ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতা পদক না পেয়ে ক্ষুব্ধ নির্মলেন্দু গুণ

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১২ মার্চ ২০১৬

স্বাধীনতা পদক না পেয়ে ক্ষুব্ধ নির্মলেন্দু গুণ

বিডিনিউজ ॥ সত্তরের উত্তাল সময়ে যার কবিতা ছড়িয়েছিল মুক্তির আকাক্সক্ষা সেই কবি নির্মলেন্দু গুণ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্বাধীনতা পদক না পাওয়ায়। বৃহস্পতিবার ‘আমাকে স্বাধীনতা পদক দিন’ শিরোনামে এক পোস্টে কবি লিখেছেন, “আমার একদা সহপাঠিনী, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার দৃষ্টে আমি প্রথম কিছুকাল অবাক হয়েছিলাম- কিন্তু আজকাল খুবই বিরক্ত বোধ করছি। অসম্মানিত বোধ করছি। ক্ষুব্ধ বোধ করছি।” ষাটের দশকের শেষ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে একই ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন শেখ হাসিনা ও নির্মলেন্দু গুণ। ফেসবুক স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে কবি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমিই ক্ষোভ থেকে ওই স্ট্যাটাস দিয়েছি।” সেখানে তিনি লিখেছেন, “আমাকে উপেক্ষা করার বা কবি হিসেবে সামান্য ভাবার সাহস যার হয়, তাকে উপেক্ষা করার শক্তি আমার ভিতরে অনেক আগে থেকেই ছিল, এখনও রয়েছে।” একুশে ও স্বাধীনতা পদকের কথা বলতে গিয়ে ইতিহাস থেকে কয়েকটি ঘটনাও তুলে ধরেছেন নির্মলেন্দু গুণ। তিনি লিখেছেন, “বাংলাদেশের ‘প্রথম সামরিক ৈ স্বৈরশাসক’ জেনারেল জিয়াউর রহমান ১৯৭৬ সালে একুশে পদক প্রবর্তন করেন। বঙ্গভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে প্রথমবারের মতো একুশে পদক প্রদান করা হয়। পরে কবি জসীম উদ্দীন ও বেগম সুফিয়া কামাল একুশে পদকে ভূষিত হন। অজানা কারণে আমি ঐ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত অতিথি ছিলাম। কিন্তু তৎকালীন কেবিনেট সচিব শফিউল আজম একুশে পদকের মানপত্রটি ইংরেজীতে পাঠ করার প্রতিবাদ জানালে আমাকে বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে বের করে দেয়া হয়। তাই পুরো অনুষ্ঠানটি আমার দেখার সুযোগ হয়নি, যদিও আমার নিমন্ত্রণ পুরো অনুষ্ঠানের জন্যই বৈধ ছিল।” “সম্ভবত পরের বছর (১৯৭৭) স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে জেনারেল জিয়া একুশে পদকের পাশাপাশি স্বাধীনতা পদক চালু করেন। জিয়ার সবই খারাপ বিবেচনায় জেনারেল জিয়ার বাকি অনেক কিছু পরিত্যাগ করলেও তার প্রবর্তিত একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক প্রদান প্রথাটি শেখ হাসিনা ত্যাগ করেননি। এই পুরস্কার দুটি চালু রাখা হয়।” ২০০০ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করেছিল জানিয়ে গুণ বলেছেন, “কিন্তু সেই পদক তিনি নিজ হস্তে আমাকে প্রদান করে যেতে পারেননি। তখন নিয়ম ছিল প্রাপকের নাম ঘোষণার পরের বছর পুরস্কার দেয়া। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন এবং ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া হাসিমুখে আমাকে একুশে পদক প্রদান করেন।”
×