
১৬ মে একটি মালবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ফুটওভার ব্রীজের পশ্চিম পাশের সিঁড়ি ভেঙে যায়
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন অংশে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার হচ্ছেন প্রায় দুই হাজারের অধিক শিক্ষার্থী ও দুইটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শ্রমিক।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর ফুটওভার ব্রীজের উদ্বোধন হওয়ার পর গত ১৬ মে একটি মালবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ফুটওভার ব্রীজের পশ্চিম পাশের সিঁড়ি ভেঙে যায়। এর ফলে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে অবস্থিত আর আর টেক্সটাইল উচ্চ বিদ্যালয় ও আর আর টেক্সটাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে ফুটওভার ব্রীজ সংলগ্ন দুইটি শিল্প প্রতিষ্ঠান ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস ও জিপিএইচ ইস্পাত কারখানা থাকায় সেখানকার প্রায় কয়েক হাজার শ্রমিকেরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন।
অথচ মহাসড়কে নিরাপদে রাস্তা পারাপারের একমাত্র অবলম্বন ছিল ফুটওভার ব্রীজটি। ব্রীজটির সিঁড়ির অংশ সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এর ফলে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।
অভিভাবকরা জানান, ফুটওভার ব্রীজটি ভেঙে যাওয়ার ফলে আমাদের সন্তানেরা মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পারাপার হচ্ছেন। ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়ার পর আমাদের চিন্তার কোন শেষ থাকেনা। কেননা জাতীয় মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশ দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা। সুতরাং ব্রীজটি দ্রুত সংস্কারে আমরা সড়ক ও জনপথের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন কোমলতি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করত। যারা অসচেতন তারাও শিক্ষার্থীদের অনুসরণ করতেন এবং ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করতেন। কাজ শেষে নিরাপদে বাড়ী ফিরতে পারা আমাদের জন্য একটা যুদ্ধ। কেননা মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটে। এসব কারণে ফুটওভার ব্রীজের সংস্কার প্রয়োজন মনে করছি। কেননা বিপদজনক গাড়ী আমাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
আর আর টেক্সটাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষিকা ফারহানা রহমান বলেন, গত ১৬ ই মে একটি মালবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ব্রীজের পশ্চিম পাশের সিঁড়ির অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। এর ফলে আর আর টেক্সটাইল উচ্চ বিদ্যালয় এবং আর আর টেক্সটাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় থেকে দুইজন লোক দিয়েছি শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারের সুবিধার্থে। এছাড়া ফুটওভার ব্রীজের ক্ষতিপূরণ চেয়ে বারআউলিয়া হাইওয়ে থানা, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত ব্রীজ সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখনও অবধি আমরা কোন সুফল পাইনি। আমাদের চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে কেননা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অতিরিক্ত গাড়ী চলাচল করে। আবার এই সড়ক দিয়ে বন্দরের গাড়ী আসা-যাওয়া করে। এর ফলে আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আমরা চাই ফুটওভার ব্রীজের দ্রুত সংস্কার করা হোক।
বারআউলিয়া হাইওয়ের থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মমিন জানান, আমরা গাড়ীটি আটক রেখেছি। ফুটওভার ব্রীজটির বিষয়ে চাইলে মালিকপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে। এতে আমাদের কিছু করার নেই।
সীতাকুণ্ড সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী মোঃ নাজিম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে অবগত আছি। ফুটওভার ব্রীজটি সংস্কারের বিষয়ে মালিকপক্ষের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। আশা করি দ্রুত ফুটওভার ব্রীজের কাজ শুরু হবে।
সায়মা ইসলাম