ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

প্রেস ব্রিফিংয়ে আইজিপি

শাস্তির পর ৪০ ভাগের বেশি পুলিশ আপীলে অব্যাহতি পায়

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬

শাস্তির পর ৪০ ভাগের বেশি পুলিশ আপীলে অব্যাহতি পায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিভাগীয় ব্যবস্থায় শাস্তিপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের ৪০ শতাংশের বেশি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ও আদালত থেকে অব্যাহতি পান বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহিদুল হক। পুলিশ সদর দফতরে রবিবার দুপুরে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৬ উদযাপন উপলক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। আইজিপি শহিদুল হক বলেন- কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে সাজাপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালসহ আদালতে আপীল করতে পারেন। বিগত ৫ বছরে মোট ৭০৯ পুলিশ সদস্য বিভাগীয় শাস্তির আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে আপীল করেছেন। এদের মধ্যে ২৯৩ জন আপীল করে দ- থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন, যা ৪০ শতাংশের অধিক। আইজিপি বলেন, ‘দুর্নীতি, খারাপ ব্যবহার, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন কারণে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অনেককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে আমরা কত কঠিন। আমরা সহজে ছাড় দেই না। অতি নগণ্যসংখ্যক পুলিশ সদস্যের অপেশাদার আচরণ ও নৈতিকস্খলন সমগ্র বাহিনীর অনেক বড় অর্জনকে কখনও কখনও ম্লান করে দেয়ার উপক্রম হয়। হঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘শৃঙ্খলার বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে থাকি। ব্যক্তি পুলিশের অপরাধের দায় বাংলাদেশ পুলিশ কখনও নেয় না। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনা করার আগে পুলিশের কর্মপরিবেশ, কর্মঘণ্টা, বৈরী আবহাওয়া, পুলিশের অনুপাত, সরঞ্জামের সীমাবদ্ধতা, নাগরিকদের আইন না মানার সংস্কৃতির বিষয়গুলোতে দৃষ্টি দেয়া উচিত। পুলিশ প্রধান বলেন, নাগরিকদের একটি অংশ আইন মানেন না। কেউ আইন ভঙ্গ বা সরকারী কাজে বাধা দিলে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসতে হবে। মারধর করা যাবে না। মারধর আইন সমর্থন করে না। এরপর অপরাধ গুরুতর না হলে আত্মীয়স্বজন ডেকে তাকে ছেড়ে দিতে হবে। শহিদুল হক বলেন, ‘জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় সারাবিশ্বেই সাধারণত বিশেষায়িত ইউনিট থাকে। বাংলাদেশে এ জাতীয় কোন ইউনিট গঠন করতে পারেনি। তবে গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। ২০১৫ সালের বা তার আগে সংঘটিত সব জঙ্গী ঘটনা উদ্ঘাটন করতে পুলিশ সক্ষম হয়েছে। ২০১৫ সালের নৈরাজ্য ও নাশকতা মোকাবেলায় পুলিশের একজন সদস্য নিহত এবং ৩৩৯ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ছাড়া নাশকতায় ৮০ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন ৮৪৩ জন। গত বছরের জানুয়ারি থেকে নবেম্বর পর্যন্ত জঙ্গী মামলা হয়েছে ৭০টি। গ্রেফতারকৃতের সংখ্যা ২৩৫ জন। অস্ত্র মামলা হয়েছে দুই হাজার ৭৯টি। এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছে ৩ হাজার ৪৭২ জন। এ ছাড়া মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৪৭ হাজার ৬৬৮টি। গ্রেফতার হয়েছে ৫৮ হাজার ৮৫৪ জন। শহিদুল হক জানান, ২৬ জানুয়ারি থেকে পুলিশ সপ্তাহ শুরু হতে যাচ্ছে। এবারের সাহসিকতা বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এবার ২০২ জন পুলিশকে পদক প্রদান করা হবে। এর মধ্যে ৬ জন মরণোত্তর পদক পাচ্ছেন।
×