ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

‘জঙ্গীবাদের উত্থান রুখবেই কবিতার কোটি প্রাণ’

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২০ জুলাই ২০১৬

‘জঙ্গীবাদের উত্থান রুখবেই কবিতার কোটি প্রাণ’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জঙ্গীবাদের আস্ফালনে সমাজ যখন বিপর্যস্ত তখন সোচ্চার হলো কবির কবিতা। দোলায়িত ছন্দের আশ্রয়ে আবৃত্তিশিল্পীর কণ্ঠেও ছিল কবিতার প্রতিধ্বনি। বক্তার আলোচনায় জানানো হলো উগ্রপন্থার প্রতিবাদ। গানের সুরে উচ্চারিত হলো সহস্র প্রাণের প্রতিবাদ। নবীন-প্রবীণ কবির কণ্ঠে কবিতা পাঠ, বাচিকশিল্পীদের আবৃত্তি পরিবেশন, সঙ্গীত ও আলোচনায় সাজানো এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় কবিতা পরিষদ। মঙ্গলবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আয়োজনের শিরোনাম ছিল জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কবিতা। আলোচনা শেষে জঙ্গীবাদবিরোধী সুর ও বাণী নিয়ে মঞ্চে আসে গানের দল সহজিয়া। গেয়ে শোনায় কবি অসীম সাহার লেখা কুড়িতম জাতীয় কবিতা উৎসবের উৎসব সঙ্গীত। বাজনার সহযোগে উচ্চারিত হয়- জঙ্গীবাদের এই উত্থান রুখবেই কবিতার কোটি প্রাণ ...। সঙ্গীত পরিবেশনের মাঝে ছিল কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ ও বাচিকশিল্পীদের কবিতা আবৃত্তি। আয়োজনের শুরুতেই ছিল আলোচনাসভা। ব্যক্ত হয় জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়। বলা হয় সংস্কৃতির শক্তি দিয়ে জঙ্গীবাদ মোকাবেলার কথা। পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কবি আসাদ চৌধুরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী, কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত। রামেন্দু মজুমদার বলেন, জঙ্গীবাদের সঙ্কট যত না রাজনৈতিক, তার চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। মাদ্রাসা ও ইংরেজী মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা নিজস্ব সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত নয়। তারা আমাদের উদার ও অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক চেতনার কথা জানে না। তাই শুধু অস্ত্র দিয়ে এই সঙ্কট মোকাবেলা করা যাবে না। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তি দিয়ে এই সঙ্কট মোকাবেলা করতে হবে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরতে হবে দেশের সংস্কৃতিকে । শামসুজ্জামান খান বলেন, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে সকল স্তরের শিক্ষার্থীদের। বায়ান্ন ও একাত্তরের চেতনা সবার মধ্যে ছড়াতে পারলে এভাবে বিস্তৃত হতো না জঙ্গীবাদ। গোলাম কুদ্দুছ বলেন, হাজার বছরের ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ আমাদের সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি শান্তির কথা বলে। এখানে উগ্রবাদের কোন স্থান নেই। তাই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি জঙ্গীবাদ রুখতে সামাজিক প্রতিরোধ গড়তে হবে। সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ সামাদ বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই মানবতার জয়গান গেয়ে আসছে জাতীয় কবিতা পরিষদ। কখনও কবিতা আাবার কখনও গানের মধ্য দিয়ে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। বরাবরের মতো এবারও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার অবস্থান নিয়েছে কবিতা পরিষদ। আলোচনা শেষে কবিতা পাঠের দ্বিতীয় পর্বে ‘মানব জন্ম’ শিরোনামে স্বরচিত কবিতাপাঠ করেন অসীম সাহা। মুহম্মদ নূরুল হুদা পাঠ করেন স্বরচিত কবিতা ‘চলন্ত কফিন’। আবৃত্তিশিল্পী রফিকুল ইসলামের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় শামসুর রাহমানের কবিতা ‘ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাঁটা’। স্বরচিত কবিতাপাঠ করেন কবি আসাদ চৌধুরী, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, মুহাম্মদ সামাদ, অসীম সাহা, রবীন্দ্র গোপ, ফারুক মাহমুদ, কাজী রোজী, কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, হারিসুল হক, আমিনুর রহমান সুলতান, তপন বাগচী, শরীফা বুলবুল প্রমুূখ। আবৃত্তি করেন বাকশিল্পী ফয়জুল আলম পাপ্পু, রেজিনা ওয়ালী লীনা ও শাহাদত হোসেন নীপু। হুমায়ূন স্মরণে মঞ্চস্থ ‘নদ্দিউ নতিম’ ॥ মঙ্গলবার ছিল জননন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের চতুর্থ প্রয়াণবার্ষিকী। এ উপলক্ষে সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হলো তাঁরই লেখা ‘কে কথা কয়’ উপন্যাস থেকে রূপান্তরিত নাটক ‘নদ্দিউ নতিম’। আসাদুল ইসলামের নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার প্রযোজনাটি পরিবেশন করে ম্যাড থেটার। ঢাকা পদাতিকের হেফাজত নাটকের প্রদর্শনী ॥ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হলো ঢাকা পদাতিকের নতুন নাটক হেফাজত। নাটকটি রচনা করেছেন হারুনর। নির্দেশনা দিয়েছেন নাদের চৌধুরী।
×