ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

হাজার বছরের ঐতিহ্য

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ১১ আগস্ট ২০১৬

হাজার বছরের ঐতিহ্য

লোক সঙ্গীতের দেশ বাংলাদেশ। সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা গ্রামবাংলার পরতে পরতে মিশে আছে বাংলার আদি সংস্কৃতি লোক সঙ্গীত। গ্রামবাংলার মানুষের সুখ দুঃখ, আনন্দ-বেদনার সহজিয়া রূপটি ফুটে উঠে এসব লোকসঙ্গীতের মাধ্যমে। সাধারণ মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বিরহ, আচার-আচরণ প্রভৃতি যে সঙ্গীতে ঝংকৃত হয়, সেগুলো আমাদের লোকসঙ্গীত। লোক সঙ্গীত রচয়িতাগণ মনের মাধুরী মিশিয়ে মনের কথাগুলো বলে যান লোকসঙ্গীতের মাধ্যমে। বাংলা সঙ্গীতের একটি সমৃদ্ধ ও প্রাচীন সংস্কৃতি হলো বাংলার লোকসঙ্গীত। আর লোকসঙ্গীতের একটি উল্লেখযোগ্য ধারা হলো বাউল সঙ্গীত। বাউলরা একতারা বাজিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে তাদের তত্ত্বমূলক বাউল সঙ্গীত পরিবেশন করেন। বাংলার বাউল আর বাউল সঙ্গীত যেন এক সূত্রে গাঁথা। এমন এক সময় ছিল যখন বাংলার গ্রামে গ্রামে বাউলের আসর বসত। বাউলের গাতক ছিল বাংলার বাউল। পুইনা (হালখাতা), গ্রাম্যমেলা ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক উৎসব উপলক্ষে বাউল সঙ্গীত ছিল প্রধান আকর্ষণ। একেকজন বাউল একেকটি ধারা নিয়ে বাউল গান পরিবেশন করতেন। সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে একে অপরের যুক্তি খ-ন করতেন। বর্তমান যুগ পাশ্চাত্য সংস্কৃতির যুগ। এ যুগে লোকসঙ্গীতের বিভিন্ন ধারার মতো বাউল সঙ্গীতেরও সেই পুরনো জৌলুস নেই। এ যুগে কে শোনে বাউল সঙ্গীত? কে খোঁজ রাখে বাংলার বাউলদের? এরপরেও বাউল গায়েনরা প্রাচীন লোক ঐতিহ্য বাউল সঙ্গীতকে টিকিয়ে রাখছেন নিরলসভাবে। গড়ে তুলছেন বাউল সংগঠন। বাউল সঙ্গীতের সেই পুরনো জৌলুস না থাকলেও এখনও বাংলার বাউলরা আপন মনে মনের মাধুরী মিশিয়ে বাউল সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তাঁরা তাঁদের সহজিয়াভাবে ভাবের সঙ্গীত বাউল চর্চা করেন। লোকসঙ্গীতের ধারা বাউল সঙ্গীত ও এর ধারক বাংলার বাউলকে টিকিয়ে রাখতে সকলের একযোগে কাজ করতে হবে। বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য বাউল সঙ্গীত আর বাংলার বাউলকে। মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা থেকে
×