ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

কোল পাওয়ারের এমডি জানিয়েছেন অনিবার্য কারণে ২ মাস পেছানো হয়েছে

দরপত্র জমা নেয়ার তারিখ পিছিয়ে ২৪ অক্টোবর ॥ মাতারবাড়ি ১২শ’ মেও বিদ্যুত প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২১ আগস্ট ২০১৬

দরপত্র জমা নেয়ার তারিখ পিছিয়ে ২৪ অক্টোবর ॥ মাতারবাড়ি ১২শ’ মেও বিদ্যুত প্রকল্প

নিজস্ব সংবাদদাতা, মহেশখালী, ২০ আগস্ট ॥ কক্সবাজারে প্রস্তাবিত মাতারবাড়ির বিদ্যুতপ্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম আবার অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এ প্রকল্পের কাজ শুরু করেও কেন যেন বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক এ প্রকল্পের দরপত্র জমা দেয়ার নির্ধারিত তারিখ ছিল গত ২৪ জুলাই। কিন্তু ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা, সাত জাপানীসহ দেশী-বিদেশী মোট ২২ হত্যাকা-ের ঘটনার পর মাতারবাড়ি বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের দরপত্র জমা দেয়ার তারিখ এক মাসের জন্য পিছিয়ে ২৪ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এই তারিখেও প্রকল্পের দরপত্র জমার কার্যক্রম হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। কার্যক্রম ফের স্থগিত করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, কার্যক্রম স্থগিত নয়, এই প্রকল্পের দরপত্র জমা দেয়ার সময় আরও দুই মাসের জন্য পেছানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম জানান, মূলত গুলশান হামলার পর নিরাপত্তাজনিত কারণে জাপানের উন্নয়ন সংস্থার (জাইকা) অনেক সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সাময়িক অনুপস্থিত রয়েছে এবং অনেকের সঙ্গে করা চুক্তিপত্র বাতিল করে আবার নতুন করে চুক্তিপত্র করতে হচ্ছে। তাই, কিছুটা সময় প্রয়োজন বলে তারা আমাদের জানানোর পর আমরা তা মেনে নিয়েছি। আগামী ২৪ অক্টোবর এ প্রকল্পের দরপত্র জমা নেয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের আগস্টে মহেশখালীর মাতারবাড়ি এলাকায় এক হাজার দুইশ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণে ৩৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে সরকার। এটি অগ্রাধিকারভিত্তিক ফাস্ট ট্রাক প্রকল্পগুলোর একটি। প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানি করা হবে। আমদানিকৃত কয়লা ওঠা-নামানোর জন্য বিদ্যুতকেন্দ্রের সঙ্গেই একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের বিষয়টিও প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একনেকে অনুমদিত প্রকল্পের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা এই প্রকল্পে ২৯ হাজার কোটি টাকা দেবে। ইতোমধ্যে, মাতারবাড়ি প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। বাকি ৪ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা- কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) দেবে ২ হাজার ১১৯ কোটি টাকার যোগান। দেশে বর্তমানে উৎপাদিত প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ৭০ শতাংশই আসে গ্যাস থেকে। কয়লা থেকে আসে মাত্র ৩ শতাংশেরও কম। সরকার ’৩০ সালের মধ্যে ৩৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে যার মধ্যে অর্ধেক আসবে কয়লা থেকে। প্রকল্পের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, মাতারবাড়ি বিদ্যুতকেন্দ্রে ‘আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি’ ব্যবহার করা হবে, যাতে কেন্দ্রের কর্মদক্ষতা হবে ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ। বাংলাদেশের বর্তমানে তাপবিদ্যুত কেন্দ্রগুলোর গড় কর্মদক্ষতা ৩৪ শতাংশের বেশি নয়। বিদ্যুত ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাপানের অর্থায়নে কক্সবাজারে এক হাজার দুইশ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাবিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণে আগ্রহ দেখিয়ে প্রস্তাব জমা দিয়েছে জাপানের দুটি কোম্পানি। জাপানের সুমিতোমো কর্পোরেশন ও মারুবেনি কর্পোরেশন নামের দুটি প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব জমা দিয়েছে, যা এখনও যাচাই করা হয়নি।
×