ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তম শরীর চর্চা

প্রকাশিত: ০৪:২১, ৩ মার্চ ২০১৬

উত্তম শরীর চর্চা

জিতেন্দ্র কুমার সিংহ খেলাধুলা মানুষের সার্বিক কল্যাণের জন্যে অত্যন্ত উপযোগী। বিশেষভাবে ফুটবল ও ক্রিকেট মানুষের দৈহিক, মানসিক ও নৈতিকতার মতো ব্যক্তিগত ও সামাজিক বিষয়গুলোর সুগঠনে অত্যন্ত সহায়ক। তবে সার্বিক বিচারে ক্রিকেটের চেয়ে ফুটবলের কার্যকারিতাই বেশি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্যে ফুটবলের প্রতি আরও গুরুত্ব আরোপ জরুরী। শৈল্পিক দিক থেকে বিবেচনা করলে কোনটিই ফেলনার নয় তারপরও বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে তুলনামূলকভাবে ফুটবলেরই জয়-জয়কার আবশ্যক। ফুটবল এককালে বাংলাদেশের খেলার রাজা ছিল এবং এখনও আছে। গ্রামভিত্তিক দেশের মধ্যে গ্রামের মানুষের বিনোদনের প্রধান অবলম্বনকে উদাসীনভাবে নিয়ে শহর-নগর জীবনের প্রতি অধিক খেয়াল রেখে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন অমানবিকতার পর্যায়ে পড়ে। অদ্যাবধি দেশের অধিকাংশ মানুষের বসবাসস্থল গ্রামে ক্রীড়াজগতের সেই প্রাচীন ঐতিহ্য ফুটবল ব্যাপকভাবে লালিত হচ্ছে। যে কোন ক্ষেত্রেই প্রাচীন ঐতিহ্যকে পুরোপুরি বিসর্জন দিয়ে কিংবা নামেমাত্র লোকদেখানো পরিকল্পনা রেখে সংশ্লিষ্ট জগতকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব হয় না। মানুষের মনোজগতে বিনোদনের খোরাক যোগান দেয়ার জন্যে ক্রিকেটীয় জগতের সামর্থ্য থাকলেও আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে তার একটা বিরূপ প্রভাব থেকেই যায়। এ খেলা উপভোগ করতে হলে অনেক শ্রমঘণ্টা ব্যয় করতে হয়; যা খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে কোনদিনই সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফুটবল খেলায় এভাবে সময় ব্যয় করতে হয় না। অধিক সময় ব্যয় আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রত্যাশী একটা দেশকে তার লক্ষ্যে পৌঁছতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। তাই ফুটবলকে আরও জনপ্রিয় করার জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে যেভাবে ক্রিকেটকে পৌঁছে দেয়া হয়েছে; সেভাবে ফুটবলের ক্ষেত্রেও আন্তরিক চেষ্টা থাকা উচিত। এতে প্রাচীন ঐতিহ্যও সংরক্ষিত হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জগতে বাংলাদেশ যখনই কিছু কিছু সাফল্য পেতে শুরু করেছে, তখনই দেশে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠে গিয়ে গ্রাম পর্যন্ত ছড়ায়। সে ধরনের সাফল্য ফুটবলের ক্ষেত্রেও আবশ্যক। মানুষের দৈহিক গঠনে শরীরচর্চার কোন বিকল্প নেই। খেলাধুলার মতো উত্তম শরীরচর্চা আর নেই বললেই চলে। খেলাধুলা মানুষের উপকারী দু’টি চাহিদা তাৎক্ষণিকভাবে যোগান দিয়ে থাকে। একটি শারীরিক এবং অপরটি মানসিক। খেলাধুলা মানুষকে নেতৃত্ব কি তা শেখায়, নেতৃত্ব মেনে নেয়া শেখায়। আইনকে অমান্য করলে শাস্তি পেতে হয়, তা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। অধিকাংশ মানুষ যেখানে বসবাস করে সেই গ্রামে এবং অধিকাংশ ছেলেমেয়ে যে গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে লেখাপড়া করে, ঐ গ্রামের ঐ ছেলেমেয়েদের দিক বিবেচনা করে ক্রিকেটের মতো ফুটবলের প্রতিও গুরুত্ব আরোপ করা অত্যাবশ্যক। এতে গ্রাম থেকেও দৈহিক ও মানসিক সুস্থ সম্পন্ন মানুষ বেরিয়ে আসবে এবং নেতৃত্ব দেয়ার মতো সক্ষমতা অর্জন করতে সক্ষম হবে। আমাদের প্রত্যেকেরই মনে রাখা উচিত দেহের সর্ব্বোচ্চ সুখ-শান্তির জন্যে যেভাবে ব্যথাবিহীন সর্বাঙ্গ প্রয়োজন, সেভাবে সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে ক্রীড়াজগতকেও দেশের আনাচে-কানাচে প্রসারিত করা দরকার। মৌলভীবাজার থেকে
×