ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় ২১০ কোটি টাকার প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ৮ অক্টোবর ২০১৬

কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় ২১০ কোটি টাকার প্রকল্প

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৭ অক্টোবর ॥ সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের অব্যাহত ভাঙ্গন থেকে কুয়াকাটা সৈকতকে রক্ষার জন্য অবশেষে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে এ প্রকল্পটি পানি উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করবে। কুয়াকাটা সৈকত প্রতিরক্ষা প্রকল্প ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করে অনুমোদনের জন্য পাউবোর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কুয়াকাটা সৈকতের শূন্য পয়েন্ট থেকে দুই দিকে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পের কাজ এ অর্থবছরে শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য ২১০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সৈকতের যে স্তরে অস্বাভাবিক জোয়ারের ঝাপটা লাগে ওই বরাবর (শোর লাইন) প্রতিরোধক বাঁধ নির্মাণ। বীচ লেভেল থেকে দুই মিটার উঁচু এ বাঁধটি ৩০-৩৫ ফুট প্রস্থ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া এ প্রতিরোধক বাঁধের দেড় শ’ থেকে দুই শ’ ফুট সামনে জিও টিউব দিয়ে ছোট আকৃতির বাঁধ দেয়া, যাতে উত্তাল ঢেউ বাধাপ্রাপ্ত হবে। আট থেকে ১০ ফুট গভীর পর্যন্ত এ টিউবগুলো স্থাপন করা হবে। ফলে ঢেউয়ের টানে সাগরে বালুর স্তর ধুয়ে যেতে পারবে না। বাধাগ্রস্ত হয়ে বালু আবার সৈকতেই আটকা পড়বে। প্রায় দুই বছর লাগবে এ প্রকল্প সম্পন্ন করতে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, প্রকল্পটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের খবরে কুয়াকাটায় ইতোমধ্যে আসা বিনিয়োগকারীসহ ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও ফিরে পেয়েছে স্বাচ্ছন্দ্য। সৈকতের বালুর স্তর ক্ষয়ে ভয়াবহ ভাঙ্গনে পরিণত হয়। কুয়াকাটার অন্যতম সৈৗন্দর্যম-িত প্রাকৃতিক স্পট ফার্মস এ্যান্ড ফার্মসের প্রায় ২০০ একর জুড়ে নারকেল বাগানটির এক চতুর্থাংশ ছাড়া বাকি সব সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। হাজার হাজার নারকেল, শত শত তাল, কড়াই, ঝাউ গাছ সাগরে ভেসে গেছে। জাতীয় উদ্যানের অধীন ইকোপার্কটি এখন আছে নামেমাত্র। সব সাগর গিলে খেয়েছে। ইতোমধ্যে বেড়িবাঁধের বাইরে এলজিইডির রেস্ট হাউস কাম বায়োগ্যাস প্লান্ট, টিএ্যান্ডটির অফিস, শত শত অস্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কুয়াকাটা সৈকতের পুনর্বাসিত জেলে পল্লীসহ হাজারো ছোট-বড় স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। অন্তত আড়াই কিলোমিটার প্রস্থ সৈকত সাগরে গত দেড় যুগে বিলীন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে মাঝিবাড়ি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ দুই দফা ভাঙ্গনের ফলে কুয়াকাটা পৌরসভাসহ লতাচাপলী ইউনিয়নের মানুষ তাদের সম্পদ-সম্পত্তিসহ বাড়িঘর, হাজারো স্থাপনা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। তবে বেড়িবাঁধ পুনর্বাসন এবং বাঁধের সেøাপ সংরক্ষণ প্রকল্পের উদ্যোগে সিসি ব্লক স্থাপন করে ওই বাঁধ রক্ষা করা হয়। কিন্তু মূল সৈকত রক্ষায় ইতোপূর্বে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ২০০৪ সালে কুয়াকাটা সৈকতে পাথর ফেলে ঢেউয়ের ঝাপটা প্রতিরোধে প্রায় ১০ কোটি টাকার পরীক্ষামূলক প্রকল্প হাতে নেয় পাউবো। কিন্তু সেটি আলোর মুখ দেখেনি।
×