ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

দুস্থজনেরে কর সবল সংগ্রামী

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

দুস্থজনেরে কর সবল সংগ্রামী

দু’বেলা দু’মুঠোর জন্য মানুষকে কি প্রাণান্তকর পরিশ্রম করে যেতে হয়। এজন্য লড়াই, সংগ্রাম, আন্দোলন থেকে যুদ্ধ পর্যন্ত সংঘটিত হয়। অপরের মুখের গ্রাস কেড়ে নেয়ার জন্য কতজন কতস্থানে যে ওঁৎপেতে থাকে তার হদিস কেউ রাখে না। একমুঠো ভাত কখনও কখনও হয়ে ওঠে মহার্ঘ্য অতি দরিদ্রজনের কাছে। পঞ্চাশের মন্বন্তরের (১৯৪৩ সাল) সময় এই বাংলায় বহু মানুষ একটু ভাতের ফেনের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে। কলকাতাসহ সারা বাংলায় পড়ে ছিল বেওয়ারিশ লাশ। অনাহারে কঙ্কালসার এসব মানুষের দিকে ফিরে তাকাবারও ছিল না কেউ। মানবসৃষ্ট এই দুর্ভিক্ষে পঞ্চাশ লাখ লোক মারা যায়। মৃত সৎকারের প্রশ্ন উঠত না তখন। রাস্তাঘাটেই পড়ে থাকত লাশ। মৃত মানুষ ছিল তখন বেওয়ারিশ। কে হতে যাবে মড়ার উত্তরাধিকার বা ওয়ারিশ! আইনসিদ্ধ ওয়ারিশরাও ছিল মৃত্যুপথযাত্রী অথবা সবাই মৃত। দরিদ্রে বা বাড়ির লাশ দাফনের জন্য গ্রামবাসীর বা শহরে-মহল্লাবাসীর সাহায্য-সহায়তা প্রার্থনা করেও সহযোগিতা প্রায় ক্ষেত্রেই পেত না। তবে রাস্তার ওপরে লাশ ফেলে রেখে ভিক্ষা চাওয়ারও সুযোগ ছিল না। যেমনটা হতো বিশ শতকের শেষার্ধে সামরিক জান্তা শাসনামলে এই বাংলাদেশে। পঞ্চাশের মন্বন্তরের সময় এমনটা দেখা যায়নি, মৃতদেহ সামনে নিয়ে কাফনের কাপড়ের জন্য ভিক্ষা করার। যা এদেশে দেখা যেত, জিয়া-এরশাদ জান্তা শাসনামলে। এমনকি কবর থেকে কাফনের কাপড়ও চুরি করত নিরন্নজনেরা। অভাব তাদের স্বাভাবিক বোধকে বিলুপ্ত করে দিয়েছিল। খড়কুটো আঁকড়ে বেঁচে থাকার জন্য প্রাণান্তকর শ্রম দরিদ্র মানুষ শেষপর্যন্ত দিয়ে যায়। ফলাফল সপক্ষে যায় না যদিও। পঞ্চাশের মন্বন্তরকালে বহুলোক বিত্তে ফুলে ফেঁপে উঠলেও সাধারণ মানুষের পাশে কেউ দাঁড়াননি। অথচ দেশে তখন খাদ্যাভাব ছিল না। চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি গুদামজাত করা হয়েছিল। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। মন্বন্তরের সেসব দিনগুলো নিয়ে অনেক গ্রন্থ রচিত হয়েছে। আর এর নেপথ্যে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন রাজনীতির একটা কৌশলই ছিল দায়ী। শত্রুপক্ষের হাতে যাতে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছতে না পারে, সেজন্য তা লুকিয়ে রাখার চেষ্টা দেশে খাদ্যাভাবের সৃষ্টি করে। এর করাল গ্রাসে বাংলার মানুষ দরিদ্র থেকে হতদরিদ্রের সীমায় পৌঁছেছিল। কন্যা-সন্তানদের বিক্রি করে দেয়ার ঘটনারও কমতি ছিল না। মানুষের মনুষ্যত্ব ও মানবিকবোধ লুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শাসকশ্রেণী ইংরেজদের কাছে এই মৃত্যু বিভীষিকাময় হয়ে দাঁড়ায়নি। এ নিয়ে কোন হা-হুতাশও করেনি তারা। এমনই দুর্ভাগ্য এসেছিল বাংলার মানুষের জীবনে। মনীষী বলেছিলেন, ‘রুটি মানব জীবনের সবকিছু নয়। শুধু রুটি খেয়ে (এদেশে রুটির বদলে ভাত পড়তে হবে) মানুষ বাঁচে না।’ ধারণা করা যায়, এই প্রায়-প্রবাদ বাক্যটির প্রবক্তা মনীষী ব্যক্তিকে সম্ভবত জীবনে কখনও উপোস করতে হয়নি। বহু কবি সুখ কি তার ব্যাখ্যা করেছেন। অধিকাংশের মতে ঝড়ঝঞ্ঝামুক্ত নৈসর্গিক পরিবেশে মসৃণ চিকন দূর্বাঘাসের চত্বরে প্রিয়ার সান্নিধ্য বড়ই সুখের। চন্দ্রালোক থাকলে আরও ভাল হয়। কিন্তু কোন কবি কখনও উপবাস জীবনকে সুখের জীবন বলেছেন, এমনটা মনে পড়ছে না। নিয়মিত উপোস করলে মানুষ অবনতির কোন স্তরে নামতে পারে, সংবাদপত্রের পাতা খুললে তার ভূরি ভূরি উদাহরণ মেলে। অভাবের তাড়নায় জমিজমা বিক্রি স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু নিজ সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার ঘটনাও কম নয়। এটা সত্য যে, নিয়মিত ভাত-কাপড়প্রাপ্ত মানুষেরই জীবন শ্রেষ্ঠ। ভাতবঞ্চিত লোকেরা আসলেই হীনতম প্রাণী। সেভাবেই তারা মূল্যায়িত হন। পঁচাত্তর পরবর্তী দুই সামরিক জান্তা শাসনামলে সংবাদপত্রে ‘দুর্ভিক্ষ’ শব্দটি লেখা যেত না। দেশের মানুষ খেতে পায় না, ফসল বিনষ্ট; কাজকর্ম নেই, রোজগারের ব্যবস্থা দূরঅস্ত, এমন অবস্থাকে জান্তা শাসকরা প্রচারের বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু দুর্ভিক্ষ লাঘবে তাদের কোন প্রচেষ্টা ছিল না। সংবাদপত্রগুলো তাই ‘দুর্ভিক্ষ’ শব্দের পরিবর্তে ব্যবহার করতে থাকে ‘ভিক্ষার অভাব।’ দেশের উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতিটা ছিল তাই। কার্তিকের মঙ্গায় আক্রান্ত মানুষরা মূলত ছিল ভূমিহীন। তাদের জন্য ভূমির বন্দোবস্তও করেনি জান্তা শাসকরা। এমন অবস্থায় ১৯৭৯ সালে রংপুর জেলার বহুসংখ্যক মেয়ে ও নারী পেটের জ্বালায় বারবণিতার পেশা গ্রহণ করেছে। পতিতাবৃত্তির লাইসেন্স নেয়ার জন্য মহিলাদের লাইনও ছিল অনেক বড়। জিয়া সরকার তাদের লাইসেন্স প্রদানে সন্তুষ্ট ছিল এই কারণে যে, অন্তত দেহ ব্যবসা করে হলেও তারা খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে পারবে। এটা সভ্য মানব সমাজ সুলভ অবস্থায় ছিল এটা বলা যায় না। জংলি আইনে এটাই যেন বাস্তবতা। বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের মানুষের জন্য ভয়াবহ দুর্সময় ও বাস্তবতা ছিল মঙ্গা। এমনিতে উত্তর বঙ্গের গ্রামাঞ্চলে নিষ্ফলা শরত ঋতু বছরের সবচেয়ে কঠিন সময়, বিশেষ করে বৃহত্তর রংপুরে। যেখানে ১ কোটি ৫৮ লাখ অধিবাসীর প্রায় অর্ধেকের মতো এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। দরিদ্র ভূমিহীন কৃষকরা সাধারণত আশপাশের এলাকার জমিগুলোতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করে। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে, যখন জমির ফসল পরিপক্ক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে তখন তাদের করার মতো কোন কাজই থাকে না। আর কোন কাজ পেলেও মজুরি খুব কম এবং একই সময়ে খাদ্য হয়ে পড়ে অপ্রতুল। কারণ, ফসল ঘরে তোলার সময় আসতে তখনও বেশ কয়েক মাস বাকি। তাই চালের দামও বেড়ে যায়। কম মজুরি এবং উচ্চখাদ্যমূল্যÑ মূলত এ দুটি কারণে দরিদ্র পরিবারগুলোকে কোন না কোন বেলা না খেয়ে থাকতে হয় এবং তাদের খাবারের বৈচিত্র্য ও পুষ্টিমান দুই-ই কমে যায়। মঙ্গার মৌসুমে ভূমিহীন দরিদ্রদের সহায়তায় পঁচাত্তর পরবর্তী সামরিক শাসকরা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। কর্মসংস্থানেরও কোন ব্যবস্থা করেনি। মঙ্গাক্রান্ত মানুষেরা মঙ্গাকালে গ্রাম ছেড়ে শহরে ছুটে যায়। কিন্তু কর্মসংস্থান দুর্লভ থাকায় অধিকাংশই শহরে এসে রিক্সা চালানো শুরু করে। এতে দিন আনে দিন খায় অবস্থার মধ্যদিয়ে পাড়ি দিতে পারে। অথচ জান্তা শাসকরা উচ্চকণ্ঠে নিনাদ করতেন, না খেয়ে বা অনাহারে একটি মানুষকেও মরতে দেয়া হবে না। কিন্তু যখন খাদ্যাভাবে মারা যায়, তখন জান্তারা প্রচার করত যে, অপুষ্টির শিকার হয়ে কিংবা অধিক খাবার খেয়ে বা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা গেছে। খাদ্যাভাবে নয়। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে অভাব ছিল তীব্র। বঙ্গবন্ধু সেই অভাব পূরণে নানারকম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও উপর্যুপরি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশ্ববাজারে মন্দা ও ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি স্বাধীন বাংলাদেশকে গভীর সঙ্কটে ফেলেছিল। ১৯৭৩-এর ১৫ ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু এক ভাষণে বলেছিলেন ‘দুর্ভিক্ষে যাতে মানুষ না মরে তার চেষ্টা করেছি। ভিক্ষা করে হলেও বিদেশ থেকে খাদ্য এনেছি। বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল খালি ছিল। তবুও পরনের কাপড়, রোগের ওষুধ আমদানির চেষ্টা করেছি। এক কোটি উদ্বাস্তুকে দু’মাসে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে যতটা সম্ভব রিলিফ পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সবচাইতে কম সময়ে ভাঙ্গা রাস্তা, রেলব্রিজ মেরামত করা হয়েছে।’ কিন্তু তারপরও দুর্ভিক্ষ ঠেকানো যায়নি। কারণ, বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, বাংলাদেশে উপর্যুপরি খরা, বন্যা ও বাংলাদেশে স্বাধীন বাণিজ্যনীতির অজুহাত এসব সুযোগ গ্রহণ করে পুঁজিবাদী গোষ্ঠী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। খাদ্য আমদানিতে তারা বাধা প্রদান ও উন্নয়ন সাহায্যের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে চলছিল। প্রফেসর রেহমান সোবহান উল্লেখ করেছিলেন, ‘একাত্তরের ডিসেম্বর থেকে তেহাত্তরের জুন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশকে সর্বমোট ১৯ কোটি ২৩ লাখ ৩৬ হাজার ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেও মাত্র ৪ কোটি ৫৮ লাখ ডলার সাহায্য ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরের শেষ নাগাদ পৌঁছায়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিশ্রুত প্রকল্প ঋণের মধ্যে মাত্র শতকরা ১১ ভাগ ঋণ দেয়। আবার এই যুক্তরাষ্ট্র ৭৪-৭৫ অর্থবছরেই বাংলাদেশে সাহায্যের মাত্রা ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেয়। যারা চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষাবস্থা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে খাদ্য আমদানিতে বাধা দিয়ে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, তারাই নাটকীয়ভাবে খাদ্য মজুদ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। আবার চুয়াত্তরে সমাজতান্ত্রিক কিউবার কাছে পাট বিক্রির অজুহাত দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের খাদ্যের জাহাজ ফিরিয়ে নিয়েছিল। তারপরও বঙ্গবন্ধুর তত্ত্বাবধানে চুয়াত্তরের রিলিফ ক্যাম্প পরিচালনা ও দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধে আওয়ামী লীগের সাফল্য ছিল অনেকখানি। যদিও বাসন্তীকে জাল পরিয়ে ছবি তুলে তা ছেপে সরকারের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছিল। সেসব অপপ্রচার একালেও মাঝে মাঝে চালানো হয়। স্বাধীনতার পর সরকার রেশন কার্ড চালু করেছিল। যাতে চাল, ডাল, তেল, চিনি, নুন, গম পাওয়া যেত। সেসব কার্ড নিয়েও জালিয়াতির ঘটনা ঘটাতে সচেষ্ট ছিল সরকারবিরোধীরা। পঁচাত্তর পরবর্তী দুই সামরিক শাসকও দুর্ভিক্ষকে উদাহরণ টেনে বঙ্গবন্ধু সরকারবিরোধী প্রচারণা চালিয়েছে। সে সময় রেশন কার্ড চালু থাকায় বহু মানুষ বেঁচে গিয়েছিল। যদিও এই রেশনের মালামাল চুরি ও পাচারের ঘটনাও ঘটত। এদের অনেককে শাস্তিও দেয়া হয়েছিল। জান্তা শাসনামলেও অভাব ছিল তীব্র। ছিন্নমূল, অভাবী মানুষরা তখন ঢাকায় ছুটে আসত কাজ ও খাদ্যের সন্ধানে। ১৯৭৮ সালে সেই পরিস্থিতিতে লিখেছিলাম ছড়া। যার প্রথমে ছিল, ‘ভিক্ষে না পেলে উপোস করবি/অসুখ হলে কাতরাবি/ভাববি তবু, ভাবতে হবে। দেশটা ভালই চলছে।’ আর এরশাদ জামানায় দুর্ভিক্ষ শব্দটি ছিল নিষিদ্ধ। অথচ খাদ্যাভাব ও কাজের অভাব ছিল দেশজুড়ে তীব্র। অনাহারে মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু জান্তারা সেসব খবর সংবাদপত্রে ছাপা নিষিদ্ধ করেছিল। একুশ শতকে এসে মঙ্গা শব্দটি বিলীন হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার সরকার আমলে মঙ্গা শব্দটা আর কানে শোনা যায় না। দুর্ভিক্ষ কিংবা ভিক্ষার অভাবও নেই। অবশ্য ভিক্ষুকের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। তথাপি দুস্থ মানুষের সংখ্যা কমেনি। দুস্থ শিল্পী, দুস্থ সাংবাদিক, দুস্থ শিক্ষক শব্দ শোনা গেলেও দুস্থ রাজনীতিক, দুস্থ মন্ত্রী বা দুস্থ আমলা শব্দটি শোনা যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কুড়িগ্রামে যে, ‘আমরা দুস্থদের সাহায্য দিচ্ছি। কিন্তু দুস্থ মানুষ দুস্থ থাকুক সেটা আর চাই না। তা থেকে মুক্তি মিলছে এখন। আমরা চাই দুস্থ শব্দটাকে চিরতরে বিদায় করতে। দেশবাসীও তাই চায়। গত জুন মাসে প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ইফতার মাহফিলে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে ভাষণে বলেছিলাম, দুস্থ সাংবাদিক, দুস্থ শিল্পী শব্দটি বড় বেদনার মতো বাজে, কষ্ট বাড়ায়। এমন শব্দের পরিবর্তে অসচ্ছল তবু গ্রহণযোগ্য। শেখ হাসিনা দেশের ৫০ লাখ মানুষকে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল প্রদান শুরু করেছেন ১০ টাকা কেজি দরে। যা হতদরিদ্র, কৃষিজীবী মানুষের কল্পনায়ও আসে না। খেটে খাওয়া অভাবী মানুষকে আর অর্ধাহারে-অনাহারে যাতে থাকতে না হয়, সেই পদক্ষেপ যুগান্তকারী। শেখ হাসিনাও অন্নদামঙ্গলের খেয়ামাঝি ঈশ্বরী পাটনীর মতো চাচ্ছেন, প্রতিটি বাঙালী যেন থাকে দুধে-ভাতে। না খেয়ে কেউ যেন মারা না যায় কর্মহীন, অন্নহীন মানুষের উপোস কাটাবার দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে। সোনার বাংলা আবার সোনায় ভরে উঠবে এই পথ ধরেই। কিন্তু দেশের দুস্থ, হতদরিদ্র মানুষকে কর্মক্ষম করার কাজটিও জরুরী। বেকারত্ব, ফসল উৎপাদন না হওয়ার অবস্থা ও অবস্থান থেকে প্রয়োজন উত্তরণ। আর তা শেখ হাসিনার পক্ষেই করা সম্ভব। দেশের ১৬ কোটি মানুষ হোক স্বচ্ছল। দুস্থজন হয়ে ওঠুক সবল সংগ্রামী ও অগ্রগামী। সব পথ হোক সচ্ছল উন্নত জীবনের দিকে ধাবিত।
×