ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাদেশ জারি

পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতা থাকছে না

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১১ আগস্ট ২০১৬

পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতা থাকছে না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতা কমিয়ে আইন সংশোধন করে তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করেছে সরকার। সংসদ অধিবেশন না থাকায় আশু ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি মঙ্গলবার ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ’ জারি করেছে। মন্ত্রিসভা গত ১ আগস্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৬’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয়। এদিকে আইনের সংশোধনী প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের প্রতিবাদ এবং তা বাতিলের দাবিতে পার্বত্য নাগরিক পরিষদসহ কয়েকটি সংগঠনের ডাকে বুধবার রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়। আইনটির সংশোধনী প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের কোরাম ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে। আগে কমিশন চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই কমিশনের সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হতো। আইন সংশোধন হওয়ায় চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সিদ্ধান্ত কমিশনের সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে। চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তে আর কোন বিষয় চূড়ান্ত হবে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের নয় সদস্যের মধ্যে চেয়ারম্যানসহ দুইজন উপস্থিত থাকলেই এতদিন কোরাম হতো। অধ্যাদেশ জারির ফলে কোরামের জন্য চেয়ারম্যানসহ অন্তত তিন সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হবে। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ে কয়েক দশকের সংঘাতের অবসান ঘটে। সেই চুক্তি অনুযায়ী পাহাড়ের ভূমির অধিকার নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে এই কমিশন গঠন করা হয়। তবে কমিশনের চেয়ারম্যানের হাতে একক সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা থাকায় ওই কমিশন কার্যকর হচ্ছিল না বলে অভিযোগ করে আসছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা), যিনি জনসংহতি সমিতির সভাপতি। ১৯৯৯ সালের ৩ জুন গঠিত ভূমি কমিশনের প্রথম চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক চৌধুরী দায়িত্ব নেয়ার আগেই মারা যান। ২০০০ সালের ৫ এপ্রিল পুনর্গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি আবদুল করিম দায়িত্ব নেয়ার কিছুদিন পর শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। ২০০১ সালের ২৯ নবেম্বর পুনর্গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মাহমুদুর রহমান ২০০৭ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত তেমন কোন কাজ করতে পারেননি। সুপ্রীমকোর্টে আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক বর্তমানে এই কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন।
×