জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় সিংহাসনে থাকা থাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদে ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন।
গত কয়েক দিন ধরে রাজা ভূমিবল গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজপ্রাসাদ থেকে তার মৃত্যুর খবর ঘোষণা করা হয়েছে। আরও জানানো হয়েছে- ৬৪ বছর বয়স্ক যুবরাজ মাহাওয়াজিরা লংকর্ন থাইল্যান্ডের পরবর্তী রাজা হবেন। খবর বিবিসির।
১৯৪৬ সাল থেকে অর্থাৎ গত সাত দশক ধরে থাই জনগণ তাকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে সম্মান করেছেন। আশঙ্কা রয়েছে, রাজার মৃত্যুতে থাইল্যান্ডে নতুন রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। যদিও থাইল্যান্ডের শাসনতান্ত্রিক রাজতন্ত্রে রাজার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা খুবই কম, তবুও দেশটির মানুষ রাজাকে তাদের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে সম্মান করেছেন। ঈশ্বরের কাছাকাছি সম্মান পেয়েছেন তিনি থাই জনগণের কাছে। গত কয়েক দিন ধরে বহু মানুষ ব্যাঙ্ককের সিরিরাজ হাসপাতালের পাশে বসে রাজার আরোগ্য চেয়ে প্রার্থনা করছিলেন। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই তাদের শোকে মাতম করতে দেখা যায়।
সরকারীভাবে এক বছর শোক পালন করা হবে। আগামী এক মাস জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। থাইল্যান্ডে রাজা এবং রাজপরিবারের সম্মান আইনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা রয়েছে। থাই অপরাধ আইনের ১১২ ধারায় বলা আছেÑ রাজা বা রানী, সেই সঙ্গে রাজ সিংহাসনের উত্তরাধিকারীকে অসম্মান করে কথা বললে বা হুমকি দিলে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হবে। ১৯০৮ সাল থেকে এ বিধান রয়েছে। ১৯৭৬ সালে এ শাস্তি কঠোরতর করা হয়।
সিংহাসনে তার সাত দশকের সময়ে থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে বহু অস্থিরতা হয়েছে। অনেক সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে, তবে রাজা অধিকাংশ সময়ই রাজনীতির উর্ধে ছিলেন। অবশ্য কখনও কখনও চরম সঙ্কটে রাজনীতিতে রাজা ভূমিবল মাথাও গলিয়েছেন। রাজা ভূমিবলের জন্ম ১৯২৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে। তার বাবা প্রিন্স মাহিদোল সে সময় হার্ভার্ডে লেখাপড়া করতেন। দু’বছর বয়সে বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি মায়ের সঙ্গে সুইজারল্যান্ড চলে যান। সেখানেই তার পড়াশোনা। ১৯৪৬ সালে তার বড়ভাই রাজা আনন্দ রাজপ্রাসাদে এক গোলাগুলিতে মারা যাওয়ার পর মাত্র ১৮ বছর বয়সে রাজা ভূমিবল সিংহাসনে বসেন। তারপর গত ৭০ বছর ধরে তিনি ছিলেন রাজসিংহাসনে।
