ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রায়ান ফাং ও ক্রেইগ টিমবাগ

অনলাইন প্রাইভেসি রক্ষায় নয়া মার্কিন আইন

প্রকাশিত: ০৭:৪৩, ১৯ নভেম্বর ২০১৬

অনলাইন প্রাইভেসি রক্ষায় নয়া মার্কিন আইন

মার্কিন ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন সম্প্রতি অনলাইন প্রাইভেসির পক্ষে এক ঐতিহাসিক রুলিং দিয়েছে। ইন্টারনেট প্রভাইডাররা যেভাবে গ্রাহকদের ডাটা ব্যবহার ও বিক্রি করে এই রুলিংয়ে তা সীমিত করে দেয়া হয়েছে এবং জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার গ্রাহকদের রয়েছে। নতুন বিধি অনুযায়ী গ্রাহকরা ইন্টারনেট প্রভাইডারদের স্পর্শকাতর ব্যক্তিগত তথ্য যেমন এ্যাপ ও ব্রাডজিংয়ের ইতিহাস, মোবাইলের লোকেশন ডাটা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকালে সৃষ্ট অন্যান্য তথ্য শেয়ার করতে নিষেধ করতে পারেন। নয়া বিধি এমন সময় ঘোষিত হলো যখন ইন্টারনেট প্রোভাইডাররা তাদের গ্রাহকদের আচরণগত তথ্যাবলীকে সুনির্দিষ্ট বিজ্ঞাপনের কাজে বিক্রির সুযোগে পরিণত করার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। শুধুমাত্র ওয়েবে যাওয়ার মাধ্যম হিসেবে থাকতে সন্তুষ্ট না হয়ে এই কোম্পানিগুলো উত্তরোত্তর তাদের সংগৃহীত তথ্যাবলীকে রাজস্ব আয়ের সূত্র হিসেবে দেখছে। এখন কমিশনের ঘোষিত নতুন বিক্রি এটিএ্যান্ডটি, ভেরিজন ও কমকাস্টসহ ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক দিক দিয়ে অতি শক্তিশালী কিছু কোম্পানির ওপর বড় ধরনের আঘাত হয়ে দেখা দিল। এই কোম্পানিগুলো আশা করেছিল যে, গ্রাহকদের ডাটা লাভের যে বিশেষ সুযোগটি তাদের রয়েছে সেটিকে বিভিন্ন ডিভাইসে বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যবহার করে তারা লাভজনক ব্যবসা গড়ে তুলবে। প্রাইভেসির পক্ষে যরা কথা বলে আসছে নয়া বিধির মধ্য দিয়ে তাদের এক বিশাল বিজয় অর্জিত হলো যা বিরলই বলা যেতে পারে। তারা ওবামা প্রশাসন ও এর পূর্বসূরিকে এ কথা বুঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে আসছিল যে ইন্টারনেটেরে এই যুগে প্রাইভেসি আইন ও বিধি বিধানগুলোকে বড় আকারে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। এদের কেউ কেউ এমনও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে নয়া বিধি অন্যান্য উন্নত দেশে প্রচলিত আরও সুদূরপ্রসারী অনলাইন প্রাইভেসি আইনের মতো বিধিবিধান প্রবর্তনের চেষ্টায় গতিবেগ সঞ্চারিত হবে। ফেডারেল কমিশনের রুলিংয়ের আশু প্রভাব সাধারণ গ্রাহকরা হুঁশিয়ারি করে দিয়ে আসছিলেন যে গ্রাহকদের লোকেশন, ব্রাউজিং হিস্ট্রি ও অন্যান্য অনলাইন ডাটা বিক্রির সুযোগ ইন্টারনেট প্রভাইডারদের দেয়া হলে অনলাইন ট্র্যাকিং সমস্যাবহুল নতুন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। এতে করে যারা নিজেদের অরলাইন ক্রিয়াকলাপ এমনকি তাদের শারীরিক গতিবিধি গোপন রাখতে চান তাদের প্রাইভেসি রক্ষার বিকল্প পথ সামান্যই থাকবে। নয়া বিধি অনুযায়ী ইন্টারনেট প্রোভাইডারদের মার্কেটিং ফার্মের মতো তৃতীয়পক্ষের সঙ্গে স্পর্শকাতর তথ্য শেয়ার করা বা অন্য কোনভাবে ব্যবহার করার আগে গ্রাহকদের সুস্পষ্ট সম্মতি নিতে হবে। এতে করে ডায়ালগ বক্স, সর্বশেষ প্রাইভেসি নীতি সংবলিত নতুন ওয়েবসাইট এবং কোম্পানির সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়ার অন্যান্য মাধ্যম চালু হতে পারে এবং সেগুলোর মাধ্যমে যেসব গ্রাহক স্বেচ্ছায় অনলাইন ট্র্যাকিংয়ে সম্মতি দেবেন তাদের ডিসকাউন্ট দেয়া বা অন্যান্য প্রণোদনা দেয়া হতে পারে। কমিশনের সর্বশেষ বিধিতে স্বাস্থ্যগত তথ্য, আর্থিক তথ্য, সামাজিক নিরাপত্তা সদস্য এবং ই-মেইলের ও অন্যান্য ডিজিটাল বার্তার বিষয়বস্তু নিয়ে ব্যবসা করাও সীমিত করে দেয়া হয়েছে। এতে সার্ভিস প্রোভাইডাররা কোন তথ্য সংগ্রহ করছে ও কেন করছে তা গ্রাহকদের জানাতে এবং তথ্য লঙ্ঘনের বিষয়টি গ্রাহকদের জানানোর কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা তাদের অবহিত করতে বাধ্য থাকবে। অর্থাৎ এটা হলো গ্রাহকদের তথ্য। তাদের এই তথ্য কিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে সে ব্যাপারে অবশ্যই তাদের মতামত থাকতে হবে- কিছু কর্পোরেট হাইসের মতামত থাকলেই চলবে না। সূত্র ॥ ওয়াশিংটন পোস্ট
×