ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

মারাকেশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আজ শেষ হচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৯ নভেম্বর ২০১৬

মারাকেশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আজ শেষ হচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন

কাওসার রহমান, মারাকেশ, মরক্কো থেকে ॥ প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নে একধাপ অগ্রগতির মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে বিশ্ব মারাকেশ জলবায়ু সম্মেলন। এবারের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের শুরুরদিকে মার্কিন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় প্যারিস চুক্তি কার্যকরের ক্ষেত্রে এক ধরনের হতাশা সৃষ্টি করলে শেষ পর্যন্ত সবকিছুকে ছাপিয়ে ইতিবাচক ঘোষণা আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে মারাকেশ সম্মেলনে। আজ মারাকেশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই সম্মেলন শেষ হবে বলে আশা করছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। মারাকেশ ঘোষণায় প্যারিস চুক্তি কার্যকরের রূপরেখা প্রণয়ন, ক্ষয় ও ক্ষতির ক্ষেত্রে ওয়ারশ ইন্টারন্যাশনাল মেকানিজমের আওতায় দুই বছর মেয়াদী পর্যালোচনা শুরুসহ বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ৭ নবেম্বর মরক্কোর পর্যটননগরী মারাকেশে শুরু হয় বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২২)। ১২ দিনব্যাপী এই সম্মেলনের শেষদিনে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় মধ্যরাতে বিভিন্ন ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আলোচনা চলছিল। পরিবেশবাদীরা শুরুরদিকে এই সম্মেলন ব্যর্থতায় পর্যবশিত হবে উল্লেখ করে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসে। গত ১৫ নবেম্বর মারাকেশ সম্মেলনের হাইসেগমেন্ট শুরু হওয়ার পর আশার আলো জ¦লে ওঠে সম্মেলনকে ঘিরে। শুরুরদিকে মার্কিন নির্বাচন এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘিরে যে হতাশা সৃষ্টি এবং অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল, শেষ পর্যন্ত মরক্কো সরকারের হস্তক্ষেপে এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে মারাকেশ সম্মেলনে ইতিবাচক ঘোষণা আসছে। সম্মেলনকে সফল করতে মারাকেশ সরকার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং মন্ত্রিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে সম্মেলনকে সফলতার দিকে নিয়ে যান। সম্মেলনের শুরুরদিকে প্যারিস চুক্তির কার্যকর বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়ন প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে বিপত্তি দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে এই ইস্যুতে। প্যারিস চুক্তির রূপরেখা প্রণয়নের কাজ ২০১৮ সালের মধ্যেই শেষ হবে। ফলে এখন সবাই তাকিয়ে আসছে ২০১৮ সালের দিকে। এছাড়া ওয়ারশ ইন্টারন্যাশনাল মেকানিজমের আওতায় পর্যালোচনা আগামী দুই বছরের মধ্যে শেষ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে মারাকেশ সম্মেলনে। এটি পরবর্তিতে আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হবে। মারাকেশ সম্মেলনে এই দুই ইস্যু মোটা দাগে আলোচনা হচ্ছিল শুরু থেকে। সম্মেলনের প্লেনারি সেশনের আগে বিভিন্ন দেশের সর্বশেষ দরকষাকষিতে লিস্ট ডেভেলপ কান্ট্রি ফান্ডে (এলডিসি) অর্থায়নের বিষয়ে উন্নত দেশগুলো যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেটির বিষয়েও সিদ্ধান্ত এসেছে। আশা করা হচ্ছে, উন্নত দেশগুলো ২৫ মিলিয়ন ইউরো এই ফান্ডে অর্থায়ন করবে। এছাড়া ২০২০ সাল থেকে সবুজ জলবায়ু তহবিলে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি ছিল এ ব্যাপারেও একটা রোডম্যাপ তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেন, সম্মেলনটি কম প্রত্যাশা দিয়ে শুরু হয়। সম্মেলনের শুরুরদিকে সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনায় ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে শেষ পর্যন্ত ক্ষয় ও ক্ষতি (লস এ্যান্ড ড্যামেজ)সহ কয়েকটি বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে মারাকেশ ঘোষণা আসছে। বাংলাদেশ এ্যাডভান্স স্টাডিজের (বিসিএএস)নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান বলেন, মারাকেশে শেষ মুহূর্তে বেশ কটি বিষয় সুরাহা হওয়ার পথে।
×