার নেই। রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তাই মেনে নেব। শেখ হাসিনা তার হাঙ্গেরি সফর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের বিষয়টি ছাড়াও হাঙ্গেরি সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাদে জরুরী অবতরণ প্রসঙ্গটিও উঠে আসে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের চার ঘণ্টা অনির্ধারিত যাত্রাবিরতি করতে হয়। উঠে আসে ভারতের সঙ্গে আন্তঃনদীর পানির সুসম বণ্টনের বিষয়টি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের একটা উল্লেখযোগ্য প্রসঙ্গ ছিল সম্প্রতি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়টিও। নির্বাচন কমিশনকে ঘিরে সব সরকারের সময়ই বিতর্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যখন যারা ক্ষমতায় থাকেন, ইসি নিয়ে তাদের মনোভাব থাকে এক রকম। আবার ক্ষমতার বাইরে থাকলে মনোভাব হয় আরেকরকম। সাংবিধানিক ভিত্তি মেনে নিলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না। প্রতিবেশী ভারতে নির্বাচন কমিশন এতটাই গ্রহণযোগ্য যে, তাদের নির্বাচন নিয়ে কোন দলের কখনও প্রশ্ন তোলার অবকাশ থাকে না। নির্বাচন কমিশন গঠনে এমন একটি স্থায়ী ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, যার প্রতি সবার আস্থা থাকা উচিত। আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশের বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে। সব দলের সমন্বয়ে একটি নতুন কমিশন গঠনের ব্যাপারে গত কিছুদিন ধরে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। জামায়াত, ফ্রিডম পার্টিকে বৈধতা দেয়াও এর পেছনে কারণ। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠনে সাবেক রাষ্ট্রপতির মতো সার্চ কমিটি গঠনের পথ অনুসরণ করবেন। একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন পরিচালনাকারী সংস্থা এবং সার্বিকভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা থাকা অন্যতম পূর্বশর্ত। প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি সাহসী উচ্চারণ ছিল নতুন এয়ারক্রাফট কেনার প্রসঙ্গটি। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির জন্য আলাদা বিমান কেনার মতো বিলাসিতা করার সময় আসেনি। আমরা দেশের জন্য নতুন উড়োজাহাজ কিনেছি। যে উড়োজাহাজে আমার দেশের সাধারণ মানুষ চলাচল করবে, সেখানে যদি আমার নিরাপদবোধ না থাকে, তাহলে আমার আলাদা উড়োজাহাজ নিয়ে কী লাভ? আমি মানুষের সঙ্গে চলি। বিমানকে আধুনিকায়নের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় এ সংস্থার উন্নয়নে তার সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তাকে বহনকারী বিমানের যান্ত্রিক গোলযোগের বিষয়টিকে শেখ হাসিনা নিছক দুর্ঘটনাই ভাবতে চান। তিনি বলেন, এটা একটা যান্ত্রিক দুর্যোগ ছিল। দুর্ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখন বেঁচে আছি, এটাই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রীর এই সংবাদ সম্মেলনে আন্তঃনদীর পানি বণ্টন এবং রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে যে দিকনির্দেশনা রয়েছে, তার বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করে সবাই।
×