ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

দুদকের বিশেষ অভিযানে এবার কাজ হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২০ এপ্রিল ২০১৬

দুদকের বিশেষ অভিযানে এবার কাজ হচ্ছে

মশিউর রহমান খান ॥ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগছে সারাদেশের স্বীকৃত দুর্নীতিবাজরা। সারাদেশে বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা দুর্নীতি মামলার আসামিদের ধরতে দুদকের চলমান বিশেষ অভিযান জোরদার করায় নতুন করে এ আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। প্রতিদিনই এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। গত ২৫ দিনে বিভিন্ন মামলার অন্তত ৪৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে দুদক, যা এত কম সময়ে দুদকের ইতিহাসে নজিরবিহীন বটে। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে চালানো অভিযান সফল করতে সমাজের সকল শ্রেণীর লোকের সহায়তা চাইছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আসামি গ্রেফতারের জন্য সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে চষে বেড়াচ্ছেন দুদক কর্মকর্তারা। কখনও কখনও দিনে আসামি ধরতে না পারলে রাতের বেলায় অফিসে, বাসায় কিংবা গোপনীয় স্থানে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির সেবা। দুদককে কার্যকরী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতেই এ গ্রেফতার অভিযান পরিচালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, সারাদেশের সকল কর্মকর্তাকে দুদকের করা মামলার আসামিদের ধরতে বিশেষ অভিযান পরিচালনার জন্য দুদক কর্তৃপক্ষের মৌখিক কঠোর নির্দেশের পর এসব আসামি গ্রেফতার করা হচ্ছে। গত ২৭ মার্চ থেকে দুদক গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করছে। বিশেষ করে কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ও কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম গত ১৪ মার্চ কর্মস্থলে যোগদানের পর থেকেই এক নয়া আতঙ্কে ভুগছেন এসব দুর্নীতিবাজ। এর মাধ্যমে সমাজ থেকে দুর্নীতি রোধে বা তা কমাতে দুদক যে একটি সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে তারই জানান দিচ্ছে। এর আগে দুর্নীতি করেও সারা বছর গা ছেড়ে সমাজে সর্বত্র দাপিয়ে বেড়ালেও বর্তমানে এসব দুর্নীতিবাজের অনেকেই বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা কর্মস্থল ছেড়ে অন্যত্র অফিস করতে বা বসবাস করতে দেখা যাচ্ছে। দুর্নীতিবাজদের ধরতে দুদকের চলমান অভিযান অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে অত্যন্ত কঠোর বলে কমিশন সংশ্লিষ্টদের দাবি। প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতি যে অপরাধ তা অনেকেই ভুলে যেতে বসেছিলেন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলার পর সমাজের এসব চিহ্নিত দুর্নীতিবাজের এ আতঙ্কে সমাজের অনেক সৎ লোক রয়েছেন যারা বেজায় খুশি। তাদের মতে, দুর্নীতি করার দীর্ঘ বছর পর হলেও এ দুর্নীতিবাজরা আতঙ্কে থাকায় সমাজে সৎ লোকেরা ভাল কাজ করতে উৎসাহিত হবেন। সমাজের এদের গ্রেফতারের মাধ্যমে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হলে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে আসবে। গত ১৪ মার্চ দুদক কমিশন পুনর্গঠনের পর ২৭ মার্চ থেকে ১৯ এপ্রিল সময় পর্যন্ত ২৫ দিনে সারাদেশে অভিযান চালিয়ে সরকারী চাকরিজীবী, ব্যাংক কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, ডাক্তার, ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পেশার অন্তত ৪৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। বিগত সব কমিশনের সময়ে গ্রেফতার অভিযান পরিচালিত হলেও এত অল্প সময়ে এত বেশি আসামি গ্রেফতারের ঘটনা এটাই প্রথম, যা দুর্নীতি দমনে দুদকের সরব উপস্থিতির জানান দেয়। দুদকের গ্রেফতার অভিযানে গত দুই সপ্তাহের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির মামলায় রাতভর অভিযান চালিয়ে গত ২৭ মার্চ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলেন ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ইকরামুল বারী, ব্যবসায়ী (এমারেল্ড ড্রেসের মালিক) সৈয়দ হাসিবুল গনি, এশিয়ান শিপিং বিডির মালিক মোঃ আকবর হোসনে ও ফার্সি ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়েজুন্নবী চৌধুরী। ৩০ মার্চ এলসি জালিয়াতির মাধ্যমে ২৫১ কোটি টাকা আত্মসাত মামলায় খুলনা থেকে গ্রেফতার করা হয় ব্যবসায়ী টিপু সুলতানকে। এলসি জালিয়াতির আরেক মামলায় একই দিন গ্রেফতার করা হয় সোনালী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ কর্পোরেট শাখার নূরুজ্জামানকে। ৫ এপ্রিল বেসিক ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীন চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। একই দিন অর্থ আত্মসাতের মামলায় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার হোসেন আহমদ ও ক্যাশিয়ার সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় ৬ এপ্রিল কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কুমিল্লা শাখার পরিদর্শক (আইটি) আবু ছালেহ মাহমুদকে। ৯ এপ্রিল মানিলন্ডারিং মামলায় সুনামগঞ্জের ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান সুন্দর আলী ও ছেলে শিপনকে গ্রেফতার করে দুদক। ১১ এপ্রিল চেক জালিয়াতির মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) উপপরিচালক ও একটি প্রকল্পের পরিচালক এ কে এম শফিকুর রহমান এবং রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার মামলায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ঢাকার কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবু আশরাফ সিদ্দিকীকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া দুর্নীতির বিভিন্ন মামলায় ১৩ এপ্রিল সারাদেশে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় আরও ছয়জনকে। তারা হলেন সরকারী ঠিকাদারি কাজে রডের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে শৌচাগার নির্মাণ করায় গাইবান্ধার ঠিকাদার আবদুল খালেক ও উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ বিল্লাহ ডাকুয়া, রাষ্ট্রের কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় বরিশালের সাবেক সিভিল সার্জন আফতাব উদ্দিন আহমেদ, অর্থ আত্মসাতের মামলায় সোনালী ব্যাংক এনসিটিবি শাখার নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন, কুমিল্লার দেবীদ্বার শাখার ম্যানেজার জাকির হোসেন, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী জিয়াউল হক দুলাল। এছাড়া বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত ও সরকারী চাকরিজীবী হয়েও ব্যবসায়ী পরিচয়ে বিদেশ গমনের অভিযোগে পৃথক গ্রেফতার অভিযানে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হচ্ছেন পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্য সিরাজুল ইসলাম এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা তাহমিদুল ইসলাম মিলন। গত শনিবার কুষ্টিয়া থেকে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের দায়ে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দিরাজ আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে তালাকপ্রাপ্ত নারীকে পুনর্বিবাহ দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতে সহযোগিতার অভিযোগে মোঃ মুজিবুর রহমান (৬০) নামে এক নিকাহ রেজিস্ট্রারকে (কাজী) গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর ১৮ এপ্রিল সারাদেশে বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা দুর্নীতির পৃথক মামলায় ৮ জনকে গ্রেফতার করে। ঢাকা, সিলেট, বগুড়া ও দিনাজপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সাব-রেজিস্ট্রার, সিস্টেম এ্যানালিস্ট, মাদ্রাসার সুপার, ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রয়েছেন। গ্রেফতারকৃত ৮ ব্যক্তি হলেন- শিক্ষা অধিদফতরের সিস্টেম এ্যানালিস্ট আবুল ফজল, ঢাকা সদর রেকর্ডরুমের সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার ভবতোষ ভৌমিক, হবিগঞ্জ হযরত শাহজালাল (র.) সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ হারুনুর রশিদ, সোনালী ব্যাংকের ময়মনসিংহের ভালুকা শাখার সাবেক ম্যানেজার আসাদুজ্জামান, একই শাখার কর্মকর্তা একরামুল হক খান, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা প্রকল্পের সেক্রেটারি মোঃ রফিকুল ইসলাম, বগুড়ার কাহালুর বেলঘড়িয়া হাইস্কুল ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যোৎসাহী সদস্য আল আমিন এবং দিনাজপুর দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন। এর পরদিন ১৯ এপ্রিল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ১২ জনকে গ্রেফতার করে দুদক। ঢাকা, ময়মনসিংহ, যশোর, জামালপুর এবং কুমিল্লা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন ময়মনসিংহ ফুলবাড়িয়া শাখার রূপালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম, ময়মনসিংহ রাম ভদ্রপুরের ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রোকনুজ্জামান, একই জেলার ধোবাইড়া উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, একই জেলার বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মঈদুল ইসলাম, জুনিয়র হিসাব সহকারী হোসনে আরা, কুমিল্লার বাসিন্দা মনিরুল হক, রাজউকের সুপারভাইজার ছফির উদ্দিন, যশোর হাউজিং এস্টেটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোক্তার আলী, রাজধানী আরামবাগের মেসার্স হ্যান্ডি ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার খালেদ সাইফুল, সেগুনবাগিচায় সিজিএ সমবায় ঋণদান সমিতির ক্যাশিয়ার আবদুল কাদের, অগ্রণী কমার্স এ্যান্ড ফাইন্যান্স মালটিপারপাসের সহ-সভাপতি এম এ সাত্তার, জামালপুর গ্রামীণ ব্যাংকের ছনকান্দা শাখার সাবেক সিনিয়র কেন্দ্র ব্যবস্থাপক আবদুল ওহাব। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন ব্যুরো বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে সরকার দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা করে। এরপর মূলত ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করা শুরু হয়। ঐসময় দুর্নীতির অভিযোগে দেশের শীর্ষ রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সরকারী আমলা ও প্রভাবশালীদের গ্রেফতার করা হয়। মামলার আগেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার, পরে মামলা দায়ের ও রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদসহ কঠোর অভিযান চালানো হয়, যা নিয়ে পরবর্তীতে ব্যাপক প্রশ্নের মুখে পরতে হয়েছে দুদককে। পরবর্তীতে নাগরিকদের সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া অযথা হয়রানি লাঘবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট ক্ষমতায় এলে ওই অভিযান শিথিল হয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তদন্তের স্বার্থে অপরিহার্য বিবেচনায় নির্দিষ্ট আসামিকে গ্রেফতার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে। মহাজোট সরকারের প্রথম পাঁচ বছরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি চেষ্টার মামলায় ওই সময়ের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোশাররফ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনি আদালতের জামিনে মুক্তি পান। একইভাবে হলমার্কের ঋণ জালিয়াতির মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক তানভীর ও সংশ্লিষ্ট কর্ণধারদের গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তারা কারাগারে বন্দী রয়েছেন। একই মামলায় সোনালী ব্যাংকের উর্ধতন কর্মকর্তাদেরও গ্রেফতার করা হয়। তাদের অনেকেই কারাগারে আটক রয়েছেন। এমএলএম কোম্পানির নামে প্রতারণার মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের কর্ণধারদের গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সরকারী-আধাসরকারী সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ফাঁদ পেতে ঘুষখোর গ্রেফতার অভিযানও পরিচালিত হয়। তবে ২০১৪ সালে মহাজোট দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর দুদকের গ্রেফতার অভিযানে ভাটা পড়ে। ফলে সুষ্ঠু তদন্তে স্বার্থে আবারও গ্রেফতার প্রক্রিয়া ও ফাঁদ অভিযান সচল করতে উদ্যোগী হলেও ফাঁদ অভিযান সচল করা হয়নি। দুদক সূত্র জানায়, আসামি গ্রেফতারের জন্য দুদকের ফাঁদ অভিযানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘুষ লেনদেনের ভিডিওচিত্র ধারণ করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া টেলিফোন ট্র্যাকিংয়ের (টেলিফোনে আড়ি পেতে) মাধ্যমে সন্দেহভাজনদের কথোপকথন সংগ্রহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র ব্যবহার করা হবে। এই যন্ত্রের মাধ্যমে সন্দেহভাজন কর্মকর্তারা কে কতটা মোবাইল নম্বর (সিম) ব্যবহার করছেন তাও খুঁজে বের করা হবে। পরে উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ঘুষখোরদের হাতেনাতে আটক ও আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের জন্য এরই মধ্যে অনুমোদন দিয়েছে বিটিআরসি। ওয়াকিটকি, স্পাইক্যামসহ এ ধরনের যন্ত্র ক্রয় ও ব্যবহারে দুদকের প্রস্তাবনাও অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অনুমোদন সাপেক্ষে দুদক কার্যালয়ে আর্চওয়েসহ কিছু যন্ত্রপাতিও বসানো হয়েছে। শীঘ্রই বিদেশ থেকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্রপাতি সংগ্রহ সম্পন্ন হলে ফাঁদ অভিযান জোরদার করবে দুদক। এভাবেই আরও কিছুদিন দুদক তাদের গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে এবারের গ্রেফতার অভিযান অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে আলাদা বিধায় আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে দুর্নীতিবাজদের। সঙ্গে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যও নেয়া হচ্ছে। ফলে গ্রেফতারকৃতরাও বাধ্য হয়ে দুদককে প্রকৃত তথ্য দিচ্ছেন। এতে করে দুদক কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিন আগে করা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়তা পাচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল জনকণ্ঠকে বলেন, আমলযোগ্য যে কোন অপরাধের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা যে কোন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করা বা নিজেদের হেফাজতে নিতে পারেন। প্রয়োজনে রিমান্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। বর্তমানে গ্রেফতার কার্যক্রম অভিযান পরিচালনা করা দুদকের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। দুদক চায় রাষ্ট্র থেকে দুর্নীতি দমনের জন্য নাগরিকদের সেবা প্রদান কার্যক্রম দৃশ্যমান করতে। কম সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে। এজন্য কমিশনের পক্ষ থেকে কোন প্রকার অভিযান পরিচালনার বিশেষ নির্দেশ প্রদান করা হয়নি। কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে বলা হয়েছে। কারণ নিয়মানুযায়ী কমিশন কোন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে কোন আসামিকে ধরতে বা ছেড়ে দিতে নির্দেশ বা অনুরোধ করতে পারে না। তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ওপরই আসামিকে গ্রেফতার বা জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি নির্ভর করে। তবে দুর্নীতি দমনে চলমান এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
×