ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সড়ক সচলে নামছে ১২ হাজার আনসার

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৩০ জানুয়ারি ২০১৫

সড়ক সচলে নামছে ১২ হাজার আনসার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সড়ক ও মহাসড়কে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহন নির্বিঘœ করতে আজ শুক্রবার থেকে সারাদেশে আনসার নিয়োগ করবে সরকার। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে পাঁচ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভা শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। মন্ত্রী বলেন, ঘৃণার আগুন দিয়ে চলমান সহিংসতার আগুনের জবাব দিতে চায় সরকার। এরই অংশ হিসেবে দেশের ৯৯৩টি পয়েন্টে ১২ হাজার আনসার সদস্য নিয়োগ করা হবে। শুক্রবার ২১৬ পয়েন্টে আনসার সদস্য কাজ শুরু করবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য পয়েন্টেও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে। উল্লেখ্য, এর আগে রেলপথের নিরাপত্তায় আট হাজার আনসার নিয়োগ দেয় সরকার। হরতাল-অবরোধে ‘মহাসড়ক, নৌপথ এবং রেলপথে যাত্রী ও পণ্যপরিবহন নিরাপদ ও নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয়’-এর এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও স্থানীয় সরকার সচিব মনজুর হোসেন, স্বরাষ্ট্র সচিব মোজাম্মেল হক খান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল বাহিনী ও সংস্থার সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের মিটিং হয়েছে। হাই ভোল্টেজ এই বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো আগামী দিনে মানুষকে স্বস্তি দেবে বলে আশাকরি। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা চাই ঘৃণার আগুন দিয়ে সহিংসতার আগুনের জবাব দিতে। এ জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। তিনি আরও বলেন, জনসচেতনতা তৈরিতে সাংসদ, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন, ইউপি সদস্যরা সহযোগিতা করবেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। নাশকতা মোকাবেলায় ‘রাজনৈতিক সমন্বয়ের’ ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে। গত ৫ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধ চলছে, মাঝে-মধ্যে হরতালও থাকছে। নাশকতা- সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, পেট্রোল বোমা আর যানবাহনে দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়েছে বহু মানুষ। নাশকতায় এই প্রাণহানির জন্য বিএনপিকে দায়ী করে আসছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তিনকোণা একটি ধাতব বস্তু সাংবাদিকদের দেখিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এগুলো ব্যবহার করে গাড়ি পাংচার করা হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, চলমান অবরোধে ৩২৫টি বাস-ট্রাক আগুনে পুড়েছে, ৫০০টি ভাংচুরের শিকার হয়েছে। আর বিআরটিসির পাঁচটি গাড়ি পুড়েছে ও ২৬টি ভাংচুর হয়েছে। চলমান নাশকতায় ১৫ জন পরিবহন শ্রমিক নিহত হয়েছেন বলেও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, অবরোধে মহাসড়কে যাত্রীবাহী যান চলাচলে বিঘœ ঘটায় একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, তেমনি পণ্য পরিবহনে সঙ্কট তৈরি হওয়ায় পাইকারি বাজারে সরবরাহের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিজিবিও মোতায়েন রয়েছে, যারা পাহারা দিয়ে যানবাহন চলাচলে সহায়তা করছেন। অবরোধে ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহনের মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। বৈঠকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মনজুর হোসেন, স্বরাষ্ট্র সচিব মোজাম্মেল হক খান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদসহ আনসারের মহাপরিচালক এবং বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
×